পারভেজ হত্যাকাণ্ড, যা বলছে সংশ্লিষ্টরা
রাজধানীর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৩) হত্যার ঘটনায় আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর বনানী থানায় পারভেজের চাচাতো ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারি (২০), মো. মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, তুষার ও হৃদয় রাজধানীর বনানীর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা।
নিহত জাহিদুল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকায়।
বন্ধুদের ভাষ্য
জাহিদুলের বন্ধু মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ১৯ এপ্রিল ক্যাম্পাসের সামনে জাহিদুল তাঁর দুই বন্ধুকে নিয়ে খাচ্ছিলেন। তখন সেখানে আরও দুই নারী শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে ওই দুই নারী শিক্ষার্থীর মনে হয় জাহিদুল ও তাঁর বন্ধুরা তাঁদের নিয়ে হাসাহাসি করছেন। তবে জাহিদুলেরা এ বিষয় অস্বীকার করেন। পরে সেই নারী শিক্ষার্থীরা তিনজন বহিরাগত ব্যক্তিকে ডেকে আনেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের নজরে আসলে তাঁরা তা মিটিয়ে দেন। কিন্ত বহিরাগত ওই তিন যুবক আরও কয়েকজনকে নিয়ে এসে ফটকের বাইরে অবস্থান নেন। পরে জাহিদুল ফটক থেকে বেরোতে গেলে সেই যুবকেরা তাঁকে এলোপাতাড়ি ছুড়িকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
পুলিশ কী বলছে?
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হলে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ছুরিকাঘাতে জাহিদুল নিহত হন। পরে স্থানীয় লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মঈনউদ্দিন বলেন, জাহিদুল হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তাঁরা তদন্ত করছেন এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (২০ এপ্রিল) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এ সময় জাহিদুলকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী দাবি করে দ্রুত তাঁর হত্যার বিচার চাওয়া হয়। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম দাবি করেন, জাহিদুলের হত্যা পূর্বপরিকল্পিত, তাঁকে হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা জড়িত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিবাদ
ছাত্রদলের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, “প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষার ও যুগ্ম সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীকে দায়ী করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির সহ অন্যান্যরা। একজন মৃতব্যক্তির লাশের উপর দাঁড়িয়ে ছাত্রদলের এমন ঘৃণ্য মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সোবহান নিয়াজ তুষার এবং হৃদয় মিয়াজী, পারভেজ হত্যার সাথে কোনোভাবেই জড়িত নন”।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment