×

টিকটকের ক্যামেরা জোগাড়ের জন্য আলোকচিত্রী খুন; গ্রেপ্তার ১০

টিকটক বানাবার জন্য ক্যামেরা জোগাড় করতে খুন করা হয় আলোকচিত্রী নূরুল ইসলামকে। গত ১৬ মে শুক্রবার রাজধানীর হাজারীবাগের জাফরবাদ এলাকায় খুন করা হয় তাঁকে। এ ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।  

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নাঈম আহম্মেদ (২০), শাহীন অকন্দ ওরফে শাহিনুল (২০), শাহীন চৌকিদার (২২), রহিম সরকার (১৯), নয়ন আহম্মেদ (১৯), রিদয় মাদবর (১৮), আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজা (১৯), আনোয়ার হোসেন (১৯), শহিদুল ইসলাম (২০) ও মোহাম্মদ আরমান (১৮)।

২০ মে মঙ্গলবার রাজধানীর শংকর ও রায়েরবাজার এবং ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও তারাকান্দা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি, রামদা ও বড় ছোরা উদ্ধার করা হয়। 

হাজারীবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আলোকচিত্রীর কাজ করতেন নুরুল ইসলাম। গত ১৫ মে একটি অজ্ঞাত নাম্বার থেকে বিয়ের ছবি তোলার জন্য তাঁর মুঠোফোনে কল আসে। এ বাবদ তাঁকে অগ্রিম ৫০০ টাকা বিকাশও করা হয়। 

পরদিন নূরুল ইসলাম পূর্বের কথামতো তাঁর সহযোগী মো. ইমন ওরফে নুরে আলমসহ শংকর বাসস্ট্যান্ডে এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন। ওই ব্যক্তির কথামতো নূরুল ও ইমন একটি অটোরিকশায় করে জাফরাবাদ পুলপাড় ব্লুমিং চাইল্ড স্কুলের কাছে বিয়ের অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। 

আনুমানিক রাত আটটা নাগাদ অটোরিকশাটি পুলপাড়ের ঋষিপাড়া এলাকায় পৌঁছালে নাঈম, শাহীন, শাহীনুল, রহিম, নয়ন, রিদয়, রাজ্জাক, আনোয়ার, শহিদুল ও আরমান সেটির গতিরোধ করে। তখন সহযোগী ইমন রিকশা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু হামলাকারীরা নুরুলকে ধরে ফেলে। এ সময় ধারালো চাপাতি দিয়ে নুরুলের মাথা, ঘাড়, হাত ও হাতের আঙুলে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়।

নূরুল ইসলামের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নূরুলের বড় ভাই ওসমান গনি বাদী হয়ে হাজারীবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

হাজারীবাগ থানা সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা টিকটকে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও পোস্ট করত। উন্নতমানের ছবি ও ভিডিও করার জন্য ডিএসএলআর ক্যামেরা সংগ্রহের পরিকল্পনা করেন তাঁরা। ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী খেলার মাঠে নাঈম আহম্মেদের নেতৃত্বে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। 

পরিকল্পনা মোতাবেক নূরুল ইসলামের অটোরিকশা আটকে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু নূরুল ক্যামেরা দিতে না চাইলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপানো হয়। 

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

Post Comment