বগুড়ায় কোরবানির পশুর হাট: লাখ টাকার মধ্যে গরুর চাহিদা বেশি
স্ট্রিম প্রতিবেদক
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বগুড়া জেলার হাটগুলোতে কোরবানির পশুর বেচাকেনা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি খামার থেকেও গরু-ছাগল বিক্রি হচ্ছে। এসব বিক্রয়কেন্দ্রে ছোট ও মাঝারি আকার বা লাখ টাকা দামের মধ্যে গরুর চাহিদা বেশি।
জেলায় চাহিদার তুলনায় বেশি পশু থাকলেও দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এ কারণে বিভিন্ন হাট ঘুরে পছন্দের পশু কিনছেন ক্রেতারা।
জেলার মহাস্থান হাটে গরু-ছাগলের একাধিক বিক্রেতা জানান, হাটে পশুর আমদানি থাকলেও এখনো বেচাকেনা খুব বেশি নয়। ক্রেতারা দাম বলে চলে যান। এদিকে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশু পালনে খরচ বেড়েছে বলে জানান খামারিরা।
স্থানীয় সরকার বিভাগের বগুড়ার উপপরিচালক মাসুম আলী বেগ জানান, জেলার ১২ উপজেলায় অর্ধশতাধিক কোরবানির পশুর হাট বসে। এসব হাটে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। হাটের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ মে) মহাস্থান হাটে গরু নিয়ে এসেছিলেন খামারি রাহাত খান। তিনি বলেন, এবার গো-খাদ্যর দাম বেড়েছে, পশু পালন খরচ বেড়েছে, ভালো দাম পাওয়ায় আশা করছেন তিনি। আরেক খামারি শিমুল বলেন, তিনি শাহীওয়াল ক্রস গরুসহ বেশ কয়েকটি গরু হাটে এনেছেন, তবে দাম খুব বেশি বলছে না ক্রেতারা।
হাটে পশু কিনতে আসা শাফিউল আলম শাফি জানান, মাঝারি আকারের গরুর দাম এবার বেশি। এক লাখ টাকার মধ্যে থাকা দামের গরুর চাহিদা বেশি।
হাটে পশু নিয়ে আসা একাধিক খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানি উপলক্ষে ছোট-বড় খামারের পাশাপাশি ঈদের ৪ মাস আগে থেকে অনেকেই গরু মোটাতাজা করে থাকেন। প্রাকৃতিক খাদ্য দিয়েই ফ্রিজিয়ান, শাহিওয়াল, নেপালের গীর, ভুট্টি, সিন্ধিসহ দেশীয় জাতের গরু-ছাগল পালন করে ভালো দামের প্রত্যাশা করছেন খামারিরা।
এ দিকে চলতি বছর পশুখাদ্যের দাম, শ্রমিকের মজুরিসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় পশুপালন খরচও বেড়েছে কয়েক গুণ। এতে কোরবানির পশুর দাম গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে মনে করছেন খামারিরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কোরবানির জন্য জেলায় ৫১ হাজার ১৪৬ জন খামারি প্রায় সাড়ে ৭ লাখ পশু প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৭৭১টি গরু, ২ হাজার ৩০৪টি মহিষ, ৩ লাখ ৮০ হাজার ৬৩২টি ছাগল, ৪৭ হাজার ১৪০টি ভেড়া রয়েছে।
এর বিপরীতের জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ৭ লাখ ৯ হাজারটি। তবে গত বছর এই চাহিদা ছিল ৭ লাখ ৫ হাজারটি। এই হিসেবে চলতি বছরে জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে ৩৮ হাজার ৪৩২টি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনিছুর রহমান জানান, তাঁরা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে খামারিদের পাশে রয়েছেন। চলতি বছর চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশু বেশি জোগান রয়েছে। তারপরও খামারিরা লাভবান হবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment