×

সারা দেশে লাগাতার কর্মবিরতিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা

স্ট্রিম প্রতিবেদক

সাত দফা দাবিতে জরুরী বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে সারা দেশে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ইতিমধ্যে তাঁরা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছেন।

আজ (২৭ মে) থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা।

গত ২১ মে থেকে টানা পাঁচ দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন তাঁরা। এরপর ষষ্ঠ দিনের শেষ বেলায় অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জরুরি বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে আগামীকাল থেকে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মবিরতি পালন করা হবে। সমিতিতে অবস্থানরত এমআরসিএমগণ (মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার) আগামীকাল সকাল ৯টার মধ্যে একযোগে সকল রিডিং বই জমা দিয়ে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।

সাত দফা দাবি

১. পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।

২. ‘এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ’ অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন।

৩. মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পৌষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।

৪. মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।

৫. গ্রাহক সেবার স্বার্থে লাইনক্রুসহ সব হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন করতে হবে।

৬. জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা/শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

৭. পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত করতে হবে।

এবারেই প্রথম আন্দোলন নয়

গত ২১ মে বুধবার ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এরপর গত ছয় দিন ধরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেছেন এই আন্দোলনে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে তাঁদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

তবে তাঁদের এই আন্দোলন এবারেই প্রথম নয়। এর আগে গত বছরের জানুয়ারি মাসে দুই দফা দাবিতে টানা কর্মবিরতি পালন করেছিলেন পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

একপর্যায়ে গত অক্টোবরে আন্দোলনকারীদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হলে বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারপর থেকেই বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা ও নানা ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে থাকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)।

সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা চলমান মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবিতে তাঁরা ইতিপূর্বে দুই দফায় স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। ২৮ হাজার ৩০৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাক্ষর সংযুক্ত করে, গত ২১ জানুয়ারি ও ২৬ এপ্রিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টার কাছে ওই স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

বর্তমানে সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে থাকা দেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুতে প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন।

আন্দোলনের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকেদের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

Post Comment