জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে: টোকিওতে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস
যেকোনো পরিস্থিতিতেই আগামী বছরের জুনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
২৮ মে বুধবার জাপানের রাজধানী টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসোর সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। এদিন প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।
বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর দুইটা পাঁচ মিনিটে টোকিও পোঁছান প্রধান উপদেষ্টা। চারদিনের এ সফরে নিক্কেই ফোরামে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি দেশটির নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন তিনি।
তারো আসোর সঙ্গে বৈঠকে তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন অধ্যাপক ইউনূস। সেগুলো হলো, সংস্কার, ছাত্র-জনতার খুনিদের বিচার ও সাধারণ নির্বাচন।
অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধসহ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
পূর্ববর্তী সরকারের অব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস বলেন, পূর্ববর্তী সরকার আমাদের দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তরুণদের এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে। যে ভয়াবহ বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা ঠিক করার জন্য তরুণরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে সহায়তার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, জাপান গত দশ মাসে আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। আমি জাপানকে এই সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। এক অর্থে ধন্যবাদ জানানোর জন্যই এবারের সফর। এ সময় তিনি চলমান সংস্কার কার্যক্রম সরেজমিনে দেখতে তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে অংশ নেয়া জাপানি আইনপ্রণেতারা বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) হলে তা জাপানি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে।
আগামী আগস্টের মধ্যে আলোচনা শেষ করে সেপ্টেম্বরে এ চুক্তি সইয়ের আশা করা হচ্ছে। চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে জাপানই হবে বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ স্বাক্ষর করা প্রথম দেশ।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জাপানি আইনপ্রণেতাদের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তাঁদের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বিশ্বের অন্যান্য শরণার্থী সংকটের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা, কারণ তাঁরা অন্য কোনও দেশ নয় বরং তাঁদের নিজেদের বাড়ি-ঘরে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোর্শেদ।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment