×

দেশব্যাপী বৃষ্টিপাত: কোথায় কী হলো

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপে দেশের বিভিন্ন স্থানে সারা দিন ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাগরের উচ্চতাবৃদ্ধি ও অতিজোয়ারে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় একাধিক এলাকায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম। পাশাপাশি কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড়ের পাদদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া ‍বৃষ্টিপাতে অতিঝুঁকিতে পড়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি আবাসিক এলাকা। বন্ধ হয়ে গেছে এসব এলাকার সড়ক যোগাযোগ। আবার সিলেট, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে সীমান্তের ওপর থেকে নেমে আসা ‍পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। আর খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, খুলনা, সিলেট, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ থেকে পাঠানো প্রতিনিধিদের খবরের বিস্তারিত।

চট্টগ্রাম: আনোয়ারা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত গ্রাম

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় জোয়ারে সাগর ও শঙ্খ নদীর পানি বেড়ে কয়েকটি স্থানে প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ কৃষিজমি ও মাছের ঘের। শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকে জোয়ারের তীব্র স্রোতে উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের মাঝির ঘাট, নাপিত খাল, রব্বাত মিয়ার বাড়ি, মৌলি বাজার; রায়পুর ইউনিয়নের বাঘ্যের ঘাট ও ফকিরহাট এলাকার বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শত শত ঘরবাড়ি প্লাবিত হতে পারে।

শঙ্খ নদীসংলগ্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ দশমিক ৪ কিলোমিটার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করলেও ভাঙনপ্রবণ এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নেই। ফলে জিও ব্যাগ দিয়েও পানির প্রবল চাপ ঠেকানো যায়নি। এতে নতুন করে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।

পাউবো চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে শাহীদ বলেন, ‘জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের ভাঙনের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঠিকাদারকে দ্রুত সংস্কারকাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভাঙন রোধে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।’

এদিকে বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম নগরের নিচু এলাকাগুলোতেও পানি জমে গেছে। এতে নগরীর জিইসি মোড়, বহদ্দারহাট, বন্দরটিলা, ইপিজেড, বাকলিয়া, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। তৈরি হয়েছে জনদুর্ভোগ।

কক্সবাজার: জোয়ারে প্লাবিত উপকূলের ৩০ গ্রাম

কক্সবাজারে মুষলধারে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় এলাকার অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেড়ে যাওয়ায় টেকনাফের সেন্ট মার্টিন, সাবরাং, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।

এদিকে জেলার মেরিন ড্রাইভ সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সমুদ্রসৈকতের অন্তত তিন কিলোমিটার এলাকার ঝাউবন। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে মহেশখালীতে একব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় এক থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। শনিবার পর্যন্ত ভারী ও অতিভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন জানান, উপকূলীয় এলাকায় প্লাবিত গ্রামগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম চলছে।

উখিয়া: সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের

এদিকে উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাস করা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সিপিপি সদস্য রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকরা এ কাজ করছেন বলে তিনি জানান।

এ ছাড়া টেকনাফে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গিয়ে চিংড়ি ঘের, পানের বরজ, সড়ক, উপসড়ক, বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে অনেক ঘরবাড়ি। সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি রয়েছে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন।

পটুয়াখালী: কলাপাড়ায় পানিবন্দি ৬ হাজার মানুষ

পটু্য়াখালীর কলাপাড়ায় ৪৬০টি বসত ঘরসহ নানা স্থাপনা আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ। মৎস্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এখনো পর্যন্ত মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে প্রায় দেড় হাজার। দুর্যোগে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৌসুমি সবজি চাষিরা। উপকূলীয় বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা ধুলাসার ইউনিয়নের চর গঙ্গামতি, কাউয়ারচর; লালুয়া ইউনিয়নের চর চান্দুপাড়া, বেড়িবাঁধসহ আবাসন ঝুঁকিতে রয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোকছেদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চাকামইয়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর রহমান ফকির জানান, তাঁর ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারে নেওয়াপাড়া মাদ্রাসাসংলগ্ন বেড়িবাঁধ গড়িয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে আনীপাড়া, চুঙ্গাপাশা, কাছেমখালীসহ কয়েটি গ্রামের প্রায় ৬০০ পরিবার।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলায় যেসব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আমরা তার তালিকা করছি। বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা বাসিন্দাদের খোঁজখবর নিচ্ছি।’

রাঙামাটি: ঝুঁকিতে ২৯ এলাকা

তিন দিনের ভারী বৃষ্টিতে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ পরিস্থিতিতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।

সদর উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পৌর এলাকায় পাহাড়ধসের জন্য ২৯টি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা জেলার দশ উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছি। রাঙামাটিতেও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’

এদিকে কাপ্তাই হ্রদে শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের সব ধরণের নৌ-যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

খাগড়াছড়ি: প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা

বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা। জেলার প্রধান দুই নদী চেঙ্গী ও মাইনি ছাড়াও শহরের আশপাশের ছড়া-খালে পানির চাপ বাড়তে শুরু করেছে। সদর উপজেলার কলাবাগান, সবুজবাগ, কুমিল্লাটিলা ও শালবন এলাকায় পাহাড় ধসের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। অপরদিকে জেলার দীঘিনালা উপজেলায় মাইনী নদীর দুপাশে পানি বেড়ে ফেঁপে উঠেছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, শুক্রবার রাতেও যদি বৃষ্টি হয়, তবে প্লাবিত হবে মেরুং ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল।

এর আগে শুক্রবার সকালে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে সরিয়ে নিতে এবং সচেতন করতে সরেজমিনে মাইকিং করেন সদর উপজেলা ‍নির্বাহী কর্মকর্তা। এছাড়া দীঘিনালা উপজেলা ‍নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত কুমার সাহা রেড ক্রিসেন্ট সদস্যদের নিয়ে ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলোতে মাইকিং করে সর্তকতা অবলম্বন ও পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ও সচেতন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বান্দরবান: রুমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ

বান্দরবানে শুক্রবার রাত থেকে ভারীবর্ষণ শুরু হয়েছে। এতে শহরের বনরূপা, হাফেজঘোনা, মেম্বারপাড়াসহ বেশ কিছু নিচু এলাকায় সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ঝড়ো-হাওয়ায় বেশ কিছু সড়কে গাছ ভেঙে ও পাহাড়ধসে বাঁধা সৃষ্টি হয়েছে যান চলাচলে।

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, ‘জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের সরে যেতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’

এদিকে পাহাড়ধসের ঘটনায় রুমা উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শুক্রবার দুপুর থেকে ওয়াইজংশন-রুমা সড়কের একটি অংশে পাহাড়ধসে যান চলাচল বন্ধ যায়। ওয়াইজংশন থেকে দুই কিলোমিটার পর সড়কের ওপর বড় ধরনের পাহাড়ধস হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সেনাবাহিনীর ২৬ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (২৬ ইসিবি) জানিয়েছে, সড়কে ধসে পড়া মাটি সরানোর কাজ চলছে।

খুলনা: কয়রায় বাঁধে ধস

খুলনার নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অন্তত ৪ ফুট বেশি উচ্চতার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের পানির চাপে শুক্রবার উপকূলীয় কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের হরিণখোলা এলাকার পাঁচটি স্থানে ৩০০ মিটার বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তাৎক্ষণিকভাবে বালুর বস্তা ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। সুন্দরবন সংলগ্ন দাকোপ উপজেলার পশুর, শিবসা, ঢাকি, ঝপঝপিয়া, মাঙ্গা ও চুনকুঁড়ি নদীতেও জোয়ারের পানির চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এর ফলে হরিণখোলা বাঁধ ধসে পড়ায় বাঁধসংলগ্ন হরিণখোলা, ২ নম্বর কয়রা, গোবরা, ঘাটাখালী, মদিনাবাদ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ আতঙ্কে আছে বলে জানা গেছে।

সিলেট: নদ-নদীতে চেরাপুঞ্জির পানি

বুধবার (২৮ মে) বিকেল থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি ও সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি সিলেটের নদ-নদীতে এসে পড়ছে। এতে সিলেটের প্রায় সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আগামী তিন দিন এই ধারা অব্যহত থাকবে। এতে বন্যার শঙ্কা না থাকলেও ‘ফ্ল্যাশ ফ্লাড’ হয়ে পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া মুষলধারের বৃষ্টিতে সিলেট নগরের মদীনা মার্কেট, দরগাহ মহল্লা, পীর মহল্লা, হাউজিং এস্টেট, চৌকিদেখি, খাসদবীর, শিবগঞ্জ, মেন্দিবাগ, রেলগেইট, মাছিমপুর, দক্ষিণ সুরমা, ভার্থখলা, মেজরটিলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরের বাসিন্দারা।

মৌলভীবাজার: কমলগঞ্জে বাঁধের দুটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ

তিন দিনের বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আকস্মিকভাবে ধলাই নদীর পানি বেড়েছে। পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কমলগঞ্জের কয়েকটি ইউনিয়নে তীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ২-৩ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে বলে জানা গেছে। বাঁধ ভেঙে বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

কমলগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডি এম সাদিল আল সাফিন বলেন, ‌‘শুক্রবার ভোর থেকে ধলাই নদীর পানি আকস্মিকভাবে বেড়ে যায়। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ মেরামতের কাজ করা হয়েছে। বাঁধ ভাঙার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

সুনামগঞ্জ: বাড়ছে নদীর পানি

বৃষ্টি ও সীমান্তের ওপারে উজান থেকে আসা ঢলে নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, রক্তি, বৌলাইসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। পাউবো জানিয়েছে, আগামী ৯৬ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ-সিলেট অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। অন্যদিকে বন্যা পূর্ভাবাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যে জানা গেছে, সুনামগঞ্জসহ ৬ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছি। ১২ উপজেলার ইউএনওকে আশ্রয় কেন্দ্রের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

Post Comment