কাশ্মীর নিয়ে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। এক রাতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, পরদিন গোলাবর্ষণ, ড্রোন, পাল্টা হামলা- দুই দেশের সীমান্তজুড়ে চলছে সংঘাত। এখন পর্যন্ত দু’পাশেই নিহত হয়েছেন সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশু। বৃহস্পতিবার সারাদিনে দুই দেশের আরও ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। 

ভারত যা বলছে

পাকিস্তানের গুলিতে বুধবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন নিহত হওয়ার দাবি করেছে ভারত। নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী ও পাঁচজন শিশু। আগে এই সংখ্যা ছিল ১৫।

৮ মে, বৃহস্পতিবার ভারতের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিনা উসকানিতে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গোলাবর্ষণের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুল্লা, উরি, পুঞ্চ, মেন্ধার ও রাজৌরি এলাকায় মর্টার ও ভারী কামানের গোলাবর্ষণ চালাচ্ছে দেশটি। এই হামলা থামাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীও পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে।

আরও বলা হয়, বুধ ও বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলার চেষ্টা চালায়। কিন্তু সেগুলোকে সফলভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দাবি করেন ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে শতাধিক জঙ্গি নিহত হয়েছেন। বৈঠকে আরও জানানো হয়, ভারত পরবর্তীতে কোন হামলা চালাতে চায় না। তবে পাকিস্তান হামলা চালালে তার জবাব দেওয়া হবে।

পাকিস্তানের ভাষ্য 

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশটির একাধিক স্থানে অন্তত ১২টি ভারতীয় ড্রোন নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এতে একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও চারজন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৩১ জন নিহত এবং ৫৭ জন আহতের খবর জানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, ভারতীয় ড্রোন নিষ্ক্রিয় করতে অভিযান এখনো অব্যাহত আছে।

দেশটির সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ভারত এই সংঘর্ষে ইজরায়েলি ড্রোন ব্যবহার করছে। বুধবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে পাঠানো ২৫টি ইসরায়েলি হরপ ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।

এদিকে বুধবার রাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, শহীদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেওয়া হবে। ভারতকে বিমান হামলার পরিণতি ভোগ করতে হবে।

রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে হামলা

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের গণমাধ্যম জানায় দেশটির রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের কাছে একটি ভারতীয় ড্রোন বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় দুইজন আহত হন। 

বর্তমানে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) খেলতে দেশটিতে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। তাঁরা সুস্থ আছেন বলে সামাজিক মাধ্যমে জানান।

বলা দরকার, কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে ৬ মে, মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পরে পাকিস্তানও ভারতে পাল্টা হামলা চালায়।