×

সরকারের বাস্তবতা ও নিজের ‘কৈফিয়ত’ জানালেন মাহফুজ আলম

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারকে ঘিরে মানুষের অনেক আশা ছিল। কিন্তু গত ৮ মাসে অনেক আশাই পূরণ হয়নি। নানা আলোচনা-সমালোচনা এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান হাসিনার আমলে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সেই সূত্র ধরেই মূলধারার রাজনৈতিক দলের আচরণ, সরকারের সীমাবদ্ধতা, বিচারব্যবস্থার ত্রুটি, ছাত্রদের অবস্থান নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। কৈফিয়ত ও বাস্তবতা শিরোনামের এই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ক্ষমতার ভরকেন্দ্র অনেকগুলো। ফলে কাজের দায় সরকারের, কিন্তু কাজ করে ক্ষমতার অন্যান্য ভরকেন্দ্র।জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব না, সম্ভব নয় নূতন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।’

তিনি আরও লেখেন, ‘প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ছাত্র মাত্র দু’জন। ছাত্র প্রতিনিধিদেরকেও এস্টাবলিশমেন্ট রাষ্ট্রপতি অপসারণের ঘটনার পর থেকে কোনঠাসা করে রেখেছে। আমরা দু’জন সর্বোচ্চ ব্যালেন্সিং এক্ট করতে পারছি, কিন্তু প্রভাবক হিসাবে কাজ করতে হলে সরকারে সুষম ছাত্র প্রতিনিধিত্ব লাগবে।’

এ ছাড়াও তিনি উল্লেখ করেছেন, রাজনৈতিকভাবে ডান-বামের সাংস্কৃতিক বিভাজন জুলাইকে দূর্বল করেছে।

পুলিশ, বিচার-বিভাগ, প্রশাসনে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘স্টেইক’ গ্রহণের সমালোচনা করেছেন তিনি। ক্রেডিট, দলবাজি, কোরামবাজিতে ছাত্রদের আক্রান্ত হওয়া, কয়েকজনের অস্বচ্ছতায় সমগ্র ছাত্র-জনতার ‘ডিমোরালাইজড’ হওয়া, বিভক্তির ছাত্রদের প্লাটফর্ম না গোছাতে পারার সমালোচনাও করেছেন তিনি।

মাহফুজ আলম উল্লেখ করেন, শহিদ ও আহতদের ন্যায্য স্বীকৃতি ও বিচারের ক্ষেত্রে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। আন্দোলন শহরের গণ্ডি পেরিয়ে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। এর জন্য একদিকে রাজনৈতিক দল ও এস্টাবলিশমেন্টের স্বার্থবাদী চিন্তা, অন্যদিকে ছাত্রদের অভিজ্ঞতার অভাব ও দূরদর্শিতার ঘাটতি দায়ী।

সব মিলিয়ে, ছাত্রদের বাইরে রেখে (যদিও তাদের ব্যর্থতা অস্বীকার করা যায় না) এস্টাবলিশমেন্ট ফের দ্বিদলীয় সমঝোতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ছাত্রদেরকে আন্দোলনের মূল ধারা থেকে দূরে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

সমাধান হিসেবে তিনি দেখান, রাষ্ট্র ও ক্ষমতার কেন্দ্রে ছাত্রদের ন্যায্য অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আঘাত হানা। এর জন্য প্রয়োজন, ছাত্রদের মধ্যে সততা, আদর্শ, নিষ্ঠা ও ঐক্য ফিরিয়ে আনা এবং পুরোনো শাসনব্যবস্থার সেবকদের অকার্যকর করে তোলা।

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

Post Comment