×

রমনা বোমা হামলা: দুইজনের যাবজ্জীবন, ৯ জনের ১০ বছর কারাদণ্ড

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়। ওই মামলায় উচ্চ আদালত আজ (১৩ মে) রায় ঘোষণা করেছেন। হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়েছে এবং বাকি নয়জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাভোগ করতে হবে তাঁদের।

উচ্চ আদালতের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

২০০১ সালের পয়লা বৈশাখ সকালে ঢাকার রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ছায়ানটের আয়োজন চলাকালে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই ৯ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যান। এ হামলায় অন্তত ৫০ জন আহত হন। ঘটনার পরদিন ১৫ এপ্রিল নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন-একটি হত্যা এবং অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর ১৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেয় সিআইডি। মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকা মহানগর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে হরকাতুল জিহাদ (হুজি)-এর নেতা মাওলানা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে মুফতি হান্নান পরে অন্য মামলায় (সিলেটের শাইখুল হাদীস হত্যা) মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে ২০১৭ সালে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হন।

রায় পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট বেঞ্চ এদিন জানায়, মামলার আলামত, সাক্ষ্য ও উপস্থাপিত তথ্য বিশ্লেষণ করে মূল পরিকল্পনাকারী ও হামলাকারীদের মধ্যে দুজন- মাওলানা তাজ উদ্দিন ও জুয়েল-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাদেরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

অন্যদিকে, অভিযোগের স্তর ও জড়িত থাকার প্রমাণ অনুযায়ী বাকি ৯ জনের সাজা হ্রাস করে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও নাগরিকের স্বাধীন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে হামলা কোনোভাবেই বরদাশতযোগ্য নয়, তবে আইন অনুযায়ী প্রমাণের ভিত্তিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

Post Comment