দিনাজপুরের হাকিমপুর সীমান্তে ‘ভারতীয়’ ড্রোন
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ঘাসুড়িয়া সীমান্ত এলাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে খেতে বোরো ধান কাটছিলেন প্রফুল্ল টপ্প। এ সময় খেতের মাঝখানে কালো রঙের মাকড়সার মতো একটি বস্তু পড়ে থাকতে দেখেন। সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারেন বস্তুটি একটি ড্রোন ক্যামেরা। সবার সঙ্গে পরামর্শ করে ড্রোনটি নিজের বাড়িতে রাখেন তিনি। বুধবার (১৪ মে) এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে ঘাসুড়িয়া গ্রামের লোকজনেরা স্থানীয় মংলা বিজিবি ক্যাম্পে ও হাকিমপুর থানায় খবর দেন। পরে ওই দিন রাত ১০টা দিকে ড্রোন ক্যামেরাটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। ড্রোন ক্যামেরা উদ্ধারের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কৌতুহল দেখা দিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ড্রোনটি ঘাসুড়িয়া সীমান্তের ওপারে ভারত থেকে উড়ে এসেছে। বোরো ধানের খেত থেকে উদ্ধার হওয়া ড্রোন ক্যামেরাটি পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কী বলছেন প্রত্যক্ষদর্শী
বোরো ধান খেতে ড্রোন ক্যামেরা প্রথম দেখেন হাকিমপুর উপজেলার ঘাসুড়িয়া আদিবাসীপাড়ার প্রফুল্ল টপ্প। তিনি জানান, বুধবার (১৪ মে) দুপুরের দিকে ঘাসুড়িয়া সীমান্তবর্তী একটি বোরো ধানের খেতে অন্যান্য শ্রমিকের সঙ্গে তিনিও ধান কাটছিলেন। এ সময় খেতের মাঝখানে মাকড়সার মতো কালো রঙের একটি বস্তু পড়ে থাকতে দেখে সহকর্মীদের জানান। পরে তাঁরা কাছে এসে বলেন, এটি ড্রোন ক্যামেরা। সহকর্মীরা ড্রোন ক্যামেরাটি তাঁর (প্রফুল্ল) বাড়িতে রাখার কথা বলেন। ধান কাটার কাজ শেষ করে তিনি ড্রোনটি বাড়িতে নিয়ে যান।
উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. মোবারক হোসেন। তিনি জানান, বুধবার দুপুরের দিকে সীমান্তের ২৮৭/২১ নম্বর সাব-সীমানা পিলারসংলগ্ন ঘাসুড়িয়া গ্রামের মিরাজুল ইসলামের জমিতে এক দল শ্রমিক বোরো ধান কাটছিলেন। এ সময় ড্রোনটি পান তারা। ঘটনাটি জানাজানি হলে ঘাসুড়িয়া গ্রামের লোকজনেরা স্থানীয় মংলা বিজিবি ক্যাম্পে ও হাকিমপুর থানায় খবর দেন। পরে রাত ১০টার দিকে পুলিশ এসে ড্রোন ক্যামেরাটি প্রফুল্ল টপ্পের কাছ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
নজরদারির সন্দেহ
ঘাসুড়িয়া সীমান্তবাসী কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী—বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশ সীমান্তে কঠোর নজরদারি করার জন্য এই ড্রোন ব্যবহার করতে পারে। তারই ধারাবাহিকতায় ঘাসুড়িয়া সীমান্তে ভারতীয় ড্রোন ক্যামেরাটি উড়ে এসে পড়েছে। এ নিয়ে লোকজনদের কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন সাংবাদিকদের জানান, উদ্ধার হওয়া ড্রোন ক্যামেরাটি ভারত থেকে উড়ে আসা বলে তিনি প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন। এতে ৫টি ক্যামেরার লেন্স রয়েছে। ড্রোনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, এবং আরও তথ্য উদঘাটনে অনুসন্ধান চলছে।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুধবার (১৪ মে) দুপুরে ঘাসুড়িয়া সীমান্তের ৪০০ গজ বাংলাদেশ অভ্যন্তরে বোরোখেতে শ্রমিকেরা ড্রোনটি পান। পরে ওই দিন রাত ১০টার দিকে পুলিশ ড্রোন ক্যামেরাটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে ড্রোন ক্যামেরাটি থানা হেফাজতে রয়েছে। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment