×

শাবিপ্রবির শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম প্রমাণিত, চাকরিচ্যুতির দাবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএমই) বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। যোগ্যতা কম থাকার পরও একজন শিক্ষককে এই বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ১৭ মে শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর সামনে  অভিযুক্ত শিক্ষক মো. তাজবিউল ইসলামের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তাঁরা।  

চলতি বছরের ১৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৫তম সিন্ডিকেট সভায় তাজবিউল ইসলামের নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগ বাতিলের পরিবর্তে অভিযুক্ত শিক্ষককে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়।   

গত ১৪ মে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মো. আব্দুল কাদির স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাজবিউলকে কর্মস্থলে ‘অননুমোদিত’ অনুপস্থিতির ব্যাখ্যাসহ যোগদানের অনুরোধ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। 

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘মেধার অবমাননা, মানি না মানব না’, ‘শিক্ষক নিয়োগে দূর্নীতি, চলবে না চলবে না’, ‘ঘুষ নাকি মেধা? মেধা মেধা’, ‘গোলটেবিল না রাজপথ? রাজপথ রাজপথ’, চব্বিশের বাংলায় বৈষ্যম্যের ঠায় নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিভাগটির শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক, জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ।  

যা বলছেন শিক্ষার্থীরা 

শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের ৬ জুন যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় তাজবিউল ইসলামকে। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে নিয়োগের অনিয়ম তদন্তের দাবিতে স্বারকলিপি দেন তাঁরা। তদন্তে অনিয়মের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই শিক্ষককে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসনের এমন সিদ্বান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা।     

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, মো. তাজবিউল ইসলামের নিয়োগের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করতে হবে এবং পুনরায় যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় তাঁরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করবেন।  

পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএমই) বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়। এতে আবেদনকারীর যোগ্যতা চাওয়া হয় স্নাতক (সম্মান/ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং স্নাতকোত্তরে কমপক্ষে ৩.৫০ সিজিপিএ। 

যেভাবে নিয়ম লঙ্ঘন 

পাঁচজন এ পদের জন্য আবেদন করলেও ভাইভা দেন চারজন। তাঁদের মধ্যে তাজবিউল ইসলাম একজন। তিনি স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইইএসটি), শিবপুর থেকে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট সিজিপিএ ১০ পয়েন্টের মধ্যে তিনি স্নাতকে অর্জন করেন ৭.৩৫।    

এদিকে শাবিপ্রবিসহ দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট সিজিপিএ ধরা হয় চার পয়েন্টে। এই হিসাবে তাজবিউলের স্নাতকের সিজিপিএ রূপান্তর করলে তা ৩.৫০-এর চেয়ে কম হয়। এটি বিজ্ঞপ্তিতে চাওয়া যোগ্যতার চেয়ে কম। এই নিয়ম লঙ্ঘন করেই নিয়োগ দেওয়া হয় তাজবিউল ইসলামকে।

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

Post Comment