রোডম্যাপ না দিলে সরকারকে আর সহায়তা নয়: বিএনপি
২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপির সহযোগিতা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শীর্ষ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘যথাশীঘ্র সম্ভব জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তাই আমরা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার কার্যক্রম সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই জন-আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘এর অন্যথা হলে জনগণের দল হিসেবে বিএনপি’র পক্ষে এই সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব ও পরামর্শ উপেক্ষিত হলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক এবং সেক্ষেত্রে অনিবার্যভাবেই বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে কি না, তা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবে।’
বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণের দাবি
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি দাবি করে, কিছু উপদেষ্টা সরাসরি বা ঘনিষ্ঠভাবে নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, যা সরকারকে নিরপেক্ষতা হারানোর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দলটি মনে করে, তাঁদের উপস্থিতি, সরকারের নির্দলীয়-নিরপেক্ষ পরিচিতিকে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাঁদের অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন।
বিএনপি বড় আকারের উপদেষ্টা পরিষদের বদলে শুধু রুটিন ওয়ার্ক পরিচালনায় একটি ক্ষুদ্র আকারের পরিষদ গঠনের পক্ষে।
নির্বাচন কমিশন ঘেরাও ইস্যুতে সমালোচনা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো নিয়েও সরকারকে তাগাদা দিয়েছে বিএনপি। তারা বলছে, আদালতের রায় অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে, তাই আর দেরি না করে শপথ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিতে হবে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা আশা করব, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এবং উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে অতি শিগগিরই সরকার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণ করানোর ব্যবস্থা নেবে।’
একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। এমন বাস্তবতায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করার বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক ও রহস্যজনক।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment