যে কারণে বদলি হলো শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিন
স্ট্রিম ডেস্ক
নরসিংদী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করা হয়েছে। ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ হানার অভিযোগে রোববার (২৫ মে) নরসিংদীতে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচির পরদিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাঁর বদলির আদেশ জারি করে।
ঘটনার সূত্রপাত নাদিরা ইয়াসমিনের কিছু মন্তব্যকে কেন্দ্র করে, যা হেফাজতে ইসলাম ‘ইসলামবিদ্বেষী’ হিসেবে অভিহিত করে। এর প্রতিবাদে রোববার নরসিংদীতে বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে সংগঠনটি। বিক্ষোভে বক্তারা তাঁকে অপসারণ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
পরদিন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এক আদেশে জানায়, নাদিরা ইয়াসমিনকে নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করা হয়েছে। বদলির কারণ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো না হলেও, পূর্বের ঘটনাপ্রবাহ থেকে ধারণা করা হচ্ছে এটি সাম্প্রতিক বিতর্কের প্রতিক্রিয়া।
বদলির খবরটি নাদিরা ইয়াসমিন নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, ‘আমাকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করা হয়েছে। আমার সাথে করা এই আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাখলাম।’
অন্যদিকে, বদলির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ সমাজের বিশিস্তজনেরা।
নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে শারমিন লিখেছেন, ‘মবের দৌরাত্ম্যে আত্মসমর্পণ করে নাদিরা ইয়াসমিনের বদলির সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এই সিদ্ধান্ত দ্রুত বদল করা হোক।’
এই ঘটনা ঘিরে সামাজিক ও শিক্ষাজগতে মতবিভাজন দেখা গেছে। কেউ কেউ একে ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সম্মানজনক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও একাডেমিক নিরাপত্তা নিয়ে।
বদলির সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি আপাতভাবে শান্ত হলেও, আলোচনার সূত্র এখনো শেষ হয়নি। ঘটনাটি প্রশাসন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজে মতপ্রকাশের পরিসর নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে এনেছে।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment