কমলগঞ্জে শিক্ষিকাকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ৫, আটক ৩
স্টিম প্রতিবেদক
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জমির মালিকানাসংক্রান্ত বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় রোজিনা বেগম (৪০) নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের পাঁচজন আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার (২৬ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ভাষানীগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হতাহতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ।
হত্যার শিকার রোজিনা বেগম ওই এলাকার মৃত নিজাম মিয়ার মেয়ে ও স্থানীয় সংবাদকর্মী নুরুল মোহাইমেন মিল্টনের দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি স্থানীয় নবদূত পাঠশালা কেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ধলাইরপার এলাকার মৃত চেরাগ মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া, ভাষানীগাঁও গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দীনের ছেলে হারুন মিয়া ও তাঁর স্ত্রী নুরুন নাহার লুবনা। অপর পক্ষের দুজন হলেন একই এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে রেজাউল আহমেদ সাগর ও শ্যালক মামা আজবর মিয়া।
নিহত রোজিনা বেগমের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ভাষানীগাঁও গ্রামে একটি কৃষিজমির মালিকানা নিয়ে আব্দুর রহিম ও জালাল আহমেদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। বিষয়টি আদালতে গড়ালে ওই জমির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এদিকে বিবাদপূর্ণ জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও সোমবার সকালে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে জমির মাটি কাটাচ্ছিলেন আব্দুর রহিম। খবর পেয়ে তাঁকে মাটি কাটায় বাধা দেন জালাল আহমেদ। এ সময় আব্দুর রহিমের ছেলে সাগর, তাঁর শ্যালক আজবর মিয়া, মনির মিয়াসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালান। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। হামলায় জালাল আহমেদের পায়ের রগ (রক্ত নালী) কেটে যায়। এ সময় বড় ভাইকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে গেলে রোজিনা বেগমকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে সাগরসহ অন্যরা।
পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমের কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক রোজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আহত অন্যদের অবস্থা বিবেচনায় পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঘটনার পর এলাকা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছে আব্দুর রহিমের পক্ষের লোকজন। ফলে অভিযোগে বিষয়ে তাদের কোনো মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোতাহের আলী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘রোজিনা বেগম স্থানীয় একটি কেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব ছিলেন।’
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করবে বলে জানিয়েছে।’
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment