লাউয়াছড়ায় গাছের সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কা; অল্পেই রক্ষা পেল কালনী এক্সপ্রেস
স্ট্রিম প্রতিবেদক
মৌলভীবাজারে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়ার রেলপথে হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেসের। এতে অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে ট্রেনটির যাত্রীরা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাতে গাছটি হেলে পড়া গাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাউয়াছড়া বনে পৌঁছালে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ধাক্কায় ট্রেনের লোকোমেটিভ ইঞ্জিনের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে বন বিভাগ ও রেলওয়ের কর্মীরা পড়ে থাকা গাছ ও ডালপালা কেটে সরালে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ১ হাজার ২৫০ হেক্টর বনভূমিকে ১৯৯৬ সালে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। এর ভেতর দিয়েই গেছে সিলেট-ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের ৮ কিলোমিটার অংশ। আঁকাবাঁকা ও গভীর জঙ্গলের ভেতর দিয়ে এই রেলপথে প্রতিদিন ৬টি আন্তঃনগর ট্রেনসহ মোট ১২টি ট্রেন চলাচল করছে। পাশাপাশি কয়েকটি মালবাহী ট্রেনও যাতায়াত করে এ রেলপথে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বুধবার (২৮ মে) রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতে লাউয়াছড়া বনের ভেতর রেললাইনের ওপর একটি বড় গাছ হেলে পড়ে। এ সময় বনের ভেতর দিয়ে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি অতিক্রম করলে রেললাইনে হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তবে এতে যাত্রীদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে লোকোমেটিভ ইঞ্জিনের সামনের অংশ বাঁকা হয়ে গেছে। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। রেললাইন থেকে গাছ সরানোর পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ট্রেনটি বাঁকা অংশ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। ’
বনবিভাগ ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, লাউয়াছড়া উদ্যানের ভেতর ৮ কিলোমিটার রেললাইনের দুপাশে ২০০ ফুট ভূমি রয়েছে। কিন্তু এর দৃশ্যমান মাত্র ৫ থেকে ১৫ ফুট ভূমি। এতে ট্রেন চলাচলের সময় সংরক্ষিত পুরোনো গাছপালায় ছোটবড় মিলিয়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগে ২০১৬ সালে লাউয়াছড়ার ২৫ হাজার গাছ কাটার উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। পরে বহু বিপন্ন প্রাণীর অভয়ারণ্য বিবেচনায় পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির আন্দোলনের মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
গাছ পড়ার বিষয়ে বন বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে রেললাইনে পড়া গাছ ও ডালপালা কেটে সরাতে কাজ করি। লাউয়াছড়ায় অনেক গাছ পুরোনো রয়েছে। বৃষ্টি হলে মাটি সরে গিয়ে সেগুলো পড়ে যায়।’
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment