নাটোরের উত্তরা গণভবনের শোভা বাড়িয়েছে পাখিফুল
নাটোরের উত্তরা গণভবন। প্রবেশ পথ ধরে হ্রদ পেরিয়ে গেলেই শতবর্ষী দু’টো পাখি ফুলের গাছ। প্রায় সাত মিটার করে উচ্চতায় অনেকখানি এলাকা জুড়ে ছাতার মত ছড়িয়ে আছে চির সবুজ এ গাছ। ঘন পাতার আচ্ছাদনে গাছের নীচে সূর্যের আলো আর তাপ পৌঁছানোর উপায় নেই। কান্ড আর ডালপালা অশোকের মত। কলার মোচার মত হরিণ রঙের কচি পল্লব অনেক আকর্ষণীয়। পথ পরিক্রমায় পল্লবের এক একটি মোচা রকমারী রঙ ছড়িয়ে শত শত পাতায় পরিণত হয়। আর ফুল? রক্ত রাঙা এক একটা ফুলের মধ্যে প্রায় শতটি ছোট ছোট ফুলের সমাহার। ফুলে গন্ধ নেই। তবে আছে পরাগ রেণু আর অনেক মধু।
গাছ দুইটির এক একটি ফুলে অসংখ্য মৌমাছির সমাবেশ। দু’টো গাছ জুড়ে হাজারো ফুলে মৌমাছির দল সারাদিন ব্যস্ত মধু আহরণে। ছায়া, ফুল আর মৌমাছি এ এলাকাকে স্বর্গীয় করে তুলেছে। তাই হয়তো পারিজাতকে বলা হয় স্বর্গীয় ফুল!
যদিও পাখিফুলকে অনেকে পারিজাত বলে মনে করছেন। তবে এগুলো আসলে পাখিফুল। প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ক লেখক ও গবেষক মোকারম হোসেন লিখেছেন,ইদানীং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাখিফুলকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। পাখিফুলের পরিচয় বলা হচ্ছে পারিজাত।আসলে পারিজাত হচ্ছে মাদার, মন্দার বা মান্দার। যার সঙ্গে পাখিফুলের কোনো সম্পর্ক নেই।
মান্দার বা পাইন্যা মান্দার আমাদের নিজস্ব বৃক্ষ। দেশের নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মে। এ অঞ্চলের নিজস্ব উদ্ভিদ প্রজাতি হিসেবে এই বৃক্ষের সঙ্গেই আমাদের ভাব-ভাবনা ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের সংযোগ রয়েছে। অপর দিকে পাখিফুলের সঙ্গে আমাদের এমন আত্মিক কোনো সম্পর্ক নেই।কারণ, গাছটি এই অঞ্চলে এসেছে এক শ বছরের কিছু বেশি সময় আগে। অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মার ফুলগুলি যেন কথা, নিসর্গী বিপ্রদাশ বড়ুয়ার গাছপালা তরুলতা ও নগরে নিসর্গ গ্রন্থে এই ফুলটিকে পাখিফুল নামে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঈদ আর ঈদ পরবর্তী দিনগুলোতে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার দর্শনার্থী গণভবন পরিদর্শনে এসে মুগ্ধ হচ্ছেন পাখিফুলের সৌন্দর্যে। নাটোরের জেলা প্রশাসক ও উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আসমা শাহীন বলেন, তাপদাহ উপেক্ষা করে হাজারো দর্শনার্থী প্রতিদিন ঈদের ছুটিতে গণভবন পরিদর্শনে আসছেন।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment