×

পুশ ব্যাকের কথা স্বীকার করে যা বললেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী

স্ট্রিম ডেস্ক

ভারত থেকে দলে দলে বাংলাদেশে মানুষ ‘পুশব্যাক’ করা নিয়ে মুখ খুলেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। ‘পুশব্যাক’ করার বিষয়টি স্বীকার করে হিমন্ত বলেছেন, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের ‘ঘোষিত বিদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। তবে ‘মানুষ পাঠানোর’ এই প্রক্রিয়া কোনো আনুষ্ঠানিক মাধ্যমে হচ্ছে না। কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে দলে দলে মানুষ ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশ সীমান্তে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে কোনো জোরপূর্বক মানুষকে ঢুকতে বাধ্য করাকেই বলা হচ্ছে ‘পুশ ব্যাক’। শনিবার (৩১ মে) এই খবর জানা গেছে ভারতের পত্রিকা দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত জানান, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে আসাম সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যারা অবৈধ বসবাসকারী, তাঁদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। আদালতের এমন নির্দেশের পরেই রাজ্য সরকার এই কার্যক্রম শুরু করেছে।
গত ২৩ মে থেকে আসামে বহু ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে ওই রায়ের ওপর ভিত্তি করে । আটক ব্যক্তিদের পরিবার অভিযোগ করেছেন, আটক ব্যক্তিদের পরে কোথায় নেওয়া হয়েছে বা কী করা হয়েছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা জানানো হচ্ছে না। সংবাদমাধ্যমে আসা কিছু ছবি ও ভিডিও দেখে অনেকে দাবি করেছেন, তাঁদের নিখোঁজ স্বজনরা এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা

হিমন্ত বিশ্ব বলেন, যাঁরা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করেননি, তাঁদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যাঁদের মামলা আদালতে চলছে, তাঁদের ধরা হচ্ছে না।
তবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী দাবিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে ভারতের পত্রিকা দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আসামের মোরিগাঁও জেলার বাসিন্দা খাইরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির কথা। যাঁর আপিল এখনো সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তবু তাঁকে আটক করে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে খায়রুলের পরিবার।
এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আদালতে যদি কারো মামলা চলমান থাকে, তবে তাঁকে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পুলিশকে দেখাতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে, আসামের ডিটেনশন সেন্টারে থাকা ৬৩ জন বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাই তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো যেতে পারে। যদিও বাংলাদেশে তাঁদের ঠিকানা কোথায় তা জানে না ভারতের প্রশাসন।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যজুড়ে বিদেশি শনাক্তকরণ অভিযান জোরদার করা হয়েছে এবং আরও ‘পুশ ব্যাক’ চালানো হবে। এই কাজে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও যুক্ত থাকবে।

আসাম সরকার যেভাবে কাউকে যাচাই না করেই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক নিয়মের লঙ্ঘন। এই পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ বা সমন্বয় করা হচ্ছে না, যা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য বিপদজনক হতে পারে।

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

Post Comment