আবদুল হামিদের বিদেশগমন : বিচার-সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন হাসনাত
বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশ ত্যাগ নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ আমলের দুইবারের এই রাষ্ট্রপতির নির্বিঘ্নে বিদেশ যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলও সরব। অনেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করছেন।
মো. আবদুল হামিদ চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন। বুধবার রাতের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ছাড়েন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ এবং শ্যালক ডা. নওশাদ খান।
সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তাঁর বিদেশযাত্রায় আইনগত বাধা দেখা দেয়নি। চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে, আজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের বিচার ও সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।
আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে টালবাহানা, পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র ও গোপনে দলটির নেতাদের দেশ ত্যাগে সাহায্য করার অভিযোগ তুলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে হাসনাত অভিযোগ করে লিখেছেন, ‘খুনিদের দেশ ত্যাগের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ যদি কোনো আসামিকে ধরে আনে, তবে আদালত জামিন দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে।’
জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতায় বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এনসিপির এই নেতা।
ফেসবুকে তিনি এও লিখেছেন, ‘দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মে মাস পেরিয়েও তা শুরু হয়নি, যা বিচার প্রক্রিয়াকে নিয়ে সরকারের সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট করে। আর আপনারা বলছেন আওয়ামী লীগের বিচার করবেন?’
আজ দুপুর দেড়টায় ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দেন হাসনাত। এতে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে লেখেন, ‘যার এজেন্ডায় গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার নাই, যার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নাই, তার সাথে আমরা নাই।’
ওই পোস্টে হাসনাত লিখেছেন, ‘শুধু এই মাসেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইকমিশন বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি ও সামরিক পর্যায়ে অন্তত ২৩টা মিটিং (সভা) করেছে।’
তাঁর মতে, এই মিটিংগুলোর উদ্দেশ্য একটাই— আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের একটি সুযোগ করে দেওয়া।
হাসনাত উল্লেখ করেছেন, ‘লিখে রাখেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচারের নামে কালেক্ষপণ করা হচ্ছে। একটা পর্যায়ে গিয়ে বলা হবে, এক সময়ের জনসমর্থিত রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমাদের কাজ নয়।’
এর আগে, শুক্রবার (২ মে) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করাসহ বেশ কটি দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে এনসিপি। কর্মসূচি চলাকালে দলটির নেতারা হুঁশিয়ারি দেন— আওয়ামী লীগের বিচার ও সংস্কারের আগে এই দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment