এক বেলার খাবারও পাচ্ছে না ফিলিস্তিনের শিশুরা
ইসরায়েলের অবরোধ ও অব্যাহত বিমান হামলায় বিপর্যস্ত গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি শিশুরা একবেলার খাবারও পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সেখানে কর্মরত ১২টি প্রধান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের ১৮ মাসের সামরিক অভিযান ও গত মাসে আরোপ করা পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজার মানবিক সহায়তা ব্যবস্থা ‘সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার উপক্রম’ হয়েছে।
এদিকে গত দুদিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৯২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতির তথ্যমতে, ৪৩টি আন্তর্জাতিক ও ফিলিস্তিনি সহায়তা গোষ্ঠীর প্রায় ৯৫ শতাংশ এরই মধ্যে গাজায় তাদের পরিষেবা স্থগিত বা বন্ধ করে দিয়েছে। ব্যাপকভাবে ও নির্বিচার বোমা হামলার ফলে (গাজায়) চলাফেরা করা খুব বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।
অক্সফামের নীতিনির্ধারণী প্রধান বুশরা খালিল বলেন, “শিশুরা দিনে একবেলারও কম খাবার পাচ্ছে। তাদের জন্য এখন খাবার জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। কেবল টিনজাত খাবার খেয়ে বেঁচে আছে তারা… অপুষ্টি এবং ক্ষুধার্ত অঞ্চলের সংখ্যা বাড়ছেই।”
অন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ডক্টর্স উইদআউট বর্ডারস-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সহায়তা কর্মীরা চোখের সামনে মানুষকে—যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু—কষ্ট পেয়ে মারা যেতে দেখছেন, অথচ তাদের হাতে পর্যাপ্ত সামগ্রী নেই। প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী ফুরিয়ে আসায় সহায়তা কার্যক্রম চালানো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দেইর আল-বালাহ এর আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে আল জাজিরাকে ফিলিস্তিনিরা জানান, তারা অপুষ্টিজনিত কারণে তাদের সন্তানদের হারাচ্ছেন।
নিজের সন্তান হারানো ফাদি আহমেদ বলেন, “হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ছেলের ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছিল, যার ফলে তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যায়।”
তিনি বলেন, “দুর্বলতা ও চরম অপুষ্টি তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়… হাসপাতালে এক সপ্তাহ থাকার পর মারা যায় সে।”
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment