সাংবাদিকদের নৈতিকতা বিষয়ে আইন হওয়া প্রয়োজন: তথ্য উপদেষ্টা
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইনের পাশাপাশি সাংবাদিকতার দায়িত্ব ও নৈতিকতা-বিষয়ক আইনও হওয়া প্রয়োজন। কোনো সাংবাদিক দায়িত্বশীল ও পেশাদার না হলে তিনি আইনি সুরক্ষা পেতে পারেন না। খবর বাসসের।
২৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার ‘ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরে গণমাধ্যমের বাস্তবতা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, পাঁচ আগস্টের পরে পুলিশ প্রথম অ্যাকশনে গেছে প্রথম আলো পত্রিকার অফিস রক্ষা করতে। পুলিশ হামলাকারীদের প্রতিহত করতে লাঠি চার্জ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সংবাদপত্রে ব্যাপক কোনো পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে অনেক সাংবাদিককে চাকরি হারাতে হয়েছিল। অনেক পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তখন সাংবাদিকদের একটি গোষ্ঠী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তথা শেখ পরিবারকে রক্ষা করতে কাজ করেছে। দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদের মধ্যে থাকার ফলে বহু সাংবাদিকের মাঝে এক ধরনের সেলফ-সেন্সরশিপ কাজ করছে।
সাংবাদিকদের বেতন, সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি ও তাঁদের জন্য ওয়েজবোর্ড গঠনের বিষয়ে কাজ করবেন বলেও তিনি জানান।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, এখন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে ফোনে চাপ দেওয়া হচ্ছে না। এটি ইতিবাচক দিক। তিনি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
এ মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন।
প্রবন্ধে তিনি বিগত সরকারের আমলে গণমাধ্যমের অপেশাদার আচরণের চিত্র তুলে ধরেন। শিকারি সাংবাদিকতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় শিকারি সাংবাদিকতার মাধ্যমে মানুষকে অপরাধী বানিয়ে শাস্তি দেওয়া হতো। এক ধরনের ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করাই ছিল শিকারি সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় শিকারি সাংবাদিকতা নিয়ে যে বইটি প্রকাশ করতে যাচ্ছে, সেটি একটি শ্বেতপত্রের মতো কাজ করবে। বইটির মাধ্যমে আত্মসমালোচনার একটি জায়গা তৈরি হবে।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বিগত সরকারের আমলে সাংবাদিকদের ওপর হওয়া নিপীড়নের কথা তুলে ধরেন। তাঁরা গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
আলোচনা সভায় সিনিয়র সাংবাদিক ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, প্রথম আলোর প্রধান বার্তা সম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহসি, সমকাল সহকারী সম্পাদক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাষ্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, সিনিয়র সাংবাদিক ইফতেখার মাহমুদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment