‘তারেক রহমানও এই মাঠে এসে নেতৃত্ব দেবেন’
শতাব্দীকা ঊর্মি ও মো. ইসতিয়াক
‘সেদিন আর বেশি দূরে নয়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানও এই মাঠে এসে নেতৃত্ব দেবেন’। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘জুবাইদা রহমান দেশে ফিরেছেন। ১৭ বছর সরকার তাঁকে দেশে আসতে দেয়নি। তাঁদের মেয়ে জায়মা রহমান কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে একটা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।’
খালেদা জিয়ার এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে এসব কথা বলছিলেন।
‘আজ শুধু নেত্রীকে নয়, আমাদের গণতন্ত্রের আশাকেই বরণ করছি’
আজকের সকালটা যেন আর দশটা সকালের চেয়ে ভিন্ন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশানের ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত পুরো পথ রঙিন হয়ে উঠেছিল জাতীয় পতাকা আর বিএনপির পতাকা দিয়ে। কারো হাতে ফুলের তোড়া, কারো হাতে খালেদা জিয়ার ছবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড–সবার চোখেমুখ থেকে যেন ঝরে পড়ছে উচ্ছ্বাস-আবেগের মিশেল।
চার মাসের চিকিৎসা শেষে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার কিছু পরে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সঙ্গে ফিরলেন দুই পুত্রবধূ, চিকিৎসক, লন্ডন বিএনপির নেতারা।বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে তাদেরকে স্বাগত জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
সকাল ১১টা ২০ মিনিটে তার গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে রওনা হয় গুলশানের বাসভবন ফিরোজায়। পথের দুপাশে হাজারো নেতা-কর্মী, কেউ পরেছেন খালেদা জিয়ার মুখচ্ছবিযুক্ত টি-শার্ট, কেউ উঁচিয়ে ধরেছেন পোস্টার আর প্ল্যাকার্ড। শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর ছিল চারপাশ-‘গণতন্ত্রের মুক্তির শুরু’, ‘খালেদা-তারেক, এগিয়ে চলো’।
স্লোগানমুখর নেতাকর্মীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে বরণ করে নেন তাঁকে। দিনের শুরুতেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে বিমানবন্দরে জড়ো হতে থাকেন তাঁরা।
জনতার প্রতিক্রিয়া ছিল চোখে পড়ার মতো।বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রবীণ নেতা বললেন, ‘মা ফিরেছেন, মনে হয় বাংলাদেশও আবার প্রাণ ফিরে পাবে।’ এক তরুণী হাতে খালেদা জিয়ার ছবি ধরে বলছিলেন, ‘উনার সাহসই আমাদের সাহস। আজকের দিনটা ইতিহাস হয়ে থাকবে।’ আরেকজন আবেগাপ্লুত হয়ে বললেন,‘আজ আমরা শুধু নেত্রীকে নয়, আমাদের গণতন্ত্রের আশাকেই বরণ করছি।’
বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দলের নির্দেশনা অনুযায়ী সড়কে নয়, ফুটপাথে থেকে শৃঙ্খলার সঙ্গে নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তায় ছিলেন সতর্ক।
সবকিছু ছাপিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা পর খালেদা জিয়া পৌঁছান তার চিরচেনা গুলশানের বাসভবন ফিরোজায়। নেতাকর্মীরা বলছেন, রাজনীতির আপসহীন এই নেত্রীর ফেরা জনগণের মনে এক নতুন আশার আলো জ্বালিয়ে দিল। খালেদা জিয়ার এই নতুন ফেরার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফিরে আসবে গণন্ত্রের এক নতুন জোয়ার।
খালেদা জিয়া চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডন গিয়েছিলেন। আজ দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় প্রবেশ করেন তিনি। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাঁকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment