রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প: আন্দোলন ঘিরে হচ্ছেটা কী
স্ট্রিম প্রতিবেদক
কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য ও বঞ্চনার অভিযোগ তুলে চলতি মাসের ৬ তারিখ থেকে প্রতিবাদী নানা কর্মসূচি পালন করেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলীসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাদের দাবি পূরণ না হওয়ার পেছনে প্রকল্প পরিচালক ড. জাহেদুল হাসানকে দায়ী করে অপসারণ দাবিতে এই আন্দোলন শুরু হয়।
এদিকে স্পর্শকাতর পরমাণু স্থাপনায় নিরপত্তা বিধি ভেঙে আন্দোলন কর্মসূচিকে প্রকল্প বন্ধের চক্রান্ত উল্লেখ করছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কর্তৃপক্ষ। এতে বিক্ষোভকারী ১৮ কর্মকর্তাকে অব্যহতি, ৮ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও তাঁদের সবার প্রকল্প এলাকায় প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয় কর্তৃপক্ষ।
ফলে আন্দোলন, পাল্টা কর্মসূচি ও কর্মীদের বরখাস্তের একের পর এক ঘটনায় টালমাটাল দেশের প্রথম পরমাণুনির্ভর রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেতনবৃদ্ধি, গ্রেড উন্নয়ন ও পূর্ণাঙ্গ সার্ভিস রুল প্রকাশের দাবি করে আসছে রূপপুর প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসব দাবি পূরণ না হওয়ায় চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তারা।
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (এনপিসিবিএল) নামের এই কেন্দ্রে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কর্মী কর্মরত। কোম্পানির কর্মীদের একটি অংশ মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে ঈশ্বরদীতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। তবে দাবি না মানায় পরের দিন ৭ মে থেকে প্রকল্প এলাকার ভেতরে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করা হয়। তবে প্রশাসনিক বাধায় কিছুক্ষণ পর তা বন্ধ হয়ে যায়।
এরপরই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় এনপিসিবিএল কর্তৃপক্ষ। চাকরিবিধি না মানায় প্রকল্পের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৮-১০ মে তারিখের মধ্যে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। সেই সঙ্গে নিরাপত্তার স্বার্থে চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের রূপপুর প্রকল্প ও গ্রিনসিটি বহুতল আবাসিক এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। পরে একই অভিযোগে ১৩ মে আরও ৮ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রকল্প এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরখাস্ত একজন প্রকৌশলী জানান, তাঁরা (কর্মকর্তা-কর্মচারী) সবাই দক্ষতার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানে ন্যায্য দাবি নিয়ে কথা বলায় তাঁদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তাঁরা।
তবে প্রকল্প সংশিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পারমাণবিক স্থাপনা হিসেবে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। এর নিরপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক নজরদারি ও নীতিমালা রয়েছে। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে বিক্ষোভ করে তাঁরা (কর্মকর্তা-কর্মচারী) কোড অব কন্ডাক্ট ভেঙেছেন। দাবি পূরণে তাঁদের প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ করা ঠিক হয়নি।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment