ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ, তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
স্ট্রিম প্রতিবেদক
নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসি কার্যালয়ের সামনে জোরালো বিক্ষোভ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বুধবার (২১ মে) সকাল থেকেই দলটির ঢাকা মহানগর শাখার নেতা-কর্মীরা সড়কে অবস্থান নেন এবং স্লোগান দিতে থাকেন।
বেলা দেড়টার দিকে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রম করে নির্বাচন কমিশনের মূল ফটকে অবস্থান নেন। তাঁরা স্লোগান দেন, ‘ইসি তুই দলকানা, ইসি তুই চলে যা’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, স্থানীয় সরকার’, ‘খুনি হাসিনার কমিশন মানি না মানব না’ এবং ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’।
বিক্ষোভ থেকে এনসিপির নেতারা জানান, বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে তাঁরা পক্ষপাতদুষ্ট ও অকার্যকর মনে করছেন।
দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘সারা দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হওয়ায় নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসনিক দপ্তরগুলো একটি বিশেষ দলের দখলে চলে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অচলাবস্থা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এ অবস্থার জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। তারা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করে রহস্যজনকভাবে গেজেট প্রকাশ করেছে।’
এনসিপির অন্যান্য নেতারাও ইসিকে ‘রাজনৈতিক কমিশন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এই কমিশনকে আর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলা যায় না। স্থানীয় সরকার নির্বাচন ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হবে বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।
এদিকে, বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী আইন, অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টাদের পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আসিফ নজরুল, সালেহউদ্দিন আহমেদ ও ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বিএনপির মুখপাত্রের মতো কাজ করছেন। তাঁরা দেশের অর্থনীতি ও আইনব্যবস্থা ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আর মুজিবীয় সংবিধান চলবে না। জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে, নইলে এই উপদেষ্টারা দেশে থাকতে পারবেন না। জনগণ তাঁদের ছুড়ে ফেলবে।’
বিক্ষোভের সময় নির্বাচন কমিশনের ভেতরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে এক সভা চলছিল। সভার আলোচ্য বিষয় ছিল রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০২৫, জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নীতিমালা।
এনসিপি জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। দলটি স্থানীয় সরকারের ভোট আয়োজন, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্যানেল থেকে ‘দলীয় ব্যক্তিদের’ অপসারণের আহ্বান জানিয়েছে।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment