×

কালীগঞ্জে সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী, চিঠি দেওয়ার পর অপসারণ শুরু

স্ট্রিম প্রতিবেদক

ঝিনাইদের কালীগঞ্জে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সড়কের নির্মাণকাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ এন্টারপ্রাইজ। তবে কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী। এর পর থেকে নির্মাণকাজ বন্ধ রেখে আগের দরপত্র বহির্ভূত মালামাল অপসারণ করেছে ঠিকাদার।

‘ঝিনাইদহ জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষকপ্রকল্পের আওতায় কাশিপুর থেকে সুন্দরপুরবাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কটি পাকাকরণ বাস্তবায়ন করছে উপজেলা এলজিইডি। প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণকাজটি করছে মেসার্স ফিরোজ এন্টারপ্রাইজ। ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর শুরু হওয়া কাজ চলতি বছরের ৩০ আগস্ট শেষ হওয়া কথা। তবে তাদের বিরুদ্ধে কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী বলছে, স্থানীয় একটি ইটভাটার নিম্নমানের ইট ও বালির খোয়া মিক্সস করে রাতের আঁধারে নির্মাণাধীন সড়কটিতে এনে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। এতে সড়কটি অল্প দিনেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তারা।

কালীগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কাশিপুর-সুন্দরপুরবাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের দরপত্র পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ এন্টারপ্রাইজ। সড়কটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটির কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট, বালি, ইটের খোয়াসহ অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব সামগ্রী ইতিমধ্যে রুলারও (সমান) করে ফেলা হয়েছে। সড়কটির এজিংয়ের (ইটের খাড়া মেম্বার)-এর দুই পাশে সিডিউল অনুযায়ী মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে না। এতে অল্প বৃষ্টিতেই নির্মাণাধীন সড়কটি ধ্বসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে সড়কের কাজে অনিয়মের বিষয়টি স্থানীয় এলজিইডি প্রকৌশলীকে জানানো হলে পরের দিন বুধবার (২১ মে) তিনি সড়কটি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই একটি স্মারকে নিজে স্বাক্ষরিত পত্র দেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। চিঠিতে ওই সড়কের কাজের নির্ধারিতমান বহির্ভূত মালামাল অপসারণের নির্দেশ দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজী মর্তুজা হিরো বলেন, ‘সড়কে কিছুটা নিম্নমানের ইট বা ইটের খোয়া আছে, সব না। এই কাজে আমার অনেক লস হবে।’

সড়কের কাজের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় কালীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সৈয়দ শাহরিয়ার আকাশের কাছে। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি সড়কটির তদারকি কর্মকর্তা সার্ভেয়ার আজিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শন করি। ওই সড়কে এ পর্যন্ত ব্যবহৃত ইট, ইটের খোয়া ও বালির মিশ্রণ অত্যন্ত নিম্নমানের। যা স্পেসিফিকেশন (পূর্বনির্ধারিত) বহির্ভূত এবং অগ্রহণযোগ্য। আর এসব সামগ্রী সড়ক থেকে অপসারণের জন্য ইতিমধ্যে আমি ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি। এখন পূর্বের সামগ্রী অপসারণ চলছে, পরে পরিদর্শন করে নতুন করে কাজ শুরু করা হবে।’

 

জানতে চাইলে এলজিইডির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনোয়ার উদ্দিন বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিংবা এলজিইডি দপ্তরের কেউ যদি অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তার বিরুদ্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা। কালীগঞ্জে ওই কাজের ঠিকাদার যদি সড় থেকে নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণ না করে, তাহলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এমনকি এর থেকেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।’

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

পূর্ববর্তী পোস্ট

স্থবির বন্দর ও সচিবালয়: দুই অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন

পরবর্তী পোস্ট

মধ্যপ্রাচ্যে নেতানিয়াহুকে যেভাবে ‘উপেক্ষা’ করছেন ট্রাম্প

Post Comment