যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্দেশনা, বিপাকে বাংলাদেশিসহ লাখো শিক্ষার্থী
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহণ স্থগিত এবং কঠোর সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের নতুন নীতি হাজারো শিক্ষার্থীর স্বপ্নে ধাক্কা দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ভিসা মৌসুমের শেষ মুহূর্তে এসে শিক্ষার্থীদের অনিশ্চয়তায় ফেলেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের। শিক্ষা, অর্থনীতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এর প্রভাব কেমন হতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন মো. ইসতিয়াক
বিদেশি নতুন শিক্ষার্থী ও বিনিময় কর্মসূচির (এফএমজে ক্যাটাগরি) ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট আপাতত স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোকে জানানো হয়েছে এই সিদ্ধান্ত ।
সিদ্ধান্তটি এসেছে একেবারে ভিসা মৌসুমের চূড়ান্ত পর্যায়ে, যখন বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার লক্ষ্যে ভিসা আবেদন করতে যাচ্ছিলেন। একই সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন শিক্ষার্থী ও ভিসাপ্রার্থীদের ওপর আরও কঠোর সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের নতুন নীতিমালা চালুরও ঘোষণা দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর স্বাক্ষর করা পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বার্তায় এই নির্দেশনার কথা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপ ‘নিরাপত্তা মূল্যায়নের অংশ’। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি শুধু তাদের শিক্ষা নয়, স্বপ্নের পথকেই বন্ধ করে দিচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের নতুন রূপরেখা
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রথমবারের মতো অভিবাসী ও অনাবাসী ভিসার আবেদনকারীদের কাছ থেকে তাদের ব্যবহৃত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নাম ও পাঁচ বছর পর্যন্ত পুরোনো ইউজারনেম চাওয়া শুরু করে।
ফেসবুক, টুইটার (বর্তমানে এক্স), ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইউটিউবসহ অন্তত ২০টির বেশি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মের তথ্য জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা চালু হয়। যার মাধ্যমে প্রতিটি আবেদনকারীর অনলাইন কার্যকলাপ, মতামত, যোগাযোগের ধরণ ও আদর্শিক অবস্থান যাচাই করার সুযোগ তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়া এখন আরও কঠোর ও বিস্তৃত করা হচ্ছে।
সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, ভিসা আবেদনকারীর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সরকারবিরোধী, রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল অথবা নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট যেকোনো কনটেন্ট থাকলে তা এখন আবেদন বাতিলের কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোকে ‘বর্ধিত সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রুটিনি’ চালু বা আরও বেশি আবেদনকারীর সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে প্রতিটি ভিসা আবেদন আরও নিবিড়ভাবে পর্যালোচিত হবে।
যদিও এখন পর্যন্ত এই স্ক্রুটিনির নির্দিষ্ট মানদণ্ড, যাচাইয়ের পরিধি বা কোন প্ল্যাটফর্মে কী ধরনের কনটেন্ট আপত্তিকর হিসেবে বিবেচিত হবে, সে বিষয়ে স্পষ্টতা নেই। তবে অভিবাসন আইনজীবীরা সতর্ক করছেন যে এই উদ্যোগ হয়তো নিরাপত্তা বিবেচনার আড়ালে রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ন্ত্রণের পথ তৈরি করতে পারে।
অনেকে একে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর একধরনের রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ হিসেবেও দেখছেন।
সময়ের সঙ্গে সিদ্ধান্তের দ্বৈততা
নতুন ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত রাখার এই নির্দেশনা এমন একসময়ে এল, যখন প্রতিবছরই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আগস্ট–সেপ্টেম্বর সেশনে ভর্তি হওয়ার জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকেন।
এই মৌসুমেই দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে শিক্ষার্থী ও বিনিময় কর্মসূচির ভিসা আবেদনকারীদের চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। সাধারণত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর আই–২০ বা ডিএস–২০১৯ ফর্ম পাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। এই সময়েই তারা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে শুরু করেন।
যেসব সময়সীমা (স্লট) খালি ছিল এবং এখনো কেউ বুক করেননি, সেগুলোও মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলো বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে। তবু এই সিদ্ধান্ত কার্যত নতুন আবেদনকারীদের জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
অনেকেই ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করে ফেললেও এখন তাঁরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পাচ্ছেন না। ফলে তাদের ভর্তি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
অভিবাসন বিশ্লেষক জাহিদ বিশ্বাস এই পরিস্থিতিকে ‘সময়সীমার ঠিক আগমুহূর্তে নেওয়া বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করছেন। তাঁর মতে, হাজারো শিক্ষার্থীর একাডেমিক ভবিষ্যতের ওপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
শিক্ষার্থীদের হতাশা ও ক্ষোভ
এই সিদ্ধান্তের সবচেয়ে গভীর প্রভাব পড়েছে উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের ওপর। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশের যেসব শিক্ষার্থী ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয়েছেন। প্রয়োজনীয় আই–২০ ফর্ম সংগ্রহ করেছেন এবং হাজার হাজার ডলার টিউশন ফি জমা দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা এখন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট না পেয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে ভিসা না পাওয়া মানেই সেই সেমিস্টারে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে না পারা। ফলে ভর্তি বাতিল হওয়ার পাশাপাশি স্কলারশিপ ও গবেষণা সুযোগও হারানোর ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া রুহুল আমিন জানান, ‘আমি তিন মাস ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার পেয়েছি, ফর্ম এসেছে, সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। এখন অ্যাপয়েন্টমেন্ট না পেয়ে আমি চরম হতাশ। এটা শুধু একটা ভিসার ব্যাপার না, আমার স্বপ্নটা যেন হঠাৎ থেমে গেল।’
একইভাবে, ফুলব্রাইট স্কলার হিসেবে মনোনীত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার স্কলারশিপের নির্ধারিত সময়সীমা আছে। এর মধ্যে ভিসা না পেলে আমার জায়গাটা বাতিল হয়ে যাবে। এটা শুধু আমার একাডেমিক ক্ষতি না, যুক্তরাষ্ট্র–বাংলাদেশ শিক্ষাগত সহযোগিতার ক্ষেত্রেও একটা নেতিবাচক বার্তা।’
বিভিন্ন শিক্ষাবিষয়ক ফোরাম, অভিবাসন সহায়তা সংগঠন এবং আইনজীবীরা জানান, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের গ্রহণযোগ্যতা ও উদারতার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিশেষ করে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আকর্ষণে প্রতিযোগিতায় নেমেছে, তখন এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা খাতের জন্যও একটি বড় আঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর আর্থিক চাপ
যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। প্রতি বছর দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গড়ে প্রায় ১১ লাখ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশটির অর্থনীতিতে প্রায় ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রাখে এই শিক্ষার্থীরা।
এই শিক্ষার্থীরা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় দ্বিগুণ বা ততোধিক টিউশন ফি দিয়ে থাকে, ফলে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেটের একটি বড় অংশ আসে এই আয়ের উপর নির্ভর করে। বিশেষ করে মধ্য ও নিম্ন তহবিলপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক অবদানে বহুলাংশে নির্ভরশীল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষার্থী ভিসা কার্যক্রম স্থগিত থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামনে একটি বড় আর্থিক সংকট দেখা দিতে পারে।
এমআইটি, স্ট্যানফোর্ড বা ইউসি এর মতো যুক্তরাষ্ট্রের অনেক গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের গবেষণাগার এবং প্রজেক্টগুলো পরিচালনায় আন্তর্জাতিক পিএইচডি শিক্ষার্থী ও স্কলারদের ওপর নির্ভর করে থাকে।
এই শিক্ষার্থীরাই অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষক–সহযোগী, গবেষণা সহকারী এবং ল্যাব ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে থাকেন। তাই এই ভিসা স্থগিতাদেশ শুধু আর্থিক দিক থেকেই নয়, গবেষণা উৎপাদনশীলতা ও একাডেমিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতাও বিঘ্নিত করবে।
এ ছাড়া, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আওতায় আসা শিক্ষার্থী ও স্কলারদের অনুপস্থিতি আন্তবিশ্ববিদ্যালয় সহযোগিতা, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ শিক্ষা পরিবেশে একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছেন নীতিনির্ধারকরা। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যেই সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় জরুরি বাজেট পুনর্বিন্যাসের চিন্তা শুরু করেছে, যা দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার মান ও সুযোগ দুটিতেই চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও বিতর্ক
মার্কিন অভিবাসন নীতিতে শিক্ষার্থী ভিসা স্থগিতাদেশের এই সিদ্ধান্ত দেশটির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিভাজনের ফল মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন রিপাবলিকান দল দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে দেশের কিছু শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়—বিশেষ করে হার্ভার্ড, কলম্বিয়া ও ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া—বামপন্থী রাজনৈতিক মতাদর্শের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান প্রো–প্যালেস্টাইন বিক্ষোভ এবং ইসরায়েলবিরোধী অবস্থানকে ইহুদি বিরোধিতা হিসেবে চিহ্নিত করে কংগ্রেসের কয়েকজন সদস্য এসব প্রতিষ্ঠানের ফেডারেল তহবিল কমানোর বা বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
এই পটভূমিতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি তাদের কিছু আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম এবং শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে, যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রশাসনিক জটিলতার কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একযোগে এই পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর একটি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রফেসরস (এএইউপি) ও আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক স্বাধীনতা হরণ এবং মতাদর্শিক মতভেদকে দমন করার একটি বিপজ্জনক নজির।
ভবিষ্যতের আশঙ্কা ও করণীয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হতে পারে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা শুধু শ্রেণিকক্ষ ভরিয়ে তোলেন না, তারা গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক কাঠামোকে শক্তিশালী করেন এবং বহুসাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরি করে ক্যাম্পাসজুড়ে নতুন চিন্তা ও সহযোগিতার পথ খুলে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্ট ফোরাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্র হতে পারে না। ভিসা স্থগিত করে শিক্ষার্থীদের অচলাবস্থায় ঠেলে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নেতৃত্বের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
এদিকে হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড, এমআইটি ও কলম্বিয়ার মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টরা এই উদ্যোগকে নীতিগতভাবে অনৈতিক এবং শিক্ষানীতির বিরুদ্ধাচরণ বলে অভিহিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিষয়ক শিক্ষকদের সংগঠন ন্যাফসা যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিষয়ক সবচেয়ে বড় সংগঠন হিসেবে পরিচিত। তারাও সরাসরি এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
এই সংকটের আলোকে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ জাহিদ বিশ্বাসের পরামর্শ হলো, যুক্তরাষ্ট্র সরকার যেন স্পষ্ট, সময়োপযোগী ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নীতিমালার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আস্থা পুনঃস্থাপন করে। একই সঙ্গে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে এই সংকটের ন্যায়সংগত সমাধানের পক্ষে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও জরুরি।
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment