×

আবহাওয়ার আচরণ বদল: সময়ের আগেই কেন মৌসুমি বৃষ্টি

গতকাল ২৯ মে নোয়াখালী, ফেনী ও কুমিল্লা এলাকার ভারী বৃষ্টিপাত দেশের আবহাওয়ার এক নতুন বাস্তবতা তুলে ধরেছে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বর্ষার আগমনের সময় ও বৃষ্টিপাতের ধরন বদলে যাচ্ছে। যা সরাসরি প্রভাব ফেলছে কৃষি, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন মো. ইসতিয়াক   

বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই চলতি মে মাসে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নোয়াখালী, ফেনী ও পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা জেলায় হঠাৎ একটানা ভারী বৃষ্টিপাত দেখা দিয়েছে। সাধারণত এই সময়টিকে প্রাক-বর্ষা ধরা হয়। তবে এবারের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, সময়কাল ও তীব্রতা বিগত সময়ের তুলনায় ব্যতিক্রম। অসময়ের এই বৃষ্টিতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষিরা। আর শহরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতাসহ চলাচলে বিপর্যয়।  

আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা নয়; বরং এটি দক্ষিণ-এশিয়ার আবহাওয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। বঙ্গোপসাগরের উষ্ণতা বৃদ্ধি, মৌসুমি বায়ুর আগাম সক্রিয়তা এবং নিম্নচাপ দ্রুত সৃষ্টির প্রবণতা–সব মিলিয়ে এমন বৈরী আবহাওয়া আগামীতেও ঘন ঘন দেখা দিতে পারে। এই অবস্থায় দেশের কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশে কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা বোঝা ও প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে।

কেন মৌসুমি বায়ু আগাম আসে 

‘কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিক সময়ের আগেই মৌসুমি বায়ু এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে। এই পরিবর্তনের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।’ বলছিলেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আতিকুর রহমান।

চলতি মে মাসের শেষ সপ্তাহেই টেকনাফ উপকূল দিয়ে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটে, যা স্বাভাবিক সূচকের প্রায় এক সপ্তাহ আগেই ঘটেছে। সাধারণত বছরের ১ জুনের দিকে এই বায়ুর প্রবেশ ঘটে। গত এক দশকের তুলনায় এটি আগাম প্রবণতার ধারাবাহিকতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।  

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ খোন্দকার হাফিজুর রহমান এই পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, মৌসুমি বায়ুর আগাম প্রবেশের পেছনে দুটি বৈশ্বিক আবহাওয়াগত কারণ কাজ করেছে। প্রথমত, মাদাগাস্কারের কাছে সৃষ্ট শক্তিশালী ‘ম্যাসকারিন হাই প্রেসার’ সোমালিয়া উপকূল হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আর্দ্র বায়ু প্রবাহিত করে, যা উপমহাদেশের দিকে মৌসুমি বায়ুকে ত্বরান্বিত করে। দ্বিতীয়ত, ভারতের মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলে সৃষ্ট একটি তাপীয় লঘুচাপ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অগ্রগতি ত্বরান্বিত করেছে।

এছাড়া চলতি সময়ে আরব সাগরে সক্রিয় একটি নিম্নচাপ এবং বঙ্গোপসাগরে সম্ভাব্য লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাসও মৌসুমি বায়ুর গতিপথ ও আগমনকালকে প্রভাবিত করেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর ফলস্বরূপ, মে মাসের শেষ পাঁচ দিনে ফেনীতে ১১০ মিলিমিটার, নোয়াখালীতে ১০৫ মিলিমিটার ও কুমিল্লায় ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা বছরের ওই সময়ের স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় অনেক বেশি। 

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অপ্রত্যাশিত ও অকাল বৃষ্টিপাত পাহাড়ি ঢল, নদীভাঙন ও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করতে পারে। একইভাবে বঙ্গোপসাগরে একাধিক লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা হয়তো ঘূর্ণিঝড়েও রূপ নিতেও পারে।

বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নোয়াখালীর নিম্নাঞ্চল। ছবি: সংগৃহীত

মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত নোয়াখালীতে 

বঙ্গোপসাগরের উষ্ণতা বৃদ্ধি, গভীর নিম্নচাপ ও মৌসুমি আর্দ্রতার কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী, ফেনী ও কুমিল্লা জেলায় হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নোয়াখালী জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা মৌসুমের সর্বোচ্চ। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা ও ফসলহানির আশঙ্কা আরও বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন আবহাওয়াবিদরা।   

নোয়াখালীর হাতিয়ার উপকূলে সাগর উত্তাল রয়েছে, বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়া উপজেলায় কয়েকটি বেড়িবাঁধ ক্ষতি হয়েছে। এতে ওই এলাকার অনেক ঘরবাড়ি, মাছের ঘের ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। মেঘনা নদীতে ‘এমভি প্রাহিম’ নামের একটি পণ্যবাহী ট্রলার চার কোটি টাকার মালামাল নিয়ে ডুবে গেছে। নিঝুমদ্বীপের প্রধান সড়কগুলো প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 

এদিকে ফেনীতে শুক্রবার সকাল ৬ পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ওই এলাকায় চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত বাড়লে মুহুরি নদীর পানি দ্রুত বিপদসীমার ওপরে উঠতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে জেলার পরশুরামে ২১টি ও ফুলগাজীতে ২০টি বাঁধ চিহ্নিত করে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

তা ছাড়া কুমিল্লা নগরীতেও দিনভর হালকা থেকে ভারী মাপের বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে ঠাকুরপাড়া, কান্দিরপাড়, ছায়াবিতানসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। 

পানি বাড়ছে কুমিল্লার গোমতী নদীতে। ছবি: স্ট্রিম

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমদ বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া মোকাবেলায় আমাদের সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রেডক্রিসেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কাজ করছে।’ এদিকে ফেনী জেলা প্রশাসন ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনও নগর ব্যবস্থাপনায় সতর্কতা অবলম্বন করছে বলে জানা গেছে।

সতর্কতায় তথ্য ঘাটতি  

২০২৫ সালের আগাম বর্ষা ও সম্ভাব্য ঢল নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ নদী কমিশনসহ (জেআরসি) সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তথ্য আদান-প্রদান ও সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সক্রিয় রয়েছে। কমিশনের একজন মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানান, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে সৃষ্ট লঘুচাপ ও বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে আগাম ঢলের সম্ভাবনা রয়েছে। নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে, যা আমাদের (বাংলাদশে) আরও আগেভাগে সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।’ তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার আচরণ অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। ফলে ঢলের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্য ঘাটতি ও প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যৌথ নদী কমিশন পূর্বাভাস ব্যবস্থাকে উন্নত করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রযুক্তি হালনাগাদের ওপর জোর দিয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) চলতি বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে, যা বাংলাদেশের নদীগুলোর পানি বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর পাশাপাশি নোয়াখালী, ফেনী ও কুমিল্লার নদীগুলোর পানির স্তর দ্রুত বাড়তে পারে। ফলে এসব অঞ্চলে আগাম বন্যা বা প্লাবনের ঝুঁকি বাড়ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারাও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, চলতি মে মাসে যে ঘন ঘন ও টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা নদীর পানি পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে।   

দেশে আগাম বর্ষার রেকর্ড

বাংলাদেশের জলবায়ু ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০০৯ সাল ছিল দেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বছর। সে বছর অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ে ভারী বর্ষণ হয়। সে সময় মে মাসের শেষভাগে ব্যাপক বৃষ্টিপাত দেখা দেয়, যা কৃষি উৎপাদন, অবকাঠামো ও জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। 

তবে গত এক দশকে আগাম বর্ষার প্রবণতা ধীরে ধীরে নিয়মিত ঘটনার রূপ নিচ্ছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

গতবছরও ভয়াবহ বন্যা দেখেছিল নোয়াখালী। ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বঙ্গোপসাগরের পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। ফলে জলীয়বাষ্পের ঘনত্ব বেড়ে বায়ুমণ্ডলে অধিক আর্দ্রতা তৈরি হচ্ছে। এই অতিরিক্ত আর্দ্রতা বর্ষা মৌসুমের আগেই বৃষ্টিপাতের পরিবেশ তৈরি করছে।  

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক দশকে বছরের মে মাসে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আর দেশীয় পরিবেশবাদী সংস্থা বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারগর্ভামেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় মৌসুমি প্যাটার্নে যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, তা মানবসৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ও বন উজাড়ের সরাসরি প্রভাব। 

আইপিসিসির ষষ্ঠ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ উপকূলীয় দেশগুলোতে মৌসুম পরিবর্তনের সময়কাল ও তীব্রতা, উভয়ই বদলে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, জলবায়ু অভিযোজন পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আগাম বর্ষা আরও আগেই শুরু হতে পারে। এমনকি এপ্রিল মাসেই মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ধারা দেখা যেতে পারে। 

 কৃষি, স্বাস্থ্য ও জনজীবনে প্রভাব

আগাম বর্ষার কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি খাত। মে মাসের শেষ দিকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বোরো ধান কাটার আগেই হাওর ও দক্ষিণাঞ্চলের জমি ডুবে গেছে। এছাড়া তরমুজ, শাকসবজি, টমেটো, বেগুন, মরিচসহ গ্রীষ্মকালীন ফসল নষ্ট হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হাজারো ক্ষুদ্র কৃষক। 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মে মাসে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। উপকূলীয় অঞ্চলে মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে গিয়ে মৎস্যচাষিরাও ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন।

স্বাস্থ্য খাতেও আগাম বর্ষার প্রভাব গুরুতর। জমে থাকা পানিতে মশার প্রজনন বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ দ্রুত বাড়ে। ২০২৩ সালের মে মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল সাড়ে পাঁচ হাজার। যা আগের পাঁচ বছরের তুলনায় চার গুণ বেশি। ২০২৪ সালে এপ্রিল-মে মিলিয়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছায় প্রায় ১২ হাজারে। মৌসুমের শুরুতে এটি ছিল সর্বোচ্চ।  

এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:

Post Comment