শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের এ দাবি কি সত্য
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমদানি পণ্যের ওপর বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন। এর পেছনে তাঁর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরে অন্যায্য বাণিজ্যের শিকার হচ্ছে।
গত ২ এপ্রিল তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এরমধ্যে চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। প্রতিশোধ হিসেবে চীনও প্রায় ৮৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
এমন পাল্টাপাল্টি শুল্কযুদ্ধের মধ্যে ট্রাম্প দাবি করেন, নতুন শুল্ক আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন ২ বিলিয়ন ডলার পাচ্ছে।তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির ভেরিফাই বিভাগ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবিগুলো প্রমাণিত নয়। তাঁর দাবিগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে বিবিসি ভেরিফাই।
যুক্তরাষ্ট্র কি দৈনিক ২ বিলিয়ন ডলার আয় করছে
নতুন শুল্ক আরোপের পর গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, আমরা প্রতিদিন ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার আয় করছি।
বিবিসি ভেরিফাই বলছে, ট্রাম্পের দাবির পক্ষে কোনো প্রকাশিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
শুল্ক থেকে পাওয়া কত অর্থ ফেডারেল সরকারে পাঠানো হয়, তা নিয়ে প্রতিদিন বিবৃতি দেয় মার্কিন অর্থ বিভাগ।
গত ৭ এপ্রিলের বিবিৃতি অনুযায়ী, শুল্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক আয় সর্বোচ্চ ২১৫ মিলিয়ন (২১ কোটি ৫০ লাখ) ডলার। এটি ট্রাম্পের দাবি করা অঙ্কের চেয়ে অনেক কম।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্র দৈনিক ৯ বিলিয়ন (৯০০ কোটি) ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত ২ এপ্রিল পর্যন্ত ট্রাম্পের আরোপ করা গড় শুল্কহার ছিল ২২ শতাংশ। সে হিসাবে আমদানি করা পণ্য থেকে দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আয় হতে পারে ২ বিলিয়ন (তবে নতুন শুল্ক ঘোষণায় দেশটিতে পণ্য আমদানি কমতে পারে)। এখানে যে আয়ের কথা বলা হয়েছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানির পরিমাণ আগের মতোই ধরা হয়েছে।
ট্রাম্পের ওই দাবির ভিত্তি ৬ এপ্রিল তাঁর বাণিজ্য উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেও হতে পারে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারাও দাবি করেছিলেন, বছরে এখন থেকে শুল্ক আয় ৭০০ বিলিয়ন (৭০ হাজার কোটি) ডলারে দাঁড়াতে পারে। এ থেকে যুক্তরাষ্ট্র দিনে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা এ পরিসংখ্যান কীভাবে দাঁড় করালেন, সেটি পরিষ্কার নয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুল্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আয় তাঁর দেওয়া এ পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক কম হতে পারে।ট্রাম্পের দাবির পক্ষে হোয়াইট হাউসের বক্তব্য জানতে চেয়েছে বিবিসি ভেরিফাই। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি
এই কন্টেন্টটি শেয়ার করুন:
Post Comment