leadT1ad

‘এমন কোনো মানুষ নেই, রাইসা মনির জন্য কাঁদেনি’

শাহাবুল শেখ বলেন, ‘লাশ পাওয়ার পর রাতেই মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি আলফাডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা দিই। বাড়ি পৌঁছাতে ভোর হয়ে যায়। সকালে ঈদগাহ ময়দানে জানাজার পর বাজড়া কবরস্থানে মেয়েকে দাফন করেছি।’ তারপর আর বলতে পারেননি শাহাবুল। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

স্ট্রিম সংবাদদাতাফরিদপুর
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ১৬: ২১
রাইসা মনির জানাজায় এলাকাবাসীর ভীড়। স্ট্রিম ছবি

রাইসা মনির বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল মেয়েদের ভাল স্কুলে পড়ানোর। উচ্চশিক্ষায় সুশিক্ষিত করার। ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে কোথাও যেন এতটুকু কমতি না থাকে। সেই কথা ভেবে তিন সন্তান নিয়ে শাহাবুল-মিম দম্পতি উঠেন রাজধানীর উত্তরায় ভাড়া বাসায়। দুই মেয়ে ভর্তি করেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখানে রাইসা মনি পড়ত তৃতীয় শ্রেণিতে। একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ে বড় বোন সিনথিয়া।

মাইনস্টোন স্কুলে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা যায় ছোট মেয়ে রাইসা মনি। শুক্রবার (২৫ জুলাই) গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় দাফন করা হয়েছে তাকে। এ দিন সকাল ৯টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজা হয় তার। পরে গ্রামের বাজড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এর আগে সোমবার (২৪ জুলাই) মাইনস্টোন স্কুলে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর প্রথমে রাইসা মনিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনার পর থেকেই মেয়ের চিন্তায় অনবরত চোখের পানি ফেলছিলেন বাবা-মা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে রাইসার মরদেহ শনাক্ত করেন তার বাবা শাহাবুল শেখ।

তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ১১ বছরের রাইসা মনির মৃত্যু শোকে কাতর শাহাবুল-মিম দম্পতি। রাইসার জন্মের দুই বছর আগে তাঁদের কোলজুড়ে আসে বড় বোন সিনথিয়া (১৩)। সবচেয়ে ছোট ছেলে রাফসান শেখের বয়স ৪ বছর। এখন বারবার তাদের জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করছেন বাবা-মা। শোকে বিহ্বল আত্মীয়-স্বজনসহ পুরো পরিবার।

রাইসা মনির মরদেহ গ্রামে আনা হচ্ছে জেনে বৃহস্পতিবার রাতেও বাড়িতে অপেক্ষা করছিল অনেকে। শুক্রবার ভোরের দিকে তার মরদেহবাহী গাড়ি পৌঁছে গ্রামের বাড়িতে। তারপর অবতারণা হয় এক হৃদয়-বিদারক দৃশ্যর। ঘুমভাঙা চোখের ভেঙে পড়ে পাড়া-প্রতিবেশি। গোপালপুর ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘রাইসা মনির অকাল মৃত্যুতে পুরো এলাকার মানুষ শোকে বিহ্বল। এমন কোনো মানুষ নেই, রাইসা মনির জন্য কাঁদেনি।’

হাসপাতালে রাইসা মনিকে শনাক্ত করার পরও মরদেহ হস্তান্তর করা হয়নি পরিবারের কাছে। বিমান বিধ্বস্তের পর তার দেহ এতটাই পুড়ে গেছে যে, নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না। মঙ্গলবার বাবা শাহাবুল শেখের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন সিআইডির ল্যাবের সদস্যরা। নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করে রাইসা মনিকের শনাক্তের পর বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

শাহাবুল শেখ বলেন, ‘লাশ পাওয়ার পর রাতেই মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি আলফাডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা দিই। বাড়ি পৌঁছাতে ভোর হয়ে যায়। সকালে ঈদগাহ ময়দানে জানাজার পর বাজড়া কবরস্থানে মেয়েকে দাফন করেছি।’ তারপর আর বলতে পারেননি শাহাবুল। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

Ad 300x250

পরিবারের দাবি মৃতদেহ সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে কর্তৃপক্ষ, সরকার বলছে ভিন্ন কথা

চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা

ইসলামি শক্তির ঐক্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে

আগুনের লেলিহান শিখা পেরিয়ে যেভাবে সেদিন আমরা সূর্যকে খুঁজে পেলাম

আরও ১২ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা

সম্পর্কিত