জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গত ২ জুন ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হয়। সোমবার পর্যন্ত প্রায় ২৫টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে আটটির। আলোচনা হলেও ১০টি বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। আর দ্বিকক্ষ সংসদের মতো ৮টি বিষয়ে বেশিরভাগ দল সমর্থন দিলেও তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আকারে আসেনি। এখনো আলোচনা শুরু হয়নি দুটি বিষয়ের।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষ সংসদের প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে। তবে সংসদের উচ্চকক্ষের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য বেশি। নারী আসন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার মতো কয়েকটি বিষয় সংস্কারেও দলগুলো একমত। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছে দলগুলো।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যের অনুপাতে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিত্ব নির্ধারণ করতে হবে। তবে নিম্নকক্ষের ভোটের আনুপাতিক হারে উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব চায় জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ কয়েকটি দল। এর ফলে দীর্ঘ আলোচনা শেষেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি ঐকমত্য কমিশন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গত ২ জুন ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হয়। সোমবার পর্যন্ত প্রায় ২৫টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে আটটির। আলোচনা হলেও ১০টি বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। আর দ্বিকক্ষ সংসদের মতো ৮টি বিষয়ে বেশিরভাগ দল সমর্থন দিলেও তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আকারে আসেনি। এখনো আলোচনা শুরু হয়নি দুটি বিষয়ের।
গত মঙ্গলবার আলোচনা শেষে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের দ্বিকক্ষ সংসদের প্রতি সমর্থন রয়েছে। কিন্তু উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। উচ্চকক্ষের প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত রবিবার জানানো হবে।’
ঐকমত্য কমিশনে এ সপ্তাহে ৬টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেগুলো হলো দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন, নিম্নকক্ষে নারী সংসদসদস্য সংখ্যা, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও সংবিধান সংশোধন।
এর মধ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রক্রিয়া এবং প্রধান বিচারপতির নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করবেন। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরোধী দলীয় নেতা বা তার অনুপস্থিতিতে উপনেতা অংশ নেবেন।
অন্যদিকে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের কর্মে জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। তবে কোনো দল যদি নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করে যে জ্যেষ্ঠ দুজনের মধ্যে থেকে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে, তারা ক্ষমতায় গেলে সে অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করতে পারবে।
‘কিছু সুনির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ, যেমন প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ ৮, ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ ৫৮ক, ৫৮খ এবং ৫৮ঙ) সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।’ -আলী রীয়াজ, সহসভাপতি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত করে মোট আসনের ৩৩ শতাংশে শুধু নারী প্রার্থীকে সরাসরি মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব জানায় ঐকমত্য কমিশন। গত সোমবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার ১৩তম দিনে নারী আসন বিলুপ্তির প্রস্তাব উত্থাপন করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। রাজনৈতিক দলের মতভেদের কারণে এ বিষয়ে আর সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সংসদে নারী আসন বাড়ানোর প্রস্তাবে অধিকাংশ দল একমত। তবে সরাসরি নারীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন চেয়েছে।
গত ২ জুলাই ঐকমত্য কমিশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হয়। দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে একমত হয়। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়।
সংবিধান সংস্কার কমিশন জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এনসিসির প্রস্তাব বাদ দেয় ঐকমত্য কমিশন। এর ফলে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার রূপরেখার সুপারিশও বাদ হয়ে যায়।
এরপর গত রবিবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সমন্বিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সেটি নিয়েও দেখা দেয় মতভিন্নতা। এ বিষয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি আলাদা প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।
বিএনপির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর সংবিধানের ৫৮(গ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের উপযুক্ত নাগরিকদের মধ্যে থেকে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেবেন।
বিএনপির দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাবটি হলো— প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের (যেহেতু ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদল থেকে হবে) সমন্বয়ে কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটির সভাপতি হবেন রাষ্ট্রপতি, তবে তিনি ভোট দিতে পারবেন না। এভাবে গঠিত কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
অথবা রাষ্ট্রপতি ভোট দিতে পারবেন সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের সঙ্গে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলের একজন প্রতিনিধি মিলে কমিটি হবে। এটি বিএনপির তৃতীয় বিকল্প প্রস্তাব।
চতুর্থ বিকল্প প্রস্তাবে বিএনপি আগে উল্লিখিত প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ডেপুটি স্পিকারকে বাদ দিয়ে যেসব রাজনৈতিক দল ন্যূনতম ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে তাদের প্রত্যেক দলের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি রাখার কথা বলেছে। এখানেও রাষ্ট্রপতি ভোট দিতে পারবেন।
ওপরের চারটি প্রস্তাবে একমত হওয়া না গেলে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে আসা যায় বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে বিএনপি। এক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাবে গঠিত কমিটির। অর্থাৎ, বিএনপি যে দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে সেখানকার প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের (যেহেতু ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদল থেকে হবে) সমন্বয়ে গঠিত কমিটি প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবে।
বিএনপির এ প্রস্তাবের পর সোমবার ঐকমত্য কমিশনে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব জমা দেয় জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার সমন্বয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে একটি বাছাই কমিটি হবে। কমিটি তিন দিনের মধ্যে সভা করবে। কমিটির কাছে সরকারি দল বা জোট পাঁচজন, প্রধান বিরোধী দল বা জোট পাঁচজন ও সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী অন্যান্য বিরোধীদলগুলো দুজন করে নির্দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করতে পারবে। কমিটি নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একজনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে জামায়াত বলেছে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ থেকে ৩০ দিন আগে জাতীয় সংসদের স্পিকারের তত্ত্বাবধানে এবং সংসদ সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনায় একটি সংসদীয় কমিটি হবে। এতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী বা সংসদ নেতা বা সরকারি দলের সংসদীয় দলনেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদের স্পিকার, সংসদের বিরোধী দলীয় ডেপুটি স্পিকার, সংসদ উপনেতা, সংসদের প্রধান হুইপ, বিরোধী দলীয় উপনেতা, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ এবং সংসদের অন্যান্য বিরোধী দলের দুজন প্রতিনিধি। এ কমিটি নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বাছাই করবে।
এ পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কোনো ব্যক্তিকে চূড়ান্ত করা সম্ভব না হলে তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা পদের জন্য সংসদের সরকারি দল বা জোট পাঁচজন, সংসদের প্রধান বিরোধী দল বা জোট পাঁচজন এবং সংসদের অন্যান্য বিরোধী দল তিনজন সর্বমোট ১৩ জন নির্দলীয় ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করবে। কমিটি এ ১৩ জনের মধ্যে একজনের নাম প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করবে।
প্রথম দুটি পদ্ধতিতে একমত হওয়া না গেলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জন্য সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বহাল করা হবে। তবে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার বিকল্পটি (অপশন) বাদ দেওয়া হবে।
এর আগে, ২৫ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে কমিশনে প্রস্তাব দিয়েছিল এনসিপি। দলটির প্রস্তাব হলো, সংসদ ভেঙে দেওয়ার অন্তত তিন সপ্তাহ আগে ১১ সদস্যের একটি সর্বদলীয় কমিটি গঠন করা হবে। প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সর্বদলীয় কমিটিতে সংসদীয় দলগুলোর সদস্যসংখ্যা নির্ধারিত হবে। সংসদীয় কমিটিতে সদস্য অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যেকোনো দলকে ন্যূনতম ৫ শতাংশ ভোটের অধিকারী হতে হবে।
আইনসভার যেকোনো কক্ষের (উচ্চকক্ষ, নিম্নকক্ষ) সদস্য এ কমিটির সদস্য হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। সরকারি দল, প্রধান বিরোধী দল ও অন্যান্য বিরোধী দল নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনজন করে মোট ৯ জন নির্দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করতে পারবে। কোন দল কোন কোন ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে, জনগণের কাছে তা খোলাসা করতে হবে।
প্রস্তাবিত নামগুলো থেকে একটি নাম চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির কাছে নামের তালিকা পাঠানো হবে। কমিটি ৮-৩ ভোটে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে একজন ব্যক্তির নাম চূড়ান্ত করবে। এই প্রক্রিয়ায় প্রস্তাবিত নামগুলো থেকে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করা না গেলে উচ্চকক্ষ ‘র্যাঙ্কড চয়েস ভোটিং’ (পছন্দের ক্রমানুসারে ভোট) পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করবে।
গত মঙ্গলবার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কীভাবে নিযুক্ত হবেন, সে বিষয়ে একটি সমাধান আসবে। বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পরিবর্তন করতে গণভোট লাগবে।
গত মঙ্গলবার সংবিধান সংশোধন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠিত না হলে অথবা গঠিত হওয়া পর্যন্ত সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সমর্থন প্রয়োজন হবে বলে জানান আলী রীয়াজ। তবে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে দলগুলো কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বলেও জানান তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, কিছু সুনির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ, যেমন প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ ৮, ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ ৫৮ক, ৫৮খ এবং ৫৮ঙ) সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আবার আলোচনা হতে পারে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে। আগামী রবিবার পুনরায় এ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষ সংসদের প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে। তবে সংসদের উচ্চকক্ষের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য বেশি। নারী আসন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার মতো কয়েকটি বিষয় সংস্কারেও দলগুলো একমত। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছে দলগুলো।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যের অনুপাতে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিত্ব নির্ধারণ করতে হবে। তবে নিম্নকক্ষের ভোটের আনুপাতিক হারে উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব চায় জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ কয়েকটি দল। এর ফলে দীর্ঘ আলোচনা শেষেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি ঐকমত্য কমিশন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গত ২ জুন ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হয়। সোমবার পর্যন্ত প্রায় ২৫টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে আটটির। আলোচনা হলেও ১০টি বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। আর দ্বিকক্ষ সংসদের মতো ৮টি বিষয়ে বেশিরভাগ দল সমর্থন দিলেও তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আকারে আসেনি। এখনো আলোচনা শুরু হয়নি দুটি বিষয়ের।
গত মঙ্গলবার আলোচনা শেষে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের দ্বিকক্ষ সংসদের প্রতি সমর্থন রয়েছে। কিন্তু উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। উচ্চকক্ষের প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত রবিবার জানানো হবে।’
ঐকমত্য কমিশনে এ সপ্তাহে ৬টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেগুলো হলো দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন, নিম্নকক্ষে নারী সংসদসদস্য সংখ্যা, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও সংবিধান সংশোধন।
এর মধ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রক্রিয়া এবং প্রধান বিচারপতির নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করবেন। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরোধী দলীয় নেতা বা তার অনুপস্থিতিতে উপনেতা অংশ নেবেন।
অন্যদিকে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের কর্মে জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। তবে কোনো দল যদি নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করে যে জ্যেষ্ঠ দুজনের মধ্যে থেকে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে, তারা ক্ষমতায় গেলে সে অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করতে পারবে।
‘কিছু সুনির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ, যেমন প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ ৮, ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ ৫৮ক, ৫৮খ এবং ৫৮ঙ) সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।’ -আলী রীয়াজ, সহসভাপতি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত করে মোট আসনের ৩৩ শতাংশে শুধু নারী প্রার্থীকে সরাসরি মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব জানায় ঐকমত্য কমিশন। গত সোমবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার ১৩তম দিনে নারী আসন বিলুপ্তির প্রস্তাব উত্থাপন করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। রাজনৈতিক দলের মতভেদের কারণে এ বিষয়ে আর সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সংসদে নারী আসন বাড়ানোর প্রস্তাবে অধিকাংশ দল একমত। তবে সরাসরি নারীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন চেয়েছে।
গত ২ জুলাই ঐকমত্য কমিশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হয়। দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে একমত হয়। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়।
সংবিধান সংস্কার কমিশন জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এনসিসির প্রস্তাব বাদ দেয় ঐকমত্য কমিশন। এর ফলে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার রূপরেখার সুপারিশও বাদ হয়ে যায়।
এরপর গত রবিবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সমন্বিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সেটি নিয়েও দেখা দেয় মতভিন্নতা। এ বিষয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি আলাদা প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।
বিএনপির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর সংবিধানের ৫৮(গ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের উপযুক্ত নাগরিকদের মধ্যে থেকে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেবেন।
বিএনপির দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাবটি হলো— প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের (যেহেতু ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদল থেকে হবে) সমন্বয়ে কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটির সভাপতি হবেন রাষ্ট্রপতি, তবে তিনি ভোট দিতে পারবেন না। এভাবে গঠিত কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
অথবা রাষ্ট্রপতি ভোট দিতে পারবেন সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের সঙ্গে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলের একজন প্রতিনিধি মিলে কমিটি হবে। এটি বিএনপির তৃতীয় বিকল্প প্রস্তাব।
চতুর্থ বিকল্প প্রস্তাবে বিএনপি আগে উল্লিখিত প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ডেপুটি স্পিকারকে বাদ দিয়ে যেসব রাজনৈতিক দল ন্যূনতম ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে তাদের প্রত্যেক দলের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি রাখার কথা বলেছে। এখানেও রাষ্ট্রপতি ভোট দিতে পারবেন।
ওপরের চারটি প্রস্তাবে একমত হওয়া না গেলে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে আসা যায় বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে বিএনপি। এক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাবে গঠিত কমিটির। অর্থাৎ, বিএনপি যে দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে সেখানকার প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের (যেহেতু ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদল থেকে হবে) সমন্বয়ে গঠিত কমিটি প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবে।
বিএনপির এ প্রস্তাবের পর সোমবার ঐকমত্য কমিশনে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব জমা দেয় জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার সমন্বয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে একটি বাছাই কমিটি হবে। কমিটি তিন দিনের মধ্যে সভা করবে। কমিটির কাছে সরকারি দল বা জোট পাঁচজন, প্রধান বিরোধী দল বা জোট পাঁচজন ও সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী অন্যান্য বিরোধীদলগুলো দুজন করে নির্দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করতে পারবে। কমিটি নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একজনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে জামায়াত বলেছে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ থেকে ৩০ দিন আগে জাতীয় সংসদের স্পিকারের তত্ত্বাবধানে এবং সংসদ সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনায় একটি সংসদীয় কমিটি হবে। এতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী বা সংসদ নেতা বা সরকারি দলের সংসদীয় দলনেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদের স্পিকার, সংসদের বিরোধী দলীয় ডেপুটি স্পিকার, সংসদ উপনেতা, সংসদের প্রধান হুইপ, বিরোধী দলীয় উপনেতা, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ এবং সংসদের অন্যান্য বিরোধী দলের দুজন প্রতিনিধি। এ কমিটি নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বাছাই করবে।
এ পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কোনো ব্যক্তিকে চূড়ান্ত করা সম্ভব না হলে তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা পদের জন্য সংসদের সরকারি দল বা জোট পাঁচজন, সংসদের প্রধান বিরোধী দল বা জোট পাঁচজন এবং সংসদের অন্যান্য বিরোধী দল তিনজন সর্বমোট ১৩ জন নির্দলীয় ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করবে। কমিটি এ ১৩ জনের মধ্যে একজনের নাম প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করবে।
প্রথম দুটি পদ্ধতিতে একমত হওয়া না গেলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জন্য সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বহাল করা হবে। তবে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার বিকল্পটি (অপশন) বাদ দেওয়া হবে।
এর আগে, ২৫ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে কমিশনে প্রস্তাব দিয়েছিল এনসিপি। দলটির প্রস্তাব হলো, সংসদ ভেঙে দেওয়ার অন্তত তিন সপ্তাহ আগে ১১ সদস্যের একটি সর্বদলীয় কমিটি গঠন করা হবে। প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সর্বদলীয় কমিটিতে সংসদীয় দলগুলোর সদস্যসংখ্যা নির্ধারিত হবে। সংসদীয় কমিটিতে সদস্য অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যেকোনো দলকে ন্যূনতম ৫ শতাংশ ভোটের অধিকারী হতে হবে।
আইনসভার যেকোনো কক্ষের (উচ্চকক্ষ, নিম্নকক্ষ) সদস্য এ কমিটির সদস্য হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। সরকারি দল, প্রধান বিরোধী দল ও অন্যান্য বিরোধী দল নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনজন করে মোট ৯ জন নির্দলীয় প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করতে পারবে। কোন দল কোন কোন ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে, জনগণের কাছে তা খোলাসা করতে হবে।
প্রস্তাবিত নামগুলো থেকে একটি নাম চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির কাছে নামের তালিকা পাঠানো হবে। কমিটি ৮-৩ ভোটে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে একজন ব্যক্তির নাম চূড়ান্ত করবে। এই প্রক্রিয়ায় প্রস্তাবিত নামগুলো থেকে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করা না গেলে উচ্চকক্ষ ‘র্যাঙ্কড চয়েস ভোটিং’ (পছন্দের ক্রমানুসারে ভোট) পদ্ধতিতে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করবে।
গত মঙ্গলবার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কীভাবে নিযুক্ত হবেন, সে বিষয়ে একটি সমাধান আসবে। বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পরিবর্তন করতে গণভোট লাগবে।
গত মঙ্গলবার সংবিধান সংশোধন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠিত না হলে অথবা গঠিত হওয়া পর্যন্ত সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সমর্থন প্রয়োজন হবে বলে জানান আলী রীয়াজ। তবে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে দলগুলো কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বলেও জানান তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, কিছু সুনির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ, যেমন প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ ৮, ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ ৫৮ক, ৫৮খ এবং ৫৮ঙ) সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আবার আলোচনা হতে পারে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে। আগামী রবিবার পুনরায় এ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এই ফিরে আসাকে মনে করা হচ্ছে জামায়াতের নতুনভাবে গুছিয়ে তোলার চেষ্টা এবং নতুন রাজনৈতিক জোট গঠনের ইঙ্গিত। সমাবেশটি ছিল জামায়াতের ‘পুনর্জন্ম’—যেখানে তারা একদিকে সাত দফার মাধ্যমে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রূপরেখা দেয়, অন্যদিকে দুর্নীতিবিরোধী রাজনীতির অঙ্গীকার করে নিজেদের ‘আদর্শিক ইসলামি গণদল’ হিসেবে গড়তে চায়।
২০ ঘণ্টা আগেসারাদেশের নেতাকর্মীরা যাতে নির্বিঘ্নে রাজধানীতে আসতে পারেন এ জন্য ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম থেকে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে দলটি। এই ৪ ট্রেন ভাড়া করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ টাকা। এছাড়াও ১০ হাজারের বেশি যাত্রীবাহী বাস বুকিং করা হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
২ দিন আগেসমাবেশে বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতৃবৃন্দ পরস্পর ঐক্য গড়ার গুরুত্ব তুলে ধরবেন। যেসব ইসলামপন্থী দল কখনো জামায়াতের সঙ্গে একছাতার নিচে আসেনি তারাও সমাবেশে আমন্ত্রণ পেয়েছে।
৩ দিন আগে১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার দিবস। এই দিবসকে বিশ্বব্যাপী আইন ও মানবাধিকারের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রশ্ন ওঠে, বাংলাদেশে ন্যায়বিচার কতটা দৃশ্যমান? ওয়ালিদের মতো শিশুহত্যায় বিচারহীনতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা—আমাদের ন্যায়বিচারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ভাবিয়ে তোলে।
৪ দিন আগে