leadT1ad

অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধের ঘটনায় সচিবালয়ের ১০ কর্মচারী বরখাস্ত

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

স্ট্রিম গ্রাফিক

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় সচিবালয়ের ১০ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সচিবালয় ভাতার দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর তাঁকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। পরে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। বরখাস্ত হওয়া কর্মচারীদের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তিনজন এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সাতজন রয়েছেন।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) আলাদা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের বিষয়ে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা জানানো হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত হওয়া তিনজন হলেন—ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বাদিউল কবীর, অফিস সহায়ক কামাল হোসেন ও মোহাম্মদ আলীমুজ্জামান। আদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেহেতু সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের বরখাস্ত হওয়া সাত কর্মচারী হলেন—প্রশাসনিক কর্মকর্তা রোমান গাজী, অফিস সহায়ক আবু বেলাল, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মহসিন আলী, তাইফুল ইসলাম, শাহীন গোলাম রাব্বানী, বিকাশ চন্দ্র রায় ও ইসলামুল হক। সাময়িক বরখাস্তকালীন তাঁরা খোরপোষ ভাতা পাবেন।

এ ঘটনায় সচিবালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মচারীদের বরখাস্ত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত ১০ ডিসেম্বর ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ করে রাখেন সরকারি কর্মচারীরা। পরে পুলিশের সহায়তায় রাত সোয়া ৮টার দিকে তিনি বাসায় ফেরেন। পরদিনও তাঁরা সচিবালয়ে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্যায়ক্রমে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

সচিবালয়ের ভেতরে অর্থ বিভাগের জন্য ১৮ তলা ভবন রয়েছে। এ ভবনের চারতলায় অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়। গত ১০ ডিসেম্বর বেলা দুইটার দিকে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। সেদিন সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি কার্যালয়ে ফেরার পর কর্মচারীরা খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হন।

বেলা আড়াইটার দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত তিন শতাধিক নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয়ে জড়ো হন। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। কর্মচারীরা এ সময় হ্যান্ডমাইকে ভাতার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

পরদিন ১১ ডিসেম্বর সচিবালয়ে বিক্ষোভ করলে সেখান থেকে অন্তত চার কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কর্মচারীদের দাবি, উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও সচিবেরা রাতে যতক্ষণ অফিসে থাকেন, ততক্ষণ তাঁদেরও অফিস করতে হয়। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতনকাঠামোর বাইরে নানা ধরনের ভাতা পেলেও সচিবালয়ের কর্মচারীদের তা দেওয়া হয় না।

আন্দোলনকারীদের একজন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের ক্ষোভ রয়েছে। রেশনের দাবিতেও তাঁরা অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করেছিলেন। তখন তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, রেশন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন; কিন্তু তিনি কথা রাখেননি।

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর ঘোষণা দিলেও তা এখনো কার্যকর করেনি সরকার। নতুন বেতন কমিশনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা এরই মধ্যে কয়েকবার বলেছেন, বেতন কমিশন বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার। এর আগে গত ২২ জুন সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতেও অর্থ বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন কর্মচারীরা।

Ad 300x250

সম্পর্কিত