স্ট্রিম প্রতিবেদক

খালেদা জিয়া সব বন্ধন ছিন্ন করে পাড়ি জমিয়েছেন মহাকালের পথে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে আপসহীন এই নেতার মৃত্যুর খবরে গোটা দেশে শোক নেমে আসে। দলীয় নেতাকর্মী কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রিয় স্বজন হারানোর বেদনায়।
বিএনপি জানিয়েছে, সরকারি উদ্যোগে বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা হবে বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। জানাজার নামাজ পড়াবেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানাজার পর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমহিত করা হবে। এ সময় বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত রাজনীতিবিদরা উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তিরা ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফনকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।
সারাদেশ থেকে জানাজায় অংশ নিতে নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ঢাকায় আসছেন। সবাইকে সৃশৃঙ্খলভাবে জানাজায় অংশ নিতে বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। জানাজায় অংশ নিতে আসাদের কোনো ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করতে বলেছে সরকার। বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার থেকে নামাজে জানাজা সরাসরি সম্প্রচার করবে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর সময় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান, তারেক-জোবাইদার মেয়ে জাইমা রহমান, ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, তাঁর দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাইফা রহমানসহ স্বজনরা।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী, কূটনীতিক, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান গভীর শোক জানিয়েছেন।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ও তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছেন। ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে।
রাজধানীর গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খোলা হয়েছে শোক বই। সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে সই করছেন। খালেদা জিয়াকে নিয়ে নিজের অনুভূতি লিখে ব্যক্ত করছেন।
আগামীকাল বুধবার সাধারণ ছুটিসহ তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। বিএনপি তাদের চেয়ারপারসনের শোকে সাত দিনের শোকসহ নানা কর্মসূচি দিয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিন দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পুরো সংসদ ভবন এলাকায় কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছেন। দলের উচ্চপদস্থ নেতা ছাড়া সাধারণ কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কবর খননের কাজ শুরু হয়েছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়ার মরদেহ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নেওয়ার জন্য নির্ধারিত রুট ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ঘোষিত রুট অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে কুড়িল ফ্লাইওভার অতিক্রম করে নৌ সদর দপ্তরের পাশ দিয়ে গুলশান-২ এলাকার বাসভবন ফিরোজায় নেওয়া হবে।
সেখান থেকে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ ধরে এয়ারপোর্ট রোডে উঠে মহাখালী ফ্লাইওভার পার হয়ে জাহাঙ্গীরগেট ও বিজয় সরণি দিয়ে অগ্রসর হবে। পরে উড়োজাহাজ ক্রসিংয়ে বামে মোড় নিয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের ৬ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করে দক্ষিণ প্লাজায়। সেখানেই হবে খালেদা জিয়ার জানাজা।
প্রায় ৮০ বছর বয়সী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন হৃদরোগ ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম। ডাকনাম ছিল পুতুল। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুঁড়ির নয়াবস্তি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন খালেদা জিয়া।
বাবা ইস্কান্দার মজুমদারের বাড়ি ফেনীর ফুলগাজীতে হলেও তিনি জলপাইগুঁড়িতে বোনের বাসা থেকে পড়ালেখা করেন। বাবা ইস্কান্দর মজুমদার ও মা বেগম তৈয়বা মজুমদারের সন্তানদের মধ্যে তৃতীয় খালেদা জিয়া। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের পরিবারে বেড়ে ওঠা পুতুলই পরে দেশের রাজনীতির অন্যতম দৃঢ়চেতা নেত্রী হিসেবে পরিচিত হন।
১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর খালেদা জিয়ার পরিবার বাংলাদেশের দিনাজপুর শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। সেখানে মিশনারি স্কুলে প্রাথমিকের গণ্ডি পেরানোর পর দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন খালেদা জিয়া।
১৯৬০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিয়ে হয়। পরে স্বামীর কর্মস্থল পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান। স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি গঠন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
স্বামী জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসেবেই জীবনের বড় সময় কাটিয়েছেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শাহাদাত বরণের পরই রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন। এক বছরের মধ্যেই দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন এবং ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সময়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া কারাবন্দিও হন। নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ‘আপসহীন নেত্রী’ হয়ে ওঠা খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের বড় সময় কেটেছে রাজপথের আন্দোলনে। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেল খেটেছেন; তবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি।
১৯৯১ সালে তাঁর নেতৃত্বে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে কখনো হারেননি খালেদা জিয়া। তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালের পর বিরোধীদলীয় নেতার ভূমিকা পালন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় কারাবন্দি থাকা; এই সময়গুলোতে তিনি সক্রিয় রাজনীতির বাইরে থাকলেও দলের সিদ্ধান্তে প্রভাব রাখেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি ও পরবর্তী সময়ে শর্তসাপেক্ষ মুক্তির পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। দীর্ঘদিন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। লিভার সিরোসিসসহ একাধিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ২০২০ সালে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষ মুক্তি পান।
এরপর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর খালেদা জিয়া পুরোপুরি মুক্তি পান। এরপর রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে দণ্ড মওকুফ হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডন যান; সেখানে ছেলে তারেক রহমানের কাছে থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন।

খালেদা জিয়া সব বন্ধন ছিন্ন করে পাড়ি জমিয়েছেন মহাকালের পথে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে আপসহীন এই নেতার মৃত্যুর খবরে গোটা দেশে শোক নেমে আসে। দলীয় নেতাকর্মী কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রিয় স্বজন হারানোর বেদনায়।
বিএনপি জানিয়েছে, সরকারি উদ্যোগে বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা হবে বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। জানাজার নামাজ পড়াবেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানাজার পর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমহিত করা হবে। এ সময় বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত রাজনীতিবিদরা উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তিরা ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফনকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।
সারাদেশ থেকে জানাজায় অংশ নিতে নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ঢাকায় আসছেন। সবাইকে সৃশৃঙ্খলভাবে জানাজায় অংশ নিতে বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। জানাজায় অংশ নিতে আসাদের কোনো ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করতে বলেছে সরকার। বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার থেকে নামাজে জানাজা সরাসরি সম্প্রচার করবে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর সময় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান, তারেক-জোবাইদার মেয়ে জাইমা রহমান, ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, তাঁর দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাইফা রহমানসহ স্বজনরা।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী, কূটনীতিক, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান গভীর শোক জানিয়েছেন।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ও তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছেন। ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে।
রাজধানীর গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খোলা হয়েছে শোক বই। সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে সই করছেন। খালেদা জিয়াকে নিয়ে নিজের অনুভূতি লিখে ব্যক্ত করছেন।
আগামীকাল বুধবার সাধারণ ছুটিসহ তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। বিএনপি তাদের চেয়ারপারসনের শোকে সাত দিনের শোকসহ নানা কর্মসূচি দিয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিন দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পুরো সংসদ ভবন এলাকায় কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছেন। দলের উচ্চপদস্থ নেতা ছাড়া সাধারণ কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কবর খননের কাজ শুরু হয়েছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়ার মরদেহ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নেওয়ার জন্য নির্ধারিত রুট ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ঘোষিত রুট অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে কুড়িল ফ্লাইওভার অতিক্রম করে নৌ সদর দপ্তরের পাশ দিয়ে গুলশান-২ এলাকার বাসভবন ফিরোজায় নেওয়া হবে।
সেখান থেকে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ ধরে এয়ারপোর্ট রোডে উঠে মহাখালী ফ্লাইওভার পার হয়ে জাহাঙ্গীরগেট ও বিজয় সরণি দিয়ে অগ্রসর হবে। পরে উড়োজাহাজ ক্রসিংয়ে বামে মোড় নিয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের ৬ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করে দক্ষিণ প্লাজায়। সেখানেই হবে খালেদা জিয়ার জানাজা।
প্রায় ৮০ বছর বয়সী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন হৃদরোগ ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম। ডাকনাম ছিল পুতুল। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুঁড়ির নয়াবস্তি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন খালেদা জিয়া।
বাবা ইস্কান্দার মজুমদারের বাড়ি ফেনীর ফুলগাজীতে হলেও তিনি জলপাইগুঁড়িতে বোনের বাসা থেকে পড়ালেখা করেন। বাবা ইস্কান্দর মজুমদার ও মা বেগম তৈয়বা মজুমদারের সন্তানদের মধ্যে তৃতীয় খালেদা জিয়া। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের পরিবারে বেড়ে ওঠা পুতুলই পরে দেশের রাজনীতির অন্যতম দৃঢ়চেতা নেত্রী হিসেবে পরিচিত হন।
১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর খালেদা জিয়ার পরিবার বাংলাদেশের দিনাজপুর শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। সেখানে মিশনারি স্কুলে প্রাথমিকের গণ্ডি পেরানোর পর দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন খালেদা জিয়া।
১৯৬০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিয়ে হয়। পরে স্বামীর কর্মস্থল পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান। স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি গঠন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
স্বামী জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসেবেই জীবনের বড় সময় কাটিয়েছেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শাহাদাত বরণের পরই রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন। এক বছরের মধ্যেই দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন এবং ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সময়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া কারাবন্দিও হন। নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ‘আপসহীন নেত্রী’ হয়ে ওঠা খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের বড় সময় কেটেছে রাজপথের আন্দোলনে। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেল খেটেছেন; তবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি।
১৯৯১ সালে তাঁর নেতৃত্বে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে কখনো হারেননি খালেদা জিয়া। তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালের পর বিরোধীদলীয় নেতার ভূমিকা পালন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় কারাবন্দি থাকা; এই সময়গুলোতে তিনি সক্রিয় রাজনীতির বাইরে থাকলেও দলের সিদ্ধান্তে প্রভাব রাখেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি ও পরবর্তী সময়ে শর্তসাপেক্ষ মুক্তির পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। দীর্ঘদিন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। লিভার সিরোসিসসহ একাধিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ২০২০ সালে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষ মুক্তি পান।
এরপর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর খালেদা জিয়া পুরোপুরি মুক্তি পান। এরপর রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে দণ্ড মওকুফ হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডন যান; সেখানে ছেলে তারেক রহমানের কাছে থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডার একটি বাসা থেকে নাজমুল হক নিয়াজ (৩৩) নামের এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে পুরাতন থানা রোডের একটি ফ্ল্যাট থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে এবং তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছেন।
২ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ঢালী ফুড কোর্টে একটি ফুচকার দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চারজন দগ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের পেছনের ওই দোকানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশব্যাপী গভীর শোকের আবহ বিরাজ করছে। তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাঁর জানাজায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে