leadT1ad

বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কাপড় ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
খুলনা

প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১১
খুলনা নগরী। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় সাগর শেখ (৩০) নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রূপসা উপজেলার রূপসা সেতুর পূর্বপাড়ে জাবুসা অটোগ্যাস ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান।

নিহত সাগর গ্রিনবাংলা হাউজ এলাকার বাসিন্দা ফয়েক শেখের ছেলে। পেশায় তিনি কাপড় ব্যবসায়ী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাগর শেখকে তার বাড়ি থেকে কয়েকজন ডেকে নিয়ে আসেন। পরে মাথায় গুলি করে দুর্বৃত্তরা দ্রুত পালিয়ে যায়। তিনি ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তাৎক্ষণিকভাবে বলা সম্ভব নয়। পুলিশ বিষয়টির খোঁজ নিচ্ছে।

নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি নেই, আতঙ্কে মানুষ

খুলনায় কোনোভাবেই উন্নতি হচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। প্রতি রাতেই কোথাও না কোথাও গোলাগুলি, অস্ত্রের মহড়া, প্রতিপক্ষের ওপর হামলা বা সংঘর্ষে ঘটনা ঘটছে। সন্ধ্যা নামলেই ভর করে অজানা আতঙ্ক। দিনের বেলাতেও প্রকাশ্যে খুনের ঘটনা ঘটছে।

পুলিশের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর জামিনে বের হওয়া অপরাধী ও দীর্ঘদিন ‘আত্মগোপনে’ থাকা সন্ত্রাসীরা এলাকায় ফিরে সংগঠিত হয়েছে। তারা নির্বিঘ্নে মাদক বেচাকেনা, আধিপত্য বিস্তার, পেশিশক্তির প্রদর্শন, হামলা-চাঁদাবাজিসহ একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। তাদের হাতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলায় গেল ১৫ মাসে ৬২টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ১৫টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে জেলার রূপসা উপজেলায়।

তবে পুলিশের দাবি, জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তারা বেশিরভাগ ঘটনারই রহস্য উন্মোচন করেছেন।

খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় ৬২টি হত্যার ঘটনা ঘটে।

এরমধ্যে রূপসা থানায় ১৫টি, তেরখাদা থানায় দুটি, দিঘলিয়া থানায় চারটি, ফুলতলা থানায় ১০টি, ডুমুরিয়া থানায় ১১টি, বটিয়াঘাটা থানায় চারটি, দাকোপ থানায় সাতটি, পাইকগাছা থানায় চারটি ও কয়রা থানায় পাঁচটি হত্যার ঘটনা ঘটে।

হত্যাগুলোর মধ্যে গুলি করে পাঁচটি, গুরুতর জখম করে তিনটি, অজ্ঞাত কারণে ৯টি, শ্বাসরোধে দুটি, পরকীয়ার কারণে পাঁচটি, আর্থিক ও ব্যাবসায়িক কারণে পাঁচটি ঘটনা ঘটে। তদান্তাধীন ১৯টি ঘটনার মধ্যে জেলা পুলিশ ১১টি ও নৌ পুলিশ আটটি ঘটনা তদন্ত করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, জেলার ক্রাইমের ক্ষেত্রে ‘হটজোন রূপসা’। শহরতলির এই উপজেলাটিতে আধিপত্য নিয়ে প্রায়ই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নদী ও সড়ক বেষ্টিত উপজেলায় অপরাধ সংঘটনের পর সহজে সরে পড়া সহজ। এছাড়া মাদক কারবারের অন্যতম পথ। ফলে এখানেই বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটছে।

জেলার ফুলতলা, দিঘলিয়া, রূপসা, ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা থানা এলাকায় রয়েছে প্রায় অর্ধশত মাদকের স্পট। এই কারবারিদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। তারা কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এই কারবার পরিচালনা করছে।

খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান জানান, এরই মধ্যে হত্যাসহ বেশিরভাগ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেতে পুলিশ সমর্থ্য হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদক কারবারিদের কোনো ছাড়া দেওয়া হচ্ছে না।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত