leadT1ad

হাদির মৃত্যুতে উত্তাল দেশ, বিক্ষোভ থেকে বিচার দাবি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ। ছবি সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ ও উত্তরার মুগ্ধ চত্বরে বিক্ষোভ করেন জুলাই মঞ্চের কর্মী-সমর্থকরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তরার বিক্ষোভ থেকে ওই এলাকার কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী ঘনিষ্ঠদের প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে। আগুন দেওয়া হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে।

রাতে একদল লোক রাজধানীর কারওয়ান বাজারের প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনে ভাঙচুর চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ওই দুই ভবনে অনেক সংবাদকর্মী আটকা পড়েন।

বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর বিক্ষোভ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীরা হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে আসা শিক্ষার্থীরা তখন আধিপত্যবাদবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে টিএসসির সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’; ‘হাদি ভাই মরল কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’; ‘রুখে দাও জনগণ, ভারতীয় আগ্রাসন’–ইত্যাদি স্লোগান দেন তাঁরা।

ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের বলেন, ‘আজকে আমার কথা বলার মতো অবস্থা নেই। দুই হাজার মানুষের জীবনের পর আজকেও কেন আমাদের তাকে হারাতে হলো? এ ব্যর্থ ইন্টেরিমের কারণে আজকে হাদিকে শহীদ হতে হয়েছে।’ বক্তব্য শেষে সবাইকে শপথ করান তিনি। এবি জুবায়ের শপথবাক্যে বলেন, ‘আমরা সবাই হাদি হব, যুগে যুগে লড়ে যাব।’

টিএসসি থেকে মিছিল করে জাতীয় ছাত্রশক্তি। ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’; ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও, রুখে দাও’–ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশাল মিছিল করেছে ছাত্রদলও।

এদিকে, গভীর রাতে ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে শাহবাগে ছাত্র-জনতার অবস্থানে যোগ দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদ্য সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। তারা জনতার সঙ্গে মিলে স্লোগান দেন, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা জানি- আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি। শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যা করার মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। আমরা শরিফ ওসমান ভাইয়ের রক্তের দাম, এই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রি হতে দেব না।

এ সময় তিনি শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেন। অন্যদিকে জুলাই বিপ্লবের অগ্রসেনানী ও ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর শরীফ ওসমান হাদির খুনিদের ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত ভারতে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে তাঁর মাথায় গুলি করে সন্ত্রাসীরা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের উদ্যোগে তাঁকে গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টা দিকে ওসমান হাদির মৃত্যু হয়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত