খালেদা জিয়ার প্রয়াণ
স্ট্রিম সংবাদদাতা

দোতলা পাকা বাড়ি। ব্যালকনিতে গ্রিল লাগানো। প্রবেশ মুখের সিঁড়ি উঠে গেছে ছাদে। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের আর দশটি বাড়ির মতোই এটি। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘মজুমদার বাড়ি’ খ্যাত। বাড়িটি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চাচাতো ভাইয়ের। তবে অনেকে চেনে একে তাঁর পৈতৃক ভিটা হিসেবে।
এখানেই বেড়ে উঠেছেন খালেদা জিয়ার বাবা ইস্কান্দার মজুমদার। তাঁর স্মৃতি চিহ্ন এখন আর নেই। তারপরও এই বাড়িতে একাধিকবার এসেছেন খালেদা জিয়া। সর্বশেষ ২০০৮ সালেও বাবার বাড়িতে এসে দাদা সালামত আলী মজুমদারের কবর জিয়ারত করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে বাড়িটিতে নেমে এসেছে রাজ্যের নীরবতা। শোকে মুহ্যমান তাঁর পরিবারের সদস্য ও আশপাশের মানুষ।
প্রতিবেশী মনোআরা আক্তার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া যখন বাড়িতে আসতেন, তখন নিরাপত্তা খুবই কঠোর ছিল। দূর থেকে উঁকি মেরে তাঁকে দেখার চেষ্টা করতাম। এরপর তিনি প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজনকে কাছে ডেকে নিয়ে উঠানে বসিয়ে সামনাসামনি কথা বলতেন। এটা দেখে অনেক বড় বড় নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় বড় কর্মকর্তারা তাকিয়ে থাকতেন।’
খালেদা জিয়ার পৈতৃক ভিটার সামনের দক্ষিণ শ্রীপুর জামে মসজিদের সাবেক খতিব ও ইস্কান্দারিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় একবার বাড়িতে আসার পর নিরাপত্তা বেষ্টনী কারণে কেউ কাছে ঘেঁষতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে নিরাপত্তা বেষ্টনীর সদস্যদের সরিয়ে গ্রামের লোকজনকে কাছে ডেকে নিয়ে যান তিনি। এরপর হেঁটে হেঁটে প্রত্যেকজনের কাছে গিয়ে তাঁদের সাথে কথা বলেছেন। এলাকার বিষয় খোঁজখবর নেন। খালেদা জিয়া এলাকার মুরুব্বিদেরকে সালাম দিয়ে কথা বলেছেন, শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন।’
পরিবার ও স্থানীয় লোকজন জানান, বিভিন্ন কাজের সূত্রে খালেদা জিয়া মজুমদার বাড়িতে আসতেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনী ও প্রটোকল থাকায় তাঁর কাছে যাওয়া ছিল একজন প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজনের জন্য স্বপ্নের মতো। কিন্তু খালেদা জিয়া ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।
মজুমদার বাড়িতে রয়েছে খালেদা জিয়ার অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন। ঘরের ভেতরে বসার চেয়ার, বিশ্রাম নেওয়ার ছোট্ট খাট, খাবারের টেবিল— সবকিছুতেই যেন লেগে আছে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর হাতের ছোঁয়া।
খালেদা জিয়ার চাচাতো ভাই শামীম হোসেন মজুমদার বলেন, ‘বাড়িতে এলে তিনি বড়দের যেমন শ্রদ্ধা করতেন, তেমনি ছোটদের অনেক বেশি আদর করতেন। তাঁকে হারিয়ে দেশ জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সে ক্ষতি কখনো পোষাবে না।’

পৈতৃক নিবাস এলাকার জনসাধারণের জন্য খালেদা জিয়া নির্মাণ করেছেন মাদ্রাসা-মসজিদ, স্কুল-কলেজসহ বহু স্থাপনা। তাঁর মৃত্যুতে দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামবাসীসহ ফুলগাজী বাসিন্দাদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, খালেদা জিয়ার পৈতৃক বাড়ির লোকজনকে তাঁর স্মৃতির ধারণ করে বেঁচে থাকতে হবে। মন খুলে এলাকার সমস্যা সমাধানের জন্য বলতে পারবেন না।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে তাঁর পৈতৃক ভিটায় ছুটে গিয়েছিলেন ফুলগাজী যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল ভূইয়া টিপু। সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। টিপু বলেন, ‘আমার মমতাময়ী মা খালেদা জিয়া বন্যার সময় একবার বাড়িতে এসেছিলেন। আমি এসএসএফ, পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে বাড়িতে ঢুকতে পারছিলাম না। বিষয়টি বেগম জিয়া দূর থেকে দেখতে পান। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য দিয়ে আমাকে কাছে ডেকে নিয়ে যান। আমি দীর্ঘ ৪০ মিনিট দাঁড়িয়ে কথা বলেছিলাম। তিনি আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছিলেন, এটি সারা জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকবে।’
খালেদা জিয়ার পৈতৃক ভিটা ফেনীর ফুলগাজীতে হলেও তাঁর জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলায়। ১৯৬০ সালে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮৩ সালে বিএনপির নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। এরপর ১৯৯১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
টানা ৩৭ দিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে মারা যান ‘গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী’ খ্যাত খালেদা জিয়া। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে জানাজা শেষে শহিদ জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

দোতলা পাকা বাড়ি। ব্যালকনিতে গ্রিল লাগানো। প্রবেশ মুখের সিঁড়ি উঠে গেছে ছাদে। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের আর দশটি বাড়ির মতোই এটি। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘মজুমদার বাড়ি’ খ্যাত। বাড়িটি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চাচাতো ভাইয়ের। তবে অনেকে চেনে একে তাঁর পৈতৃক ভিটা হিসেবে।
এখানেই বেড়ে উঠেছেন খালেদা জিয়ার বাবা ইস্কান্দার মজুমদার। তাঁর স্মৃতি চিহ্ন এখন আর নেই। তারপরও এই বাড়িতে একাধিকবার এসেছেন খালেদা জিয়া। সর্বশেষ ২০০৮ সালেও বাবার বাড়িতে এসে দাদা সালামত আলী মজুমদারের কবর জিয়ারত করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে বাড়িটিতে নেমে এসেছে রাজ্যের নীরবতা। শোকে মুহ্যমান তাঁর পরিবারের সদস্য ও আশপাশের মানুষ।
প্রতিবেশী মনোআরা আক্তার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া যখন বাড়িতে আসতেন, তখন নিরাপত্তা খুবই কঠোর ছিল। দূর থেকে উঁকি মেরে তাঁকে দেখার চেষ্টা করতাম। এরপর তিনি প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজনকে কাছে ডেকে নিয়ে উঠানে বসিয়ে সামনাসামনি কথা বলতেন। এটা দেখে অনেক বড় বড় নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় বড় কর্মকর্তারা তাকিয়ে থাকতেন।’
খালেদা জিয়ার পৈতৃক ভিটার সামনের দক্ষিণ শ্রীপুর জামে মসজিদের সাবেক খতিব ও ইস্কান্দারিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় একবার বাড়িতে আসার পর নিরাপত্তা বেষ্টনী কারণে কেউ কাছে ঘেঁষতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে নিরাপত্তা বেষ্টনীর সদস্যদের সরিয়ে গ্রামের লোকজনকে কাছে ডেকে নিয়ে যান তিনি। এরপর হেঁটে হেঁটে প্রত্যেকজনের কাছে গিয়ে তাঁদের সাথে কথা বলেছেন। এলাকার বিষয় খোঁজখবর নেন। খালেদা জিয়া এলাকার মুরুব্বিদেরকে সালাম দিয়ে কথা বলেছেন, শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন।’
পরিবার ও স্থানীয় লোকজন জানান, বিভিন্ন কাজের সূত্রে খালেদা জিয়া মজুমদার বাড়িতে আসতেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনী ও প্রটোকল থাকায় তাঁর কাছে যাওয়া ছিল একজন প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজনের জন্য স্বপ্নের মতো। কিন্তু খালেদা জিয়া ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।
মজুমদার বাড়িতে রয়েছে খালেদা জিয়ার অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন। ঘরের ভেতরে বসার চেয়ার, বিশ্রাম নেওয়ার ছোট্ট খাট, খাবারের টেবিল— সবকিছুতেই যেন লেগে আছে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর হাতের ছোঁয়া।
খালেদা জিয়ার চাচাতো ভাই শামীম হোসেন মজুমদার বলেন, ‘বাড়িতে এলে তিনি বড়দের যেমন শ্রদ্ধা করতেন, তেমনি ছোটদের অনেক বেশি আদর করতেন। তাঁকে হারিয়ে দেশ জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সে ক্ষতি কখনো পোষাবে না।’

পৈতৃক নিবাস এলাকার জনসাধারণের জন্য খালেদা জিয়া নির্মাণ করেছেন মাদ্রাসা-মসজিদ, স্কুল-কলেজসহ বহু স্থাপনা। তাঁর মৃত্যুতে দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামবাসীসহ ফুলগাজী বাসিন্দাদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, খালেদা জিয়ার পৈতৃক বাড়ির লোকজনকে তাঁর স্মৃতির ধারণ করে বেঁচে থাকতে হবে। মন খুলে এলাকার সমস্যা সমাধানের জন্য বলতে পারবেন না।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে তাঁর পৈতৃক ভিটায় ছুটে গিয়েছিলেন ফুলগাজী যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল ভূইয়া টিপু। সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। টিপু বলেন, ‘আমার মমতাময়ী মা খালেদা জিয়া বন্যার সময় একবার বাড়িতে এসেছিলেন। আমি এসএসএফ, পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে বাড়িতে ঢুকতে পারছিলাম না। বিষয়টি বেগম জিয়া দূর থেকে দেখতে পান। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য দিয়ে আমাকে কাছে ডেকে নিয়ে যান। আমি দীর্ঘ ৪০ মিনিট দাঁড়িয়ে কথা বলেছিলাম। তিনি আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছিলেন, এটি সারা জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকবে।’
খালেদা জিয়ার পৈতৃক ভিটা ফেনীর ফুলগাজীতে হলেও তাঁর জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলায়। ১৯৬০ সালে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮৩ সালে বিএনপির নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। এরপর ১৯৯১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
টানা ৩৭ দিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে মারা যান ‘গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী’ খ্যাত খালেদা জিয়া। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে জানাজা শেষে শহিদ জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

পরনে লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি, মাথায় মাফলার মুড়িয়ে মেট্রোরেলের পিলারে হেলান দিয়ে বসে আছেন রিকশা গ্যারেজের শ্রমিক রইচ মিয়া। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজে অংশ নিতে এলেও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ঢুকতে পারেননি।
২২ মিনিট আগে
নতুন বছরে সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
৩৫ মিনিট আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে এবং শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকায় এসেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা।
১ ঘণ্টা আগে
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে স্ট্রোক করে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
১ ঘণ্টা আগে