পৌষের মাঝামাঝিতে এসে ঘন কুয়াশা আর হাড়কাঁপানো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে সারা দেশ। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, কিশোরগঞ্জের নিকলীতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামায় নিকলী ও তৎসংলগ্ন এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে ঘন কুয়াশা মিলে সারা দেশেই শীতের অনুভূতি প্রকট হয়েছে।
আজ রোববার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার (৫ দিন) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, কুয়াশার এই দাপট আরও কয়েক দিন স্থায়ী হতে পারে। বিশেষ করে মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে দেশ, যার প্রভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে সড়ক, নৌ ও আকাশপথের যোগাযোগ।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, নিকলী ছাড়া উত্তরের জেলা সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ১১ দশমিক ০, রাজশাহীতে ১৩ দশমিক ০ এবং চুয়াডাঙ্গায় ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীতে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোনো কোনো এলাকায় এই কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে আসায় উড়োজাহাজ চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে নদী অববাহিকা অঞ্চলে কুয়াশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি।
আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস
আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানার সই করা বুলেটিনে আগামী কয়েক দিনের আবহাওয়ার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকবে।
পরদিন মঙ্গলবার সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। তবে দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার বছরের শেষ দিনে রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকলেও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। ফলে বছরের শেষভাগ তীব্র শীতের মধ্য দিয়েই কাটবে।
নতুন বছরের শুরুতে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আজ সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ। আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিটে এবং সোমবার সূর্যোদয় হবে ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে।
ঘন কুয়াশায় সড়ক ও নৌপথে চলাচলের সময় হেডলাইট জ্বালিয়ে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ। পাশাপাশি হাড়কাঁপানো শীতে ছিন্নমূল মানুষ ও শিশুদের প্রতি বাড়তি নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।