leadT1ad

র‌্যাপিডের সেমিনারে বক্তারা

১২টি বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে পরবর্তী সরকার

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ১৯
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ সামাজিক অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারবিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করে র‌্যাপিড। সংগৃহীত ছবি

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে নানা ধরনের পুঞ্জিভূত সমস্যা বিদ্যমান। বর্তমান সরকারের মেয়াদে সেগুলো সমাধান করা সম্ভব নয়। এগুলো পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে মোকাবিলা করতে হবে। এমন ১২ সমস্যা চিহ্নিত করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড)। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে উদ্বৃত্ত জনশক্তির জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বাড়ানো ও সরকারের ঋণ নিয়ন্ত্রণে রাখা অন্যতম। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রথম বছরেই গ্রহণযোগ্য শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে। ওই সরকারের প্রধান কাজ হবে সংকট মোকাবিলা করা।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ সামাজিক অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারবিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করে র‌্যাপিড। সেখানে এসব বিষয়ে কথা বলেন বক্তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক।

মূল প্রবন্ধে আগামী সরকারের সামনে প্রধান ১২টি চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়। যার মধ্যে রয়েছে, এলডিসি উত্তরণের জন্য সময় বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংক ব্যবস্থার পুনর্গঠন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি। এ ছাড়া আছে বিনিময় হার ধরে রাখতে রিজার্ভ বাড়ানো, রাজস্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানো। অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে ঋণের চাপ সামাল দেওয়া, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো। এ ছাড়া তথ্য-উপাত্তের স্বচ্ছতা আনা ও রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জিং বিষয়ে হয়ে উঠতে পারে।

ড. রাজ্জাক বলেন, গত ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে। গত তিন বছরে হ্রাস পাওয়ার পরিবর্তে উল্টো বেড়ে গেছে। দারিদ্র্য কমাতে হলে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। এ জন্য বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। আর বিনিয়োগ বাড়াতে হলে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব খাতে আগামী সরকারকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে মনোযোগী হতে হবে।

সেমিনারে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, 'উন্নত দেশগুলো জিডিপির পাঁচ শতাংশের সমান স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করতে পারে। কারণ, সেসব দেশ তাদের জিডিপির ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের সমান রাজস্ব আয় করে থাকে। কিন্তু আমাদের মাত্র জিডিপির তুলনায় মাত্র ৬ শতাংশ রাজস্ব আয় দিয়ে কীভাবে স্বাস্থ্যে ৫ শতাংশ ব্যয় করব? আর আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হলে ঋণের বোঝা বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তাই আমরা ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছি।'

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের সম্মান করা হয় না। এখানে ব্যবসা করতে গিয়ে পদে পদে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। এসব কারণে অনেকেই ব্যবসা করতে নিরুৎসাহিত হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, ‘কর্মসংস্থান থাকলে দারিদ্র্য হ্রাস পাবে। সে জন্য বেসরকারি খাতকে কাজ করা সুযোগ দিতে হবে। সেটা করতে হলে বাড়তি নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যক্রম শিথিল করতে হবে। এর পরিবর্তে বেসরকারি খাতে সেলফ রেগুলেশন বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি রপ্তানি বাড়ানোর জন্য পণ্যের বহুমুখীকরণ নিশ্চিত করতে হবে।’ এ ক্ষেত্রে থাউল্যান্ডের এক গ্রাম এক পণ্য নীতি গ্রহণ করা যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মইনুল ইসলাম, ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. আবু ইউসুফ।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত