leadT1ad

সংসদের উচ্চকক্ষে সদস্য নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির সিদ্ধান্ত, সংলাপে বিতর্ক

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৩৩
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, ২০: ২২
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। সংগৃহীত ছবি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে সদস্য নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার সঙ্গে একমত নয় বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল। তবে এ সিদ্ধান্তের পক্ষে এনসিপি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২৩তম দিনে এই ঘোষণা দেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

উচ্চকক্ষ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্যের একপর্যায়ে বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আলোচকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।

১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিনকে উদ্দেশে করে কটাক্ষ করে বলেন, ‘২৩ সালে কোথায় ছিলেন?’—এ বক্তব্যে সভাকক্ষে এক মুহূর্তের জন্য নিস্তব্ধতা নেমে আসে। পরে বিতর্ক মেটাতে ক্ষমা চান এহসানুল হুদা।

কমিশনের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উচ্চকক্ষে ১০০টি আসন থাকবে এবং তা গঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে। অর্থাৎ, যে দল যত বেশি ভোট পাবে, তারা তত বেশি সংখ্যক সদস্য পাঠাতে পারবে উচ্চকক্ষে।

তবে উচ্চকক্ষের ভূমিকা সীমিত থাকবে। এই কক্ষে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে না, তবে অর্থবিল ব্যতীত জাতীয় সংসদের সব বিলই উচ্চকক্ষে পাঠাতে হবে পর্যালোচনার জন্য। বিল অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা থাকলেও তা বাধ্যতামূলক নয়। কোনো বিল এক মাসের বেশি সময় আটকে থাকলে সেটি অনুমোদিত বলে বিবেচিত হবে। প্রত্যাখ্যাত হলে বিলটি সংশোধনের সুপারিশসহ নিম্নকক্ষে ফিরে যাবে, যেখানে নিম্নকক্ষ চাইলে সেই সুপারিশ গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।

আরও বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রার্থী ঘোষণার সময় উচ্চকক্ষের প্রার্থীর নামও চূড়ান্ত করতে হবে এবং প্রার্থী তালিকায় ১০ শতাংশ নারী কোটা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

দলগুলোর আপত্তি

সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশেই অনির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা থাকে না। আমরা সংবিধান সংশোধনের অধিকার উচ্চকক্ষের হাতে দিতে চাই না।’ তিনি জানান, পিআর পদ্ধতি এবং উচ্চকক্ষের সীমিত ক্ষমতা নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর গুরুতর আপত্তি রয়েছে।

আলোচনার মধ্যাহ্ন বিরতির পর সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘এই ভিন্নমত লিখিতভাবে উল্লেখ না করলে বিএনপি চূড়ান্ত প্রস্তাবে স্বাক্ষর করবে না।’

বিএনপির সঙ্গে একমত পোষণ করে লেবার পার্টি, এনডিএম, ১২ দলীয় জোট এবং জাতীয়তাবাদী জোট পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের বিরোধিতা করে।

অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়া

সিপিবি, বাসদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এবং আমজনতার দলও উচ্চকক্ষের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের মতে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক বাস্তবতায় উচ্চকক্ষ অপ্রয়োজনীয় এবং তা কেবলমাত্র প্রশাসনিক জটিলতা বাড়াবে।

নাগরিক ঐক্য তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে জানায়, যেহেতু উচ্চকক্ষে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকছে না, তাই তাদের দৃষ্টিতে এটি একটি অনর্থক কাঠামো হয়ে দাঁড়াবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়ায় কমিশন নিজ উদ্যোগে পিআর-ভিত্তিক উচ্চকক্ষের রূপরেখা উপস্থাপন করেছে। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘উচ্চকক্ষ গঠনের পদ্ধতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হলেও কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। ফলে কমিশনের ওপর দায়িত্ব পড়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার এবং আমরা পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছি।’

আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘এটি কোনো চূড়ান্ত বাস্তবায়নযোগ্য কাঠামো নয়, বরং আলোচনার ভিত্তি। রাজনৈতিক দলগুলো চূড়ান্ত খসড়ায় স্বাক্ষর না করলে এটি কার্যকর হবে না।’

Ad 300x250

গুলিস্তান সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে

মেদভেদেভের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প, রাশিয়ার কাছাকাছি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো গোপন চুক্তি হয়নি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

মাহফুজের আশা ৫ আগস্টের মধ্যেই ঘোষণাপত্র, আসিফ বললেন, আসছে…

চবি ছাত্রী হলে রাত ১০টার আগে না ফিরলে সিট বাতিলের হুমকি

সম্পর্কিত