স্ট্রিম প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিশৃঙ্খলা পরিহার করে যেকোনো মূল্যে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সবাই মিলে এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেই দেশের স্বপ্ন একজন মা দেখেন। অর্থাৎ একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলের জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে (৩০০ ফিট) বিএনপির গণসংবর্ধনায় দেওয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেই দেশের স্বপ্ন একজন মা দেখেন। অর্থাৎ একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশে একজন নারী, একজন পুরুষ, একজন শিশু যেই হোক না কেন নিরাপদে ঘর থেকে বের হলে নিরাপদে ইনশাআল্লাহ ঘরে আবার ফিরে আসতে পারে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে নেতৃত্ব দিয়ে জনগণের প্রত্যাশিত সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। আমাদের যেকোনো মূল্যে এদেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। যেকোনো উসকানির মুখে আমাদের শান্ত থাকতে হবে। আমরা দেশের শান্তি চাই। আমরা দেশের শান্তি চাই। আমরা দেশের শান্তি চাই।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের সময় এসেছে সকলে মিলে দেশ গড়ার। এই দেশে যেমন পাহাড়ের মানুষ আছে, এই দেশে একইভাবে সমতলেরও মানুষ আছে। এই দেশে মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, হিন্দুসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে। আমরা চাই সকলে মিলে এমন একটি দেশ গড়ে তুলব, যেই বাংলাদেশের স্বপ্ন একজন মা দেখেন।’

তারেক রহমান বলেন, ‘এই দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, চার কোটির বেশি তরুণ প্রজন্মের সদস্য, পাঁচ কোটির মতো শিশু, ৪০ লাখের মতো প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছেন। কয়েক কোটি কৃষক-শ্রমিক রয়েছেন। এই মানুষগুলোর একটি প্রত্যাশা রয়েছে এই রাষ্ট্রের কাছে। এই মানুষগুলোর একটি আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ হই, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, তাহলে আমরা এই লাখ-কোটি মানুষের প্রত্যাশাগুলো পূরণ করতে পারি।’
উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান
দীর্ঘ ১৭ বছর পর ফিরে পূর্বাচলে লাখো মানুষের সমাবেশে মঞ্চে দাঁড়িয়ে তারেক রহমান স্মরণ করেন মার্টিন লুথার কিংয়ের অমর বাণী, ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাই-বোনেরা, মার্টিন লুথার কিং– নাম শুনেছেন না আপনারা? নাম শুনেছেন তো আপনারা? মার্টিন লুথার কিং, তাঁর একটি বিখ্যাত ডায়ালগ আছে—আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম। আজ বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আপনাদের সকলের সামনে আমি বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সদস্য হিসেবে আপনাদের সামনে আমি বলতে চাই– আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান; ফর দি পিপল অব মাই কান্ট্রি, ফর মাই কান্ট্রি।’
তিনি বলেন, আজ এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য; যদি সেই প্ল্যান, সেই কার্যক্রম, সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে হয়– এই জনসমুদ্রে যত মানুষ উপস্থিত আছেন, সারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের শক্তি যত মানুষ উপস্থিত আছেন; প্রত্যেকের সহযোগিতা আমার লাগবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আপনারা যদি আমাদের পাশে থাকেন, আপনারা যদি আমাদের সহযোগিতা করেন, আমরা ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’ এ সময় বক্তৃতা শেষ করে এগিয়ে এসে আবার ফিরে যান তারেক রহমান। জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’।
যোগ্যতা অনুযায়ী মানুষ ন্যায্য অধিকার পাবে
বক্তৃতার শুরুতে তারেক রহমান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন। তিনি বলেন, রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে আজ আমি আমার প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পেরেছি। আপনাদের দোয়ায়, আপনাদের মাঝে।
তারেক রহমান বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ১৯৭১ সালে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময় অর্জিত হয়েছিল। ঠিক একইভাবে ১৯৭৫ সালে আবার ৭ নভেম্বর আধিপত্যবাদীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আধিপত্যবাদের হাত থেকে সুরক্ষা করা হয়েছিল। একইভাবে পরে নব্বইয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এদেশের জনগণ, খেটে খাওয়া মানুষ, তাদের গণতন্ত্রের অধিকারকে ছিনিয়ে এনেছিল। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। ১৯৭১ সালে এদেশের মানুষ যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ২০২৪ সালে এদেশের ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষ, কৃষক-শ্রমিক, গৃহবধূ, নারী-পুরুষ, মাদ্রাসার ছাত্রসহ দলমত, শ্রেণি-পেশার সব মানুষ ৫ আগস্ট এই দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিল।

তিনি বলেন, আজ দেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে চায়। তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ চায় তারা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার পাবে।
হাদিকে স্মরণ, দেশ গঠনে নেতৃত্ব দেবে তরুণ প্রজন্ম
বিভিন্ন আধিপত্যবাদী শক্তির গুপ্তচর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ধৈর্যশীল হতে হবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের যে সদস্য আছেন, আপনারাই আগামী দিন দেশকে নেতৃত্ব দেবেন, দেশকে গড়ে তুলবেন। এই দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মের সদস্যদের আজ গ্রহণ করতে হবে, যাতে এদেশকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারি। শক্ত ভিত্তির ওপরে, গণতান্ত্রিক ভিত্তি, শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপরে দেশকে আমরা গড়ে তুলতে পারি।
তিনি বলেন, ’৭১ সালে আমাদের শহীদরা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, এই রকম একটি বাংলাদেশ গঠনের জন্য। বিগত ১৫ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শত শত হাজারো গুম-খুনের শিকার হয়েছে, শুধু রাজনৈতিক দলের সদস্য নয়, নিরীহ মানুষও প্রতিবাদ করতে গিয়ে অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, জীবন দিয়েছে। ২০২৪ সাল মাত্র সেদিনের ঘটনা। কীভাবে আমরা দেখেছি, আমাদের তরুণ প্রজন্মের সদস্যরা কীভাবে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে দেশের এই স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে রক্ষার জন্য।
আততায়ীর গুলিতে নিহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে এই বাংলাদেশের ’২৪ এর আন্দোলনের এক সাহসী, প্রজন্মের এক সাহসী সদস্য ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। ওসমান হাদি শহীদ হয়েছে। ওসমান হাদি চেয়েছিল এই দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক। এই দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক।
তিনি বলেন, ’২৪ এর আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, ওসমান হাদিসহ ’৭১ এ যারা শহীদ হয়েছেন, বিগত স্বৈরাচারের সময় বিভিন্নভাবে খুন-গুমের শিকার হয়েছেন, এই মানুষগুলোর রক্তের ঋণ যদি শোধ করতে হয়, আসুন আমরা আমাদের সেই প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। যেখানে আমরা সবাই মিলে কাজ করব, যেখানে আমরা সবাই মিলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমার সঙ্গে আজকে মঞ্চে বহু জাতীয় নেতৃবৃন্দ বসে আছেন। আসুন আজকে আমরা দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, আল্লাহর রহমত আমরা চাই। যেসব জাতীয় নেতৃবৃন্দ এই মঞ্চে আছেন; মঞ্চের বাইরে যেসব জাতীয় আরও নেতৃবৃন্দ আছেন, আমরা সবাই মিলে এই দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে জনগণের প্রত্যাশিত বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই।
ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব
সংবর্ধনায় তারেক রহমান বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ পরিচালনার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আজ আসুন আমরা সকলে মিলে প্রতিজ্ঞা করি, ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যারা আসবে, আমরা সকলে নবী করীমের (সা.) ন্যায়পরায়ণতা, সেই ন্যায়পরায়ণতার আলোকে আমরা দেশ পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আসুন, আমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করি, আমরা যেন হে রাব্বুল আলামীন, হে একমাত্র মালিক, হে একমাত্র পরওয়ারদিগার, হে একমাত্র রহমত দানকারী, হে একমাত্র সাহায্যকারী, আজ আপনি যদি আমাদের রহমত দেন, তাহলে আমরা এই দেশের মানুষ কঠোর পরিশ্রম করার মাধ্যমে আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে পারব। আজ যদি আল্লাহর রহমত এই দেশ এবং এই দেশের মানুষের পক্ষে থাকে, আল্লাহর সাহায্য, আল্লাহর দয়া এই দেশের মানুষের উপরে থাকে ইনশাআল্লাহ, আমরা আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’
সবাই মিলে কাজ করব, গড়ব বাংলাদেশ
বক্তৃতায় তারেক রহমান সবাই মিলে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতিজ্ঞা করান। তিনি বলেন, ‘আসুন, প্রিয় ভাই-বোনেরা সবাই মিলে আজ আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। সবাই মিলে করব কাজ, সবাই মিলে করব কাজ, গড়ব মোদের বাংলাদেশ।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজ আপনারা জানেন। এখান থেকে আমি আমার মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে যাব। একটি মানুষ, যে মানুষটি এই দেশের মাটি, এই দেশের মানুষকে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবেসেছেন। তাঁর সঙ্গে কী হয়েছে আপনারা প্রত্যেকটি মানুষ সে সম্পর্কে অবগত। সন্তান হিসাবে আপনাদের কাছে আমি চাইব, আজ আল্লাহর দরবারে আপনারা দোয়া করবেন, যাতে আল্লাহ উনাকে পরিপূর্ণ সুস্থ করে দেন।
তিনি বলেন, সন্তান হিসেবে আমার মন আমার মায়ের বিছানার পাশে পড়ে আছে সেই হাসপাতালের ঘরে। কিন্তু আপনারা এই মানুষগুলোকে যাদের জন্য দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জীবন উৎসর্গ করেছেন, নিজের জীবন, সেই মানুষগুলোকে আমি কোনোভাবেই ফেলে যেতে পারি না। সেজন্যই আজ হাসপাতালে যাবার আগে আপনাদের প্রতিসহ টেলিভিশনগুলোর মাধ্যমে যারা সারাদেশে আমাকে দেখছেন, আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আমি এখানে দাঁড়িয়েছি।

তারেক রহমান যেকোনো মূল্যে দেশে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার আহ্বান জানিয়ে, বিশৃঙ্খলাকে পরিহার ও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। তিনি বলেন, আজ আমাকে এভাবে বরণ করে নেওয়ার জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
তারেক রহমান ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনে পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন। এরপর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান। দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমান আজ দেশের মাটিতে পা রাখেন।
বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি-২০২) ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ইমিগ্রেশন শেষে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। পরে তারেক রহমান সেখানে উপস্থিত বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলিঙ্গন ও কুশল বিনিময় করেন।
বিমানবন্দরে ফুলের মালা দিয়ে তারেক রহমানকে বরণ করে নেন তাঁর শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে খালি জায়গায় খালি পায়ে মাটি স্পর্শ করে একমুঠো মাটি হাতে নেন তারেক রহমান। এরপর ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ খচিত লাল-সবুজের রঙের বাসে চড়ে নেতাদের সঙ্গে জনস্রোত ঠেলে তিন ঘণ্টার বেশি সময় পরে পূর্বাচলের সংবর্ধনা মঞ্চে আসেন। সেখানে তারেক রহমান ১৬ মিনিট বক্তৃতা করেন।

পুরো রাস্তায় তারেক রহমান বাসের সামনে থেকে নেতাকর্মীর উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। বাঁধ ভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। তারা স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করে রাখে রাজপথ।
এর আগে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় তারেক রহমান স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইটে বাংলাদেশের উদ্দেশে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে ফ্লাইটটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্নঅ্যারাউন্ডের পর তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিশৃঙ্খলা পরিহার করে যেকোনো মূল্যে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সবাই মিলে এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেই দেশের স্বপ্ন একজন মা দেখেন। অর্থাৎ একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলের জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে (৩০০ ফিট) বিএনপির গণসংবর্ধনায় দেওয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেই দেশের স্বপ্ন একজন মা দেখেন। অর্থাৎ একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশে একজন নারী, একজন পুরুষ, একজন শিশু যেই হোক না কেন নিরাপদে ঘর থেকে বের হলে নিরাপদে ইনশাআল্লাহ ঘরে আবার ফিরে আসতে পারে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে নেতৃত্ব দিয়ে জনগণের প্রত্যাশিত সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। আমাদের যেকোনো মূল্যে এদেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। যেকোনো উসকানির মুখে আমাদের শান্ত থাকতে হবে। আমরা দেশের শান্তি চাই। আমরা দেশের শান্তি চাই। আমরা দেশের শান্তি চাই।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের সময় এসেছে সকলে মিলে দেশ গড়ার। এই দেশে যেমন পাহাড়ের মানুষ আছে, এই দেশে একইভাবে সমতলেরও মানুষ আছে। এই দেশে মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, হিন্দুসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে। আমরা চাই সকলে মিলে এমন একটি দেশ গড়ে তুলব, যেই বাংলাদেশের স্বপ্ন একজন মা দেখেন।’

তারেক রহমান বলেন, ‘এই দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, চার কোটির বেশি তরুণ প্রজন্মের সদস্য, পাঁচ কোটির মতো শিশু, ৪০ লাখের মতো প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছেন। কয়েক কোটি কৃষক-শ্রমিক রয়েছেন। এই মানুষগুলোর একটি প্রত্যাশা রয়েছে এই রাষ্ট্রের কাছে। এই মানুষগুলোর একটি আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ হই, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, তাহলে আমরা এই লাখ-কোটি মানুষের প্রত্যাশাগুলো পূরণ করতে পারি।’
উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান
দীর্ঘ ১৭ বছর পর ফিরে পূর্বাচলে লাখো মানুষের সমাবেশে মঞ্চে দাঁড়িয়ে তারেক রহমান স্মরণ করেন মার্টিন লুথার কিংয়ের অমর বাণী, ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাই-বোনেরা, মার্টিন লুথার কিং– নাম শুনেছেন না আপনারা? নাম শুনেছেন তো আপনারা? মার্টিন লুথার কিং, তাঁর একটি বিখ্যাত ডায়ালগ আছে—আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম। আজ বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আপনাদের সকলের সামনে আমি বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সদস্য হিসেবে আপনাদের সামনে আমি বলতে চাই– আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান; ফর দি পিপল অব মাই কান্ট্রি, ফর মাই কান্ট্রি।’
তিনি বলেন, আজ এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য; যদি সেই প্ল্যান, সেই কার্যক্রম, সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে হয়– এই জনসমুদ্রে যত মানুষ উপস্থিত আছেন, সারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের শক্তি যত মানুষ উপস্থিত আছেন; প্রত্যেকের সহযোগিতা আমার লাগবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আপনারা যদি আমাদের পাশে থাকেন, আপনারা যদি আমাদের সহযোগিতা করেন, আমরা ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’ এ সময় বক্তৃতা শেষ করে এগিয়ে এসে আবার ফিরে যান তারেক রহমান। জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’।
যোগ্যতা অনুযায়ী মানুষ ন্যায্য অধিকার পাবে
বক্তৃতার শুরুতে তারেক রহমান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন। তিনি বলেন, রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে আজ আমি আমার প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পেরেছি। আপনাদের দোয়ায়, আপনাদের মাঝে।
তারেক রহমান বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ১৯৭১ সালে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময় অর্জিত হয়েছিল। ঠিক একইভাবে ১৯৭৫ সালে আবার ৭ নভেম্বর আধিপত্যবাদীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আধিপত্যবাদের হাত থেকে সুরক্ষা করা হয়েছিল। একইভাবে পরে নব্বইয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এদেশের জনগণ, খেটে খাওয়া মানুষ, তাদের গণতন্ত্রের অধিকারকে ছিনিয়ে এনেছিল। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। ১৯৭১ সালে এদেশের মানুষ যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ২০২৪ সালে এদেশের ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষ, কৃষক-শ্রমিক, গৃহবধূ, নারী-পুরুষ, মাদ্রাসার ছাত্রসহ দলমত, শ্রেণি-পেশার সব মানুষ ৫ আগস্ট এই দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিল।

তিনি বলেন, আজ দেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে চায়। তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ চায় তারা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার পাবে।
হাদিকে স্মরণ, দেশ গঠনে নেতৃত্ব দেবে তরুণ প্রজন্ম
বিভিন্ন আধিপত্যবাদী শক্তির গুপ্তচর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ধৈর্যশীল হতে হবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের যে সদস্য আছেন, আপনারাই আগামী দিন দেশকে নেতৃত্ব দেবেন, দেশকে গড়ে তুলবেন। এই দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মের সদস্যদের আজ গ্রহণ করতে হবে, যাতে এদেশকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারি। শক্ত ভিত্তির ওপরে, গণতান্ত্রিক ভিত্তি, শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপরে দেশকে আমরা গড়ে তুলতে পারি।
তিনি বলেন, ’৭১ সালে আমাদের শহীদরা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, এই রকম একটি বাংলাদেশ গঠনের জন্য। বিগত ১৫ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শত শত হাজারো গুম-খুনের শিকার হয়েছে, শুধু রাজনৈতিক দলের সদস্য নয়, নিরীহ মানুষও প্রতিবাদ করতে গিয়ে অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, জীবন দিয়েছে। ২০২৪ সাল মাত্র সেদিনের ঘটনা। কীভাবে আমরা দেখেছি, আমাদের তরুণ প্রজন্মের সদস্যরা কীভাবে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে দেশের এই স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে রক্ষার জন্য।
আততায়ীর গুলিতে নিহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে এই বাংলাদেশের ’২৪ এর আন্দোলনের এক সাহসী, প্রজন্মের এক সাহসী সদস্য ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। ওসমান হাদি শহীদ হয়েছে। ওসমান হাদি চেয়েছিল এই দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক। এই দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক।
তিনি বলেন, ’২৪ এর আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, ওসমান হাদিসহ ’৭১ এ যারা শহীদ হয়েছেন, বিগত স্বৈরাচারের সময় বিভিন্নভাবে খুন-গুমের শিকার হয়েছেন, এই মানুষগুলোর রক্তের ঋণ যদি শোধ করতে হয়, আসুন আমরা আমাদের সেই প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। যেখানে আমরা সবাই মিলে কাজ করব, যেখানে আমরা সবাই মিলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমার সঙ্গে আজকে মঞ্চে বহু জাতীয় নেতৃবৃন্দ বসে আছেন। আসুন আজকে আমরা দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, আল্লাহর রহমত আমরা চাই। যেসব জাতীয় নেতৃবৃন্দ এই মঞ্চে আছেন; মঞ্চের বাইরে যেসব জাতীয় আরও নেতৃবৃন্দ আছেন, আমরা সবাই মিলে এই দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে জনগণের প্রত্যাশিত বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই।
ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব
সংবর্ধনায় তারেক রহমান বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ পরিচালনার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আজ আসুন আমরা সকলে মিলে প্রতিজ্ঞা করি, ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যারা আসবে, আমরা সকলে নবী করীমের (সা.) ন্যায়পরায়ণতা, সেই ন্যায়পরায়ণতার আলোকে আমরা দেশ পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আসুন, আমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করি, আমরা যেন হে রাব্বুল আলামীন, হে একমাত্র মালিক, হে একমাত্র পরওয়ারদিগার, হে একমাত্র রহমত দানকারী, হে একমাত্র সাহায্যকারী, আজ আপনি যদি আমাদের রহমত দেন, তাহলে আমরা এই দেশের মানুষ কঠোর পরিশ্রম করার মাধ্যমে আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে পারব। আজ যদি আল্লাহর রহমত এই দেশ এবং এই দেশের মানুষের পক্ষে থাকে, আল্লাহর সাহায্য, আল্লাহর দয়া এই দেশের মানুষের উপরে থাকে ইনশাআল্লাহ, আমরা আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’
সবাই মিলে কাজ করব, গড়ব বাংলাদেশ
বক্তৃতায় তারেক রহমান সবাই মিলে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতিজ্ঞা করান। তিনি বলেন, ‘আসুন, প্রিয় ভাই-বোনেরা সবাই মিলে আজ আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। সবাই মিলে করব কাজ, সবাই মিলে করব কাজ, গড়ব মোদের বাংলাদেশ।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজ আপনারা জানেন। এখান থেকে আমি আমার মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে যাব। একটি মানুষ, যে মানুষটি এই দেশের মাটি, এই দেশের মানুষকে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবেসেছেন। তাঁর সঙ্গে কী হয়েছে আপনারা প্রত্যেকটি মানুষ সে সম্পর্কে অবগত। সন্তান হিসাবে আপনাদের কাছে আমি চাইব, আজ আল্লাহর দরবারে আপনারা দোয়া করবেন, যাতে আল্লাহ উনাকে পরিপূর্ণ সুস্থ করে দেন।
তিনি বলেন, সন্তান হিসেবে আমার মন আমার মায়ের বিছানার পাশে পড়ে আছে সেই হাসপাতালের ঘরে। কিন্তু আপনারা এই মানুষগুলোকে যাদের জন্য দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জীবন উৎসর্গ করেছেন, নিজের জীবন, সেই মানুষগুলোকে আমি কোনোভাবেই ফেলে যেতে পারি না। সেজন্যই আজ হাসপাতালে যাবার আগে আপনাদের প্রতিসহ টেলিভিশনগুলোর মাধ্যমে যারা সারাদেশে আমাকে দেখছেন, আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আমি এখানে দাঁড়িয়েছি।

তারেক রহমান যেকোনো মূল্যে দেশে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার আহ্বান জানিয়ে, বিশৃঙ্খলাকে পরিহার ও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। তিনি বলেন, আজ আমাকে এভাবে বরণ করে নেওয়ার জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
তারেক রহমান ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনে পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন। এরপর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান। দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমান আজ দেশের মাটিতে পা রাখেন।
বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি-২০২) ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ইমিগ্রেশন শেষে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। পরে তারেক রহমান সেখানে উপস্থিত বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলিঙ্গন ও কুশল বিনিময় করেন।
বিমানবন্দরে ফুলের মালা দিয়ে তারেক রহমানকে বরণ করে নেন তাঁর শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে খালি জায়গায় খালি পায়ে মাটি স্পর্শ করে একমুঠো মাটি হাতে নেন তারেক রহমান। এরপর ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ খচিত লাল-সবুজের রঙের বাসে চড়ে নেতাদের সঙ্গে জনস্রোত ঠেলে তিন ঘণ্টার বেশি সময় পরে পূর্বাচলের সংবর্ধনা মঞ্চে আসেন। সেখানে তারেক রহমান ১৬ মিনিট বক্তৃতা করেন।

পুরো রাস্তায় তারেক রহমান বাসের সামনে থেকে নেতাকর্মীর উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। বাঁধ ভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। তারা স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করে রাখে রাজপথ।
এর আগে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় তারেক রহমান স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইটে বাংলাদেশের উদ্দেশে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে ফ্লাইটটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্নঅ্যারাউন্ডের পর তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে অভ্যর্থনা জানাতে আসা দেশবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে তিনি কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনী ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
৩ মিনিট আগে
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বেরিয়েই খোলা মাটি দেখেই এগিয়ে গেলেন। জুতা খুলে খালি পায়ে কয়েক কদম হাঁটলেন। তুলে নিলেন দেশের মাটি মুঠো ভরে। মুঠোর ফাঁক গলে ঝরে পড়ল কিছু মাটি।
৩ ঘণ্টা আগে
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানান, এনসিপি ছাড়া আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলাপ করছে জামায়াত। এসব আলোচনা শেষের পথে রয়েছে। কারণ, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বেশি সময় বাকি নেই।
৪ ঘণ্টা আগে
১৭ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামীকাল শুক্রবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই সফরকে কেন্দ্র করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে