আজ বলিউডের ‘ভাইজান’ সালমান খানের ৬০তম জন্মদিন। তিন দশকের বেশি সময় ধরে পর্দায় রোমান্স আর অ্যাকশনের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করে চলেছেন এই তারকা।
ফাবিহা বিনতে হক

বলিউডের ইতিহাসে ‘স্টার’ বা তারকা অনেক এসেছেন। দিলীপ কুমার থেকে অমিতাভ বচ্চন, কিংবা সমসাময়িক শাহরুখ খান, আমির খান; প্রত্যেকেই তাঁদের অভিনয় দক্ষতা, ফ্যানবেস ও বক্স অফিস সাফল্যে পেয়েছেন ‘সুপারস্টার’ তকমা। কিন্তু সালমান খানের বিষয়টি সবার থেকে আলাদা। তিনি ভক্তদের কাছে শুধু সুপারস্টার নন, তিনি তাঁদের ‘ভাইজান’।
একসময় যাকে মনে করা হতো ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে ‘বখাটে’ ও ‘বিপজ্জনক’ ছেলে, সেই সালমান খানই আজ ভারতের অন্যতম আলোচিত-সমালোচিত তারকা।
সালমান খানের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর। তাঁর পুরো নাম আব্দুল রশিদ সেলিম সালমান খান। বাবা সেলিম খান ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার, যিনি ‘শোলে’ বা ‘দিওয়ার’-এর মতো কালজয়ী সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখেছেন।
বাবার পরিচিতির কারণে বলিউডে পা রাখতে সালমানের বেগ পেতে হয়নি। তবে মজার ব্যাপার হলো, সালমান নায়ক হতে চাননি, তিনি হতে চেয়েছিলেন পরিচালক। কিন্তু তাঁর সুঠাম দেহ আর চেহারার কারণে খানিকটা অনিচ্ছাতেই ক্যামেরার সামনে চলে আসেন। ১৯৮৮ সালে ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ সিনেমায় একটি ছোট চরিত্রে তাঁর অভিষেক হয়।
নায়ক হিসেবে সালমানের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। সুরজ বরজাতিয়ার ‘ম্যানে পিয়ার কিয়া’ সিনেমাটি রাতারাতি সালমান খানকে স্টার বানিয়ে দেয়। ছবিতে তাঁর নাম ছিল ‘প্রেম’। এরপর নব্বইয়ের দশকজুড়ে ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’, ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ বা ‘জুড়ওয়া’-র মতো সিনেমায় তিনি হয়ে ওঠেন আদর্শ প্রেমিক বা বাবা-মায়ের বাধ্য সন্তান। সে সময় তাঁর ভক্তদের কাছে সালমান খানের ইমেজ ছিল ‘চকোলেট বয়’ হিরোর।
মিষ্টি লাজুক হাসি, আদর্শ সন্তান কিংবা মহান প্রেমিক, এসবই ছিল সালমানের ট্রেডমার্ক।
২০০০ সালের শুরুর দিকে সালমান খানের ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত জীবন—দুটোই অন্ধকারে তলিয়ে যেতে থাকে। তার ‘গুড বয়’ ইমেজের বিপরীতে বেরিয়ে আসে এক ‘ব্যাড বয়’ সত্তা। বলা যায়, সালমানের জীবনের এই অধ্যায়টিই তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে অন্ধকার সময়।
১৯৯৮ সালে রাজস্থানে শুটিং চলাকালীন সময় বিরল প্রজাতির কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের দায়ে অভিযুক্ত হন সালমান খান। এই ঘটনায় তাঁকে কারাবরণও করতে হয়, যদিও পরে দ্রুতই জামিনে মুক্তি পান। আর ২০০৪ সালে ‘হিট এন্ড রান কেস’ ছিল সালমান খানের জীবনের সবচেয়ে বড় আইনি জটিলতা যা তাঁর ক্যারিয়ারকে একদম খাদের কিনারায় ঠেলে দেয়। গাড়ি চালানোর সময় মুম্বাইয়ের ফুটপাতে ঘুমন্ত মানুষের ওপর তাঁর গাড়ি উঠে যায়, এতে একজন নিহত এবং চারজন আহত হন। অভিযোগ ওঠে, সালমান মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। যদিও দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর প্রমাণের অভাবে খালাস পান তিনি, কিন্তু এই ঘটনা তার জনপ্রিয়তায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
এছাড়া নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। কিন্তু ২০০২ সালে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। ঐশ্বরিয়া তখন অন্যতম হার্টথ্রব নায়িকা। স্বয়ং ঐশ্বরিয়াই প্রকাশ্যে সালমানের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। সালমান সে সময় শুটিং সেটে গিয়ে ঝামেলা করেছেন, ঐশ্বরিয়ার বাড়ির সামনে মাতলামি করেছেন, এমন খবরে পত্রিকার কাগজ ভরা থাকত। পরবর্তী সময়ে বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব ও তাঁর বিরুদ্ধে ডাকা সাংবাদিক সম্মেলন সালমানকে রীতিমতো একঘরে করে দেয়।
ব্যক্তিগত সমস্যায় জর্জরিত সালমান খানের দিক থেকে ভক্তরাও তাই মুখ ফিরিয়ে নেয়। পরপর ফ্লপ সিনেমা ও ব্যক্তিগত কেলেঙ্কারির ভারে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, সালমান খানের ক্যারিয়ার এখানেই শেষ। এছাড়া তার বদমেজাজি আচরণের কারণে প্রযোজকরাও তাঁকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।
পতনের ঠিক শেষ সীমানায় দাঁড়িয়ে সালমান খান নিজেকে আবিষ্কার করলেন নতুন করে। দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৯ সালে 'ওয়ান্টেড’ সিনেমা দিয়ে আবারও রূপালি পর্দায় আসেন ‘ভাইজান’। এই সিনেমা তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। রোমান্টিক হিরোর খোলস ভেঙে তিনি আবির্ভূত হন অ্যাকশন হিরো হিসেবে। এ যেন আসল সালমান খানেরই বাস্তবরূপ।
এরপর ২০১০ সালে ‘দাবাং’ সিনেমায় ইনস্পেক্টর চুলবুল পান্ডের চরিত্রটি তাঁকে ‘ভাইজান’-এর আসনে স্থায়ীভাবে বসিয়ে দেয়। এই নতুন সালমান খান আর সেই লাজুক ‘প্রেমিক’ নন। তিনি এখন নিয়ম ভাঙেন, গুন্ডাদের শায়েস্তা করেন, কিন্তু তার মনটা সোনায় গড়া। মূলত বাস্তবের বেপরোয়া সালমান খানকে পর্দায় পেয়ে তাঁর জীবনের প্রতিও মানুষের একধরনের মমতা তৈরি হতে থাকে। কারণ প্রত্যেকের জীবনেই উত্থান-পতন থাকে। আর এখান থেকেই সালমান খানকে বেশ কাছের ভাবতে শুরু করে দর্শকেরা। সালমান খান সুপারস্টার বা মেগাস্টার নন, হয়ে যান সবার প্রিয় ‘ভাইজান’।
সালমান খান কেন ফেনোমেনন, তা বুঝতে হলে তাঁর ভক্তদের দিকে তাকাতে হবে। সালমান হলেন খেটে খাওয়া মানুষের নায়ক। রিকশাচালক থেকে শুরু করে মফস্বলের কোনো যুবক; সবাই-ই তাঁর ভক্ত। পর্দায় সালমান যখন ভিলেনকে পেটান, তখন দর্শক ভাবে বাস্তব জীবনেও তিনি অশুভ শক্তির বিনাশ করছেন। যদিও এই ইমেজ তৈরিতে তার চ্যারিটি সংস্থা ‘বিইং হিউম্যান’-এর অবদান সবচেয়ে বেশি। তিনি তাঁর উপার্জনের বিশাল অংশ দু:স্থ শিশুদের চিকিৎসা ও শিক্ষায় ব্যয় করেন। এতে মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, সালমান রাগী হতে পারেন, ভুল করতে পারেন, কিন্তু মানুষ হিসেবে তিনি অত্যন্ত দয়ালু। এই ‘রবিনহুড’ ইমেজ তাঁকে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে পাকাপোক্ত স্থান করে দিয়েছে।
সালমান খানের সিনেমা মানেই লজিক বা যুক্তির ঊর্ধ্বে। গল্পের মাথামুণ্ডু না থাকলেও তাঁর সিনেমা ১০০ কোটির ব্যবসা করতে পারে। কারণ দর্শকরা সেখানে গল্প দেখতে যায় না, তাঁরা যায় প্রিয় ‘ভাই’কে দেখতে। পর্দায় তাঁর নীল ব্রেসলেট পরা হাত, কায়দা করে শার্ট খোলা বা ভিলেনকে পেটানো আর সেই বিশেষ স্টাইলের হাঁটা; এটুকুই দর্শকদের পয়সা উসুল করে দেয়। সমালোচকরা যতই নেতিবাচক রিভিউ দিক না কেন, তাঁর ভক্তদের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়ে না।
বলিউডে সালমান খানের অবস্থান অনেকটা বটগাছের মতো; তিনি যার মাথায় হাত রাখেন, তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায়। আবার যার ওপর থেকে হাত সরিয়ে নেন, তাঁর টিকে থাকা কঠিন হয়ে যায়। ক্যাটরিনা কাইফ, সোনাক্ষী সিনহা, অর্জুন কাপুর থেকে শুরু করে হাল আমলের শেহনাজ গিল–সবার ক্যারিয়ারেই সালমানের প্রত্যক্ষ অবদান আছে। তিনি বন্ধুদের বিপদে সবার আগে ঢাল হয়ে দাঁড়ান।
তবে এই মুদ্রার উল্টো পিঠও আছে। অভিযোগ আছে, তাঁর বিরাগভাজন হয়ে অনেকের সাজানো ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে গেছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ বিবেক ওবেরয়। ঐশ্বরিয়া রাইকে কেন্দ্র করে সালমানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে তাঁর প্রমিজিং ক্যারিয়ার অঙ্কুরেই বিনাশ হয়ে যায়।
ভালো এবং মন্দের এই অদ্ভুত মিশ্রণই তাকে ‘স্টার’ থেকে ‘ফেনোমেনন’-এ পরিণত করেছে। বলিউডে হয়তো অনেক ভালো অভিনেতা আসবেন, কিন্তু সালমান খানের মতো এমন বর্ণিল আর বিতর্কিত ‘ভাইজান’ হয়তো আর কেউ আসবে না।

বলিউডের ইতিহাসে ‘স্টার’ বা তারকা অনেক এসেছেন। দিলীপ কুমার থেকে অমিতাভ বচ্চন, কিংবা সমসাময়িক শাহরুখ খান, আমির খান; প্রত্যেকেই তাঁদের অভিনয় দক্ষতা, ফ্যানবেস ও বক্স অফিস সাফল্যে পেয়েছেন ‘সুপারস্টার’ তকমা। কিন্তু সালমান খানের বিষয়টি সবার থেকে আলাদা। তিনি ভক্তদের কাছে শুধু সুপারস্টার নন, তিনি তাঁদের ‘ভাইজান’।
একসময় যাকে মনে করা হতো ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে ‘বখাটে’ ও ‘বিপজ্জনক’ ছেলে, সেই সালমান খানই আজ ভারতের অন্যতম আলোচিত-সমালোচিত তারকা।
সালমান খানের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর। তাঁর পুরো নাম আব্দুল রশিদ সেলিম সালমান খান। বাবা সেলিম খান ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার, যিনি ‘শোলে’ বা ‘দিওয়ার’-এর মতো কালজয়ী সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখেছেন।
বাবার পরিচিতির কারণে বলিউডে পা রাখতে সালমানের বেগ পেতে হয়নি। তবে মজার ব্যাপার হলো, সালমান নায়ক হতে চাননি, তিনি হতে চেয়েছিলেন পরিচালক। কিন্তু তাঁর সুঠাম দেহ আর চেহারার কারণে খানিকটা অনিচ্ছাতেই ক্যামেরার সামনে চলে আসেন। ১৯৮৮ সালে ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ সিনেমায় একটি ছোট চরিত্রে তাঁর অভিষেক হয়।
নায়ক হিসেবে সালমানের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। সুরজ বরজাতিয়ার ‘ম্যানে পিয়ার কিয়া’ সিনেমাটি রাতারাতি সালমান খানকে স্টার বানিয়ে দেয়। ছবিতে তাঁর নাম ছিল ‘প্রেম’। এরপর নব্বইয়ের দশকজুড়ে ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’, ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ বা ‘জুড়ওয়া’-র মতো সিনেমায় তিনি হয়ে ওঠেন আদর্শ প্রেমিক বা বাবা-মায়ের বাধ্য সন্তান। সে সময় তাঁর ভক্তদের কাছে সালমান খানের ইমেজ ছিল ‘চকোলেট বয়’ হিরোর।
মিষ্টি লাজুক হাসি, আদর্শ সন্তান কিংবা মহান প্রেমিক, এসবই ছিল সালমানের ট্রেডমার্ক।
২০০০ সালের শুরুর দিকে সালমান খানের ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত জীবন—দুটোই অন্ধকারে তলিয়ে যেতে থাকে। তার ‘গুড বয়’ ইমেজের বিপরীতে বেরিয়ে আসে এক ‘ব্যাড বয়’ সত্তা। বলা যায়, সালমানের জীবনের এই অধ্যায়টিই তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে অন্ধকার সময়।
১৯৯৮ সালে রাজস্থানে শুটিং চলাকালীন সময় বিরল প্রজাতির কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের দায়ে অভিযুক্ত হন সালমান খান। এই ঘটনায় তাঁকে কারাবরণও করতে হয়, যদিও পরে দ্রুতই জামিনে মুক্তি পান। আর ২০০৪ সালে ‘হিট এন্ড রান কেস’ ছিল সালমান খানের জীবনের সবচেয়ে বড় আইনি জটিলতা যা তাঁর ক্যারিয়ারকে একদম খাদের কিনারায় ঠেলে দেয়। গাড়ি চালানোর সময় মুম্বাইয়ের ফুটপাতে ঘুমন্ত মানুষের ওপর তাঁর গাড়ি উঠে যায়, এতে একজন নিহত এবং চারজন আহত হন। অভিযোগ ওঠে, সালমান মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। যদিও দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর প্রমাণের অভাবে খালাস পান তিনি, কিন্তু এই ঘটনা তার জনপ্রিয়তায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
এছাড়া নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। কিন্তু ২০০২ সালে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। ঐশ্বরিয়া তখন অন্যতম হার্টথ্রব নায়িকা। স্বয়ং ঐশ্বরিয়াই প্রকাশ্যে সালমানের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। সালমান সে সময় শুটিং সেটে গিয়ে ঝামেলা করেছেন, ঐশ্বরিয়ার বাড়ির সামনে মাতলামি করেছেন, এমন খবরে পত্রিকার কাগজ ভরা থাকত। পরবর্তী সময়ে বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব ও তাঁর বিরুদ্ধে ডাকা সাংবাদিক সম্মেলন সালমানকে রীতিমতো একঘরে করে দেয়।
ব্যক্তিগত সমস্যায় জর্জরিত সালমান খানের দিক থেকে ভক্তরাও তাই মুখ ফিরিয়ে নেয়। পরপর ফ্লপ সিনেমা ও ব্যক্তিগত কেলেঙ্কারির ভারে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, সালমান খানের ক্যারিয়ার এখানেই শেষ। এছাড়া তার বদমেজাজি আচরণের কারণে প্রযোজকরাও তাঁকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।
পতনের ঠিক শেষ সীমানায় দাঁড়িয়ে সালমান খান নিজেকে আবিষ্কার করলেন নতুন করে। দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৯ সালে 'ওয়ান্টেড’ সিনেমা দিয়ে আবারও রূপালি পর্দায় আসেন ‘ভাইজান’। এই সিনেমা তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। রোমান্টিক হিরোর খোলস ভেঙে তিনি আবির্ভূত হন অ্যাকশন হিরো হিসেবে। এ যেন আসল সালমান খানেরই বাস্তবরূপ।
এরপর ২০১০ সালে ‘দাবাং’ সিনেমায় ইনস্পেক্টর চুলবুল পান্ডের চরিত্রটি তাঁকে ‘ভাইজান’-এর আসনে স্থায়ীভাবে বসিয়ে দেয়। এই নতুন সালমান খান আর সেই লাজুক ‘প্রেমিক’ নন। তিনি এখন নিয়ম ভাঙেন, গুন্ডাদের শায়েস্তা করেন, কিন্তু তার মনটা সোনায় গড়া। মূলত বাস্তবের বেপরোয়া সালমান খানকে পর্দায় পেয়ে তাঁর জীবনের প্রতিও মানুষের একধরনের মমতা তৈরি হতে থাকে। কারণ প্রত্যেকের জীবনেই উত্থান-পতন থাকে। আর এখান থেকেই সালমান খানকে বেশ কাছের ভাবতে শুরু করে দর্শকেরা। সালমান খান সুপারস্টার বা মেগাস্টার নন, হয়ে যান সবার প্রিয় ‘ভাইজান’।
সালমান খান কেন ফেনোমেনন, তা বুঝতে হলে তাঁর ভক্তদের দিকে তাকাতে হবে। সালমান হলেন খেটে খাওয়া মানুষের নায়ক। রিকশাচালক থেকে শুরু করে মফস্বলের কোনো যুবক; সবাই-ই তাঁর ভক্ত। পর্দায় সালমান যখন ভিলেনকে পেটান, তখন দর্শক ভাবে বাস্তব জীবনেও তিনি অশুভ শক্তির বিনাশ করছেন। যদিও এই ইমেজ তৈরিতে তার চ্যারিটি সংস্থা ‘বিইং হিউম্যান’-এর অবদান সবচেয়ে বেশি। তিনি তাঁর উপার্জনের বিশাল অংশ দু:স্থ শিশুদের চিকিৎসা ও শিক্ষায় ব্যয় করেন। এতে মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, সালমান রাগী হতে পারেন, ভুল করতে পারেন, কিন্তু মানুষ হিসেবে তিনি অত্যন্ত দয়ালু। এই ‘রবিনহুড’ ইমেজ তাঁকে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে পাকাপোক্ত স্থান করে দিয়েছে।
সালমান খানের সিনেমা মানেই লজিক বা যুক্তির ঊর্ধ্বে। গল্পের মাথামুণ্ডু না থাকলেও তাঁর সিনেমা ১০০ কোটির ব্যবসা করতে পারে। কারণ দর্শকরা সেখানে গল্প দেখতে যায় না, তাঁরা যায় প্রিয় ‘ভাই’কে দেখতে। পর্দায় তাঁর নীল ব্রেসলেট পরা হাত, কায়দা করে শার্ট খোলা বা ভিলেনকে পেটানো আর সেই বিশেষ স্টাইলের হাঁটা; এটুকুই দর্শকদের পয়সা উসুল করে দেয়। সমালোচকরা যতই নেতিবাচক রিভিউ দিক না কেন, তাঁর ভক্তদের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়ে না।
বলিউডে সালমান খানের অবস্থান অনেকটা বটগাছের মতো; তিনি যার মাথায় হাত রাখেন, তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায়। আবার যার ওপর থেকে হাত সরিয়ে নেন, তাঁর টিকে থাকা কঠিন হয়ে যায়। ক্যাটরিনা কাইফ, সোনাক্ষী সিনহা, অর্জুন কাপুর থেকে শুরু করে হাল আমলের শেহনাজ গিল–সবার ক্যারিয়ারেই সালমানের প্রত্যক্ষ অবদান আছে। তিনি বন্ধুদের বিপদে সবার আগে ঢাল হয়ে দাঁড়ান।
তবে এই মুদ্রার উল্টো পিঠও আছে। অভিযোগ আছে, তাঁর বিরাগভাজন হয়ে অনেকের সাজানো ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে গেছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ বিবেক ওবেরয়। ঐশ্বরিয়া রাইকে কেন্দ্র করে সালমানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে তাঁর প্রমিজিং ক্যারিয়ার অঙ্কুরেই বিনাশ হয়ে যায়।
ভালো এবং মন্দের এই অদ্ভুত মিশ্রণই তাকে ‘স্টার’ থেকে ‘ফেনোমেনন’-এ পরিণত করেছে। বলিউডে হয়তো অনেক ভালো অভিনেতা আসবেন, কিন্তু সালমান খানের মতো এমন বর্ণিল আর বিতর্কিত ‘ভাইজান’ হয়তো আর কেউ আসবে না।

বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ ‘হাইপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি’ বা ‘এইচসিএম’ নামের হৃৎপিণ্ডের বংশগত রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকদের জন্য ঠিক কোন রোগীর ঝুঁকি বেশি, তা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা কঠিন ছিল। কিন্তু হার্ভার্ড ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, সাধারণ একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এখন হার্টের এই রো
৭ ঘণ্টা আগে
গতকাল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেশে পৌঁছেছে জাইমা রহমানের পোষা বিড়াল ‘জেবু’। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায়, বিশ্বের বাঘা বাঘা অনেক নেতাই বিড়াল পুষতেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বনেতাদের পোষ্য এমন কিছু বিখ্যাত বিড়ালের গল্প।
১ দিন আগে
স্লিমিং পাউডার কী, আর এতে কী কী উপাদান থাকে? এটা কি স্বাস্থ্যসম্মত? চিকিৎসাবিজ্ঞানে কী বলে?
১ দিন আগে
আজ খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’। সারা বিশ্বের খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে ‘ক্রিসমাস ডে’র উৎসব উদ্যাপন করে থাকেন। কিন্তু বিশ্বের সব দেশে বড়দিন উদযাপনের রীতি একই রকম নয়। চলুন এক নজরে ঘুরে আসি ভিন্ন সাজের বড়দিনের ভুবন থেকে।
২ দিন আগে