leadT1ad

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার জানাজা ও সমাহিতের খবর

প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪০
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও সমাহিতের খবর। ছবি: স্ট্রিম

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে শায়িত করা হয়। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে তাকে সমাহিত করা হয়। তার আগে রাজধানীর সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নিতে সারা দেশ থেকে কয়েক লাখ মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন।

এদিকে, খালেদা জিয়ার জানাজা ও সমাহিত করার খবর উপমহাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম লাইভ কভারেজ দিয়েছে। এর মধ্যে ভারতের টাইমস অব্য ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, এনডিটিভিসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম তাদের অনলাইন সংস্করণে খালেদা জিয়ার জানাজা ও সমাহিত করার খবর লাইভ আপডেট দেয়।

সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং জানাজায় অংশ নিতে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজধানীর মানিক মিয়াতে উপস্থিত হয়। আজ সকাল থেকে ঢাকা ও সারাদেশ থেকে মানুষ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আসতে শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, অনেকে খালেদা জিয়াকে ‘মা’ সম্বোধন করে কাঁদতে ছিলেন। শুধু জানাজায় অংশ নিতে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে মাইলের পর মাইল পথ পাড়ি দিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে পৌঁছান।

এপির খবরে বলা হয়, জানাজা নামাজ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের লাগোয়া বড় সড়কগুলোতেও ছড়িয়ে ছিল। সারাদেশ থেকে লাখ লাখ লোক এই জানাজায় জড়ো হয়েছিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ও শেষ শ্রদ্ধা জানাতে লাখ লাখ মানুষ সারাদেশ থেকে রাজধানী ঢাকায় আসেন। এসময় তাঁদের হাতে পতাকা, খালেদা জিয়ার ছবি ছিল। বিবিসি বলেছে, রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজিত এই জানাজার মধ্য দিয়ে গৃহবধূ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া খালেদা জিয়ার অসাধরণ এক যাত্রার সমাপ্তি হলো।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা ও বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানিয়েছে বাংলাদেশ। তাঁর নেতৃত্বে দশকের পর দশকি ধরে বাংলাদেশকে বির্নিমাণ করেছে। তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজনের মাধ্যমে বিদায় দেওয়া হয়েছে। খবরে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংসদ ভবনের বাইরে অনুষ্ঠিত জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে মানুষ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আসে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ও জানাজায় অংশ নিতে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানিয়েছে বাংলাদেশ। বিপুল জনসমাগমে তাঁর জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের কয়েক দশক ধরে রাজনীতিতে তিনি ছিলেন প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিক। দক্ষিণ এশিয়ার ১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া। এছাড়া তাঁর কফিন বহনের সময় জাতীয় পতাকায় মোড়ানো ছিল এবং হাজার হাজার নিরাপত্তা রক্ষীরা পাহারায় ছিলেন বলেও ডনের খবরে উল্লেখ করা হয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং জানাজায় অংশ নিতে সারাদেশ থেকে বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আসেন। এছাড়া সংবাদমাধ্যমটির লাইভে জানাজা ও সমাহিত করার নিউজ ধারাবাহিকভাবে দিয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এ সংক্রান্ত লাইভ আপডেটে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পূণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকার জিয়া উদ্যানে দাফন করা হয়েছে। জানাজা ও তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা, বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী, সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা ও বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত হয়েছিলেন।

খবরে আরও বলা হয়, খালেদা জিয়াকে স্বামী প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে এবং একে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গভীর প্রতীকী মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত বলে উল্লেখ করেছে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয়ভাবে খালেদা জিয়ার জানাজার অনুষ্ঠানকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানের মর্যাদার প্রতিফলন বলেও উল্লেখ করা হয়।

দ্য হিন্দুর লাইভ আপডেটে বলা হয়, সংসদ ভবনের পাশে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লাখ লাখ মানুষ আবেগঘন বিদায় জানিয়েছেন।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সামনে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে তাঁকে স্বামী প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পাশে সমাহিত করা হয়। জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও বিদেশি প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মালয়েশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা বারনামার খবরে বলা হয়, সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা, কূটনীতিক এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জাতি শেষ বিদায় জানায়। পরে তাঁকে স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পাশে সমাহিত করা হয়।

খবরে আরও বলা হয়, গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে আপোসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিত খালেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানাতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিএনপির নেতাকর্মীসহ লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হয়। শুধু তাই নয়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর লাগোয়া সব সড়কেও বিপুর জনসমাগমের কথা উল্লেখ করা হয় বারনামার খবরে।

প্রসঙ্গত, প্রায় প্রতিটি সংবাদমাধ্যমই বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় আগত বিদেশি প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছে। খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূতেরা। জানা যায়, খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মিশনের ৩২ জন কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন—ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। আর রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনারদের মধ্যে ছিলেন—নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত জোরিস ফ্রান্সিসকাস জেরার্ডাস ভ্যান বোমেল, লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদুল মোত্তালিব এস এম সোলাইমান, অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইল, রাশিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত একাতেরিনা সেমেনোভা, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত নিনা পাদিলা কাইঙ্গল, সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার মিচেল লি, ফিলিস্তিনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জিয়াদ এম হামাদ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জিনহি ব্যাক, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা ক্যাথরিন কুক ও মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ অং কিয়াও মো।

শ্রদ্ধা জানাতে আরও এসেছিলেন—চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো সিগফ্রিড রেংগলি, ইতালির রাষ্ট্রদূত আলেসান্দ্রো আন্তোনিও, কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনচি, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস লিনাস রাগনার উইকস, স্পেনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত লারা দে লা পেনা ফার্নান্দেজ, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত হেরু হারতান্তো সুবোলো, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রানসেন, ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস, মরক্কোর রাষ্ট্রদূত মাজিদ হালিম, ইরানের রাষ্ট্রদূত মনসুর চাভোশি, আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেলওয়াহাব সাইদানি, ব্রুনাইয়ের হাইকমিশনার হাজি হারিস বিন ওসমান ও থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত থিতিপর্ন চিরাসাওয়াদিউপ।

এ ছাড়া কাতারের রাষ্ট্রদূত সেরায়া আলি এম এস আল-কাহতানি, যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মেগান বোল্ডিন, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার, বিমসটেকের মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডে, মালয়েশিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত আমির ফারিদ আবু হাসান, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি প্রতিনিধি সিমোন লসন পার্চমেন্ট এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত