leadT1ad

‘ধানের শীষে’ রাশেদ খাঁন, কাফন মিছিলে প্রতিবাদ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। সংগৃহীত ছবি

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন দলত্যাগ করে বিএনপি থেকে নির্বাচন করবেন। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে তাঁর এ দলত্যাগ– এমন খবরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের বিএনপির নেতাকর্মী।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও নিজ দলের প্রতীক ব্যবহারের বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে।

গণঅধিকারের ‘ট্রাক’ নিয়ে জেতার সম্ভাবনা নেই দেখে যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম মিত্র গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন নিজ দল ছেড়ে বিএনপিতে যুক্ত হয়ে নির্বাচন করছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে রাশেদ খাঁনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রাশেদ খাঁন দল থেকে পদত্যাগ করবেন– এমন আলোচনা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে তিনি চূড়ান্ত ঘোষণা দেবেন।

আবু হানিফ আরও বলেন, রাশেদ খান বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন। তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন, তা নির্বাহী পরিষদ ও উচ্চতর পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কাফন মিছিল করেন বিএনপির নেতাকর্মী। সংগৃহীত ছবি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কাফন মিছিল করেন বিএনপির নেতাকর্মী। সংগৃহীত ছবি

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে রাশেদ খাঁন গণঅধিকারের সাধারণ সম্পাদকের পদ ছাড়ছেন। নির্বাচনে জয়লাভের জন্য ধানের শীষের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রাশেদ খান বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ নেবেন। কৌশলগত কারণে দল থেকে তাঁকে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

নুর এ কথা বল‌লেও শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো গণঅধিকার পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের উচ্চতর পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে, ঝিনাইদহ-৪ আসনে রাশেদ খাঁনকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী। একই সঙ্গে মনোনয়ন বদলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। শুক্রবার বিকেলে ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ এবং জেলা বিএনপির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মুর্শিদা জামান বেল্টুর সমর্থকরা কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ করেন।

উপজেলা ও পৌর বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় দুই মনোনয়নপ্রতাশী রাশেদ খাঁনকে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে তাঁকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে ঝিনাইদহ-৪ আসনে আগামী ২৮ তারিখের মধ্যে বিএনপির কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আসনটিতে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী রাশেদ খাঁন এই সংসদীয় আসনের বাসিন্দা নন। তিনি ঝিনাইদহ-২ আসনে গত ৪-৫ দিন আগেও গণসংযোগ করেছেন। কালীগঞ্জের মানুষ কোনো বহিরাগতকে মেনে নেবে না।

কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস রহমান মিঠু বলেন, গত ১৭ বছরে আমরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী তিন নেতা কর্মীদের খোঁজখবর রেখেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে বহিরাগত একজনকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে আমরা তিনজন মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপির কাউকে মনোনয়ন না দিয়ে বহিরাগতকে প্রার্থী করা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমান আরও দুদিন আগে দেশে এলে হয়তো এমন হতো না। আগামী দিনে আমার নেতাকর্মী যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা মাথা পেতে নেব।

আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মুর্শিদা জামান বেল্টু বলেন, আমরা কালীগঞ্জের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত। আমার স্বামী এখানকার চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। আমরা কোনো বহিরাগতকে চাই না। দ্রুতই বিএনপির কাউকে মনোনয়ন দিতে হবে। কালীগঞ্জের মাটি ধানের শীষের ঘাঁটি। চক্রান্ত করে এই ধানের শীষকে হারিয়ে ফেলা হচ্ছে।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করেন দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী।

Ad 300x250

সম্পর্কিত