leadT1ad

‘লিডার আসতেছে, আমি বাড়িতে বসে থাকতে পারি নাই’

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

ঠাকুরগাঁওয়ের গেদুরা ইউনিয়ন থেকে ঢাকা এসেছেন আবদুস সালাম। স্ট্রিম ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গেদুরা ইউনিয়ন থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে একাই ঢাকা এসেছেন আবদুস সালাম। হাতে ধানের শীষের একটি ছড়া নিয়ে আজ বুধবার দুপুরে তাঁকে রাজধানীর পূর্বাচলে সমাবেশের নির্ধারিত এলাকায় একা একা ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। স্ট্রিম প্রতিবেদককে সালাম বলেন, ‘আমার এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা আগামীকাল আসবেন। কিন্তু আমি গতকালই চলে এসেছি। লিডার আসতেছে, আমি আর বাড়িতে বসে থাকতে পারি নাই। তাই চলে আসলাম।’

দীর্ঘ ১৭ বছর পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজধানীর পূর্বাচলে বিশাল সংবর্ধনার আয়োজন করেছে বিএনপি। এই অনুষ্ঠানে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসমাগম ঘটাতে চায় দলটি। সেই লক্ষ্যে গতকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা পূর্বাচলে ভিড় করতে শুরু করেছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পূর্বাচল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে উৎসবমুখর পরিবেশ। সমাবেশস্থলের মূল মঞ্চের কাজ শেষের দিকে। বিশাল এলাকার চারপাশজুড়ে টাঙানো হয়েছে অসংখ্য মাইক। সমাবেশ থেকে দূরে বসা মানুষের জন্য বসানো হচ্ছে বিশালাকৃতির এলইডি স্ক্রিন। স্বাস্থ্য সচেতনতায় এলাকাজুড়ে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।

সমাবেশস্থলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নেতার অপেক্ষায় কেউ এক দিন, কেউবা তারও আগে থেকে এখানে অবস্থান নিয়েছেন। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ওবায়দুর রহমান স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমি ২৫ জনকে নিয়ে গতকাল রাতে ঢাকা এসেছি। দিনাজপুর থেকে গতকাল আরও কয়েক শ মানুষ এসেছেন। আজ ও আগামীকাল সকালে আরও মানুষ আসবেন। তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে আমরা আনন্দিত, সেই আনন্দ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে ইনশাআল্লাহ।’

স্বাস্থ্য সচেতনতায় এলাকাজুড়ে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। স্ট্রিম ছবি
স্বাস্থ্য সচেতনতায় এলাকাজুড়ে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। স্ট্রিম ছবি

পটুয়াখালী সদর মহিলাদলের সভাপতি তানিয়া আক্তার গতকাল থেকেই সমাবেশস্থলে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, ‘গত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। এখন তাঁর পতন হয়েছে। তারেক রহমান দেশে ফিরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন, সেই স্বপ্ন নিয়েই আমরা তাঁকে স্বাগত জানাতে এসেছি।’

একই চিত্র দেখা গেল নোয়াখালী সদরের ধর্মপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাইনুদ্দিনের ক্ষেত্রেও। ৩০ জন সঙ্গী নিয়ে আসা মইনুদ্দিন বলেন, ‘১৭ বছর আমাদের নেতা দেশে ছিলেন না। আগামীকাল তিনি ফিরছেন, এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কিছু নেই। তিনি দেশে ফিরে দলের হাল ধরবেন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন—এটাই আমাদের চাওয়া।’

শুধু রাজনৈতিক নেতাকর্মীই নন, সাধারণ সমর্থকরাও সপরিবারে আসছেন নেতার আগমণী বার্তা সচক্ষে দেখতে। রাজধানীর উত্তরা থেকে ছোট ছেলেকে নিয়ে এসেছেন মোহাম্মদ সাগর। তিনি বলেন, ‘আমার পুরো পরিবার বিএনপি করে। আঠারো সালের নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি, এমন অসংখ্য মানুষ আছে যারা ভোট দিতে পারেনি। তারেক রহমান ফিরলে দেশে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আমি আশা করি। এই ঐতিহাসিক আয়োজন দেখানোর জন্যই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি।’

উল্লেখ্য, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে বিএনপিসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা বিরাজ করছে। আগামীকাল দুপুরের মধ্যেই সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আশা করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা।

Ad 300x250

সম্পর্কিত