ভূমিসেবার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, জালিয়াতি রোধ ও জনদুর্ভোগ কমাতে ‘২য় প্রজন্মের মিউটেশন সিস্টেম ২.১’ চালু করেছে সরকার। ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানিয়েছেন, এই নতুন সিস্টেমের ফলে তথ্য গোপন করে একই জমি একাধিকবার বিক্রি বা জালিয়াতির সুযোগ চিরতরে বন্ধ হবে। পাশাপাশি নামজারির জন্য নাগরিকদের এখন থেকে মাত্র একবার উপজেলা ভূমি অফিসে যেতে হবে।
আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর ভূমি ভবনের সেমিনার হলে ‘জনবান্ধব অটোমেটেড ভূমিসেবা উদ্বোধন ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ‘ভূমি মানুষের মৌলিক অধিকার, নিরাপত্তা ও অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি। ডিজিটাল ও স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সহজ, দ্রুত ও নির্ভুল সেবা প্রদানের লক্ষ্যেই এই নতুন সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভূমিসেবায় হিউম্যান টাচ (মানুষের স্পর্শ বা হস্তক্ষেপ) আরও কমে আসবে এবং নামজারির সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হোল্ডিং তৈরি হয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ১ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা মহানগর ও জেলার ১৯টি সার্কেল এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার ১টি সার্কেলে এই সিস্টেমটি চালু করা হয়েছিল। সফলভাবে সেই ধাপ সম্পন্ন করে এখন তিন পার্বত্য জেলা ব্যতীত সারা দেশে এই সিস্টেম উন্মুক্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া সারা দেশে ভূমিসেবা সিস্টেমে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এন্ট্রি এবং ভুল সংশোধনের কাজ চলমান রয়েছে। জয়পুরহাট জেলায় ইতিমধ্যে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিংয়ের নির্ভুল তথ্য সন্নিবেশ করা সম্ভব হয়েছে।
আলী ইমাম মজুমদার আরও জানান, সকল ভূমিসেবা সাধারণ মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিতে শীঘ্রই ‘ভূমি অ্যাপ’ চালু করতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। এই অ্যাপের মাধ্যমে জনগণ ঘরে বসেই ভূমিসংক্রান্ত যাবতীয় সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে ভূমিসেবা প্রদানে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আটটি বিভাগের আটজন করে শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার, কানুনগো, সহকারী কমিশনার (ভূমি), রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), জেলা প্রশাসক এবং দুইজন বিভাগীয় কমিশনারকে সনদ ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, এই উদ্যোগ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে আরও উদ্দীপ্ত করবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।