জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় শহীদ আবুল হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের পর তার স্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আবুল হোসেনের নাম শহীদের গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে গুলি করে হত্যার পর পুড়িয়ে দেওয়া ছয়জনের একজন ছিলেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আবুল হোসেন। পরে অজ্ঞাতনামা হিসেবে তাকে আশুলিয়ার আম বাগান কবরস্থানে দাফন করা হয়। মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষার পর তার পরিবার পরিচয় নিশ্চিত হলে, স্ত্রী লাকী আক্তার লাশ ফিরে পেতে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন।
আদেশের পর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আশুলিয়া মামলায় যে ছয়জনকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, এদের মধ্যে একজনকে শনাক্ত করা বাকি ছিল। তার নাম আবুল হোসেন। তার সন্তান ও স্ত্রীর ডিএনএর সাথে অশনাক্তকৃত লাশটির ডিএনএ ম্যাচ করায় আমরা তার স্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশটি পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের আবেদন করলে মহামান্য আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।’
তিনি আরও জানান, আদালত ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে লাশটি উত্তোলন করে স্ত্রী লাকী আক্তারের কাছে হস্তান্তর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
শহীদের তালিকায় আবুল হোসেনের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের গেজেট প্রকাশ হয়ে গেছে, সেহেতু আমরা আবুল হোসেনকে শহীদ ঘোষণা করে একটি গেজেট প্রকাশে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি একটি নির্দেশনা প্রার্থনা করেছিলাম। মহামান্য আদালত সেটাও মঞ্জুর করেছেন।’
এসময়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায় প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘প্রস্তুতি আছে বলেই আদালত তারিখ নির্ধারণ করেছেন।’ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অস্থিরতার বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেন, ‘এটা দেখার দায়িত্ব প্রশাসন ও সরকারের।’