স্ট্রিম প্রতিবেদক
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি আপিলের ওপরে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২১অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিভ বিভাগের বেঞ্চে এ সংক্রান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।
শুনানিতে পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা না থাকায় দেশে একতরফাভাবে তিনটি (একাদশ, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ) সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত লোকেরা ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্র হচ্ছে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে। ফলে জনগণের সার্বভৌমত্ব, মৌলিক অধিকার কিংবা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মত সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামোগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং জনগণের অভিপ্রায়ের ফলশ্রুতি হিসেবে আনা হয়েছিল। অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য এটি করা হয়েছিল।’
শুনানিতে তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক বিষয় ব্যাখ্যা করার কিছু রীতি-নীতি, পদ্ধতি আছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করার ক্ষেত্রে সেই রীতি-নীতি, পদ্ধতি অনুসরণ করেননি। অথবা প্রয়োগে করতে ভুল করেছেন। সাংবিধানিক ব্যাখ্যায় ভুল করায় ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। ভুল সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তারা ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধান ব্যাখ্যা করতে হলে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে তার ফলাফল কি দাঁড়াবে, তা বিবেচনায় নিতে হয়। বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছিল। সেই ইতিহাসও কিন্তু সংবিধান ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। কিন্তু সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই বিষয়গুলো বিবেচনা করেনি। তারা দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নেননি। বায়বীয় ধারণার ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছেন।’
শরীফ ভূঁইয়া বলেন, ‘শুধু তাই না, ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়টি আইনগতভাবে দুর্বল, কাঠামোগতভাবে দুর্বল। তাদের রায়ের ফলে যে দেশ গণতন্ত্রহীন হয়ে যাবে, স্বৈরতন্ত্র-এক নায়কতন্ত্র চালু হবে এবং এক হাজার মানুষকে জীবন দিয়ে সরকার পরিবর্তন করতে হবে, এই সব কোনো কিছুই তারা বুঝতে পারেননি। একটি সাংবিধানিক আদালত হিসেবে এগুলো বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল। তাঁরা আইন বুঝতেও ভুল করেছেন, আইন প্রয়োগ করতেও ভুল করেছেন। ফলে এটা পুরোপুরি ভুল চিন্তার সিদ্ধান্ত। সম্পূর্ণভাবে ভুল একটা জাজমেন্ট। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে।’
পরে শুনানির বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনজীবী শরীফ ভূইয়া। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকরা মনে করেছেন যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। তাঁরা বলেছেন যে অনির্বাচিত ব্যক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের গণতান্ত্রিক চরিত্র নষ্ট হয়ে যায়। অনির্বিাচিত ব্যক্তি এক দিনও ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। এই যে ব্যাখ্যা তারা দিলেন, এর ফলাফল কি হলো? এর ফলাফল হলো, গত ১০ বছরের বেশি সময় অনির্বাচিত সরকার দ্বারা দেশ পরিচালিত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পরে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, জনগণ জানে এগুলো কোনো নির্বাচনই হয়নি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধোনের অনেকগুলো সংশোধনী কিন্তু অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছে। অসাংবিধানিক ঘোষণা করার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ওইসব সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে। কোন কোন বিষয়গুলো সংবিধানের মৌলিক কাঠামো, আপিল বিভাগ বিভিন্ন সময় তা রায়ে উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে আছে গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জনগণের সার্বভৌমত্ব, মৌলিক অধিকারসহ আরও অনেক কিছু। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার মধ্যদিয়ে অন্য মৌলিক কাঠামোগুলোকেও ধ্বংস করা হয়েছে।’
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
১৪ বছর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। আদালতের রায়ের পর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী এই সরকারব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়। গত বছর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৭ আগস্ট ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। এরপর ১৭ অক্টোবর আবেদন করেন বিএনপির মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর আরেকটি আবেদন করেন। এ ছাড়া একটি সংগঠন ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হয়।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির এবং বিএনপির মহাসচিবের করা রিভিউ আবেদন থেকে উদ্ভূত আপিলের সঙ্গে রিভিউ আবেদনগুলো শুনানির জন্য যুক্ত হবে বলে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর কার্যতালিকায় আসবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিষয়টি কার্যতালিকায় আসে।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিট খারিজ করে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয়।
সেই রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বাতিলসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি আপিলের ওপরে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২১অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিভ বিভাগের বেঞ্চে এ সংক্রান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।
শুনানিতে পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা না থাকায় দেশে একতরফাভাবে তিনটি (একাদশ, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ) সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত লোকেরা ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্র হচ্ছে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে। ফলে জনগণের সার্বভৌমত্ব, মৌলিক অধিকার কিংবা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মত সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামোগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং জনগণের অভিপ্রায়ের ফলশ্রুতি হিসেবে আনা হয়েছিল। অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য এটি করা হয়েছিল।’
শুনানিতে তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক বিষয় ব্যাখ্যা করার কিছু রীতি-নীতি, পদ্ধতি আছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করার ক্ষেত্রে সেই রীতি-নীতি, পদ্ধতি অনুসরণ করেননি। অথবা প্রয়োগে করতে ভুল করেছেন। সাংবিধানিক ব্যাখ্যায় ভুল করায় ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। ভুল সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তারা ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধান ব্যাখ্যা করতে হলে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে তার ফলাফল কি দাঁড়াবে, তা বিবেচনায় নিতে হয়। বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছিল। সেই ইতিহাসও কিন্তু সংবিধান ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। কিন্তু সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই বিষয়গুলো বিবেচনা করেনি। তারা দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নেননি। বায়বীয় ধারণার ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছেন।’
শরীফ ভূঁইয়া বলেন, ‘শুধু তাই না, ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়টি আইনগতভাবে দুর্বল, কাঠামোগতভাবে দুর্বল। তাদের রায়ের ফলে যে দেশ গণতন্ত্রহীন হয়ে যাবে, স্বৈরতন্ত্র-এক নায়কতন্ত্র চালু হবে এবং এক হাজার মানুষকে জীবন দিয়ে সরকার পরিবর্তন করতে হবে, এই সব কোনো কিছুই তারা বুঝতে পারেননি। একটি সাংবিধানিক আদালত হিসেবে এগুলো বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল। তাঁরা আইন বুঝতেও ভুল করেছেন, আইন প্রয়োগ করতেও ভুল করেছেন। ফলে এটা পুরোপুরি ভুল চিন্তার সিদ্ধান্ত। সম্পূর্ণভাবে ভুল একটা জাজমেন্ট। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে।’
পরে শুনানির বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনজীবী শরীফ ভূইয়া। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকরা মনে করেছেন যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। তাঁরা বলেছেন যে অনির্বাচিত ব্যক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের গণতান্ত্রিক চরিত্র নষ্ট হয়ে যায়। অনির্বিাচিত ব্যক্তি এক দিনও ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। এই যে ব্যাখ্যা তারা দিলেন, এর ফলাফল কি হলো? এর ফলাফল হলো, গত ১০ বছরের বেশি সময় অনির্বাচিত সরকার দ্বারা দেশ পরিচালিত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পরে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, জনগণ জানে এগুলো কোনো নির্বাচনই হয়নি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধোনের অনেকগুলো সংশোধনী কিন্তু অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছে। অসাংবিধানিক ঘোষণা করার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ওইসব সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে। কোন কোন বিষয়গুলো সংবিধানের মৌলিক কাঠামো, আপিল বিভাগ বিভিন্ন সময় তা রায়ে উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে আছে গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জনগণের সার্বভৌমত্ব, মৌলিক অধিকারসহ আরও অনেক কিছু। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার মধ্যদিয়ে অন্য মৌলিক কাঠামোগুলোকেও ধ্বংস করা হয়েছে।’
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
১৪ বছর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। আদালতের রায়ের পর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী এই সরকারব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়। গত বছর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৭ আগস্ট ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। এরপর ১৭ অক্টোবর আবেদন করেন বিএনপির মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর আরেকটি আবেদন করেন। এ ছাড়া একটি সংগঠন ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হয়।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির এবং বিএনপির মহাসচিবের করা রিভিউ আবেদন থেকে উদ্ভূত আপিলের সঙ্গে রিভিউ আবেদনগুলো শুনানির জন্য যুক্ত হবে বলে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর কার্যতালিকায় আসবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিষয়টি কার্যতালিকায় আসে।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিট খারিজ করে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয়।
সেই রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বাতিলসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টাল থেকে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।
১ ঘণ্টা আগেপানি নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোকে যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১ ঘণ্টা আগেএকদিন আগে ‘নিখোঁজ’ হওয়া অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি (প্রিজনস) শেখ আব্দুল অমিককে রমনা থানায় করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
২ ঘণ্টা আগেসরকারি সেবা আরও নাগরিকবান্ধব করতে ঢাকায় চালু হলো নতুন তিনটি নাগরিক সেবা কেন্দ্র। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) থেকে গুলিস্তান, বনশ্রী ও মোহাম্মদপুরে কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে