leadT1ad

সিলেটের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
সিলেট

সিলেটের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সংগৃহীত ছবি

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদেশ জারির পরও সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় মামলাটি করা হয়। দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান (মানিলন্ডারিং-১) এ মমলার।

স্ট্রিমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস সা’দাৎ জানান, ‘নির্ধারিত সময়ে সম্পদের তথ্য না দেয়ায় কিংবা সময় বৃদ্ধির আবেদন না করায় কমিশনের অনুমোদনের ভিত্তিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজ রোববার মামলাটি (নন-সাবমিশন) করেছেন। বিধি অনুযায়ী তদন্ত ও পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’ এর বাইরে আর কোন মন্তব্য করতে তিনি রাজী হননি।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে সিসিকের মেয়র পদে প্রায় আট মাস দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ২০১১-২০২১ সাল পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দুদকের অনুসন্ধানের সময় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে প্রাপ্ত নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নিজ নামে লন্ডনে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি যেমন- ইলফোর্ড এসেক্সের চার হাজার বর্গফুটের বাড়ি, টালউইন স্ট্রিট লন্ডনের ১৮ শ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও কিপলিং ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁর তথ্য গোপনের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও নির্বাচনী হলফনামায় পূর্বাচলে রাজউক বরাদ্দকৃত ৫ কাঠা জমির তথ্য গোপন করেন।

অনুসন্ধানকালে আরও জানা যায়, ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২৪-২০২৫ খ্রিস্টাব্দে দাখিল করা আয়কর রিটার্ন অনুসারে তাঁর মোট সম্পদ ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকা। কিন্তু এই টাকা তিনি কীভাবে অর্জন করেন, তার কোন সঠিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং মেয়র পদে বেতন ও সম্মানি ভাতা বাবদ ১০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা পান, যা গ্রহণযোগ্য। তবে মোট অগ্রহণযোগ্য নিট সম্পদ ৯৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকা, যা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে।

এসব তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর সম্পদের উৎস, ধরন, সময় ও মূল্য আয়কর রিটার্নে বা নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া সম্পদ বিবরণী আদেশ জারির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ দাখিল না করায় তিনি দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নামে ইস্যু করা সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করার জন্য সিলেট নগরের তাঁর বাসায় গেলে বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। নিয়মানুযায়ী তাঁর বাসার গেটে সাক্ষী রেখে সম্পদ বিবরণীর মূল ফরম টানিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত স্থানীয় লোকজন জানান, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বর্তমানে এই ঠিকানায় বসবাস করেন না, লন্ডনেই তার স্থায়ী বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্য আছে।

এ বিষয়ে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমার অবৈধ কোনো সম্পদ নেই। যা আছে সবই লিগ্যাল। ট্যাক্স দেওয়া। দুদকের নোটিশের খবর পেয়ে দেশে আমার আইনজীবীর মাধ্যমে হিসেব দাখিল করার পাশাপাশি সময় চাওয়া হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে দখলদার অবৈধ ইউনূস সরকার এসব মিথ্যা, বানোয়াট হয়রানিমূলক মামলা করেছে। দেশে কখনো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে মামলা করব।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত