জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেছেন, ‘পাঁচ আগস্টের বিপ্লবের পর একটি জাতীয় সরকার গঠনের সুযোগ ছিল, কিন্তু ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে “দুর্নীতির অন্যতম মাস্টারমাইন্ড”-এর মাথায় “আওয়ামী বুদ্ধিপনা” চেপে বসায় তা সম্ভব হয়নি।’
আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে আবু সাঈদ কনভেনশন হলে জাতীয় যুবশক্তির প্রতিনিধি সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। তবে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি।
নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘যদি সকল দলের অংশগ্রহণে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা যেত এবং বিপ্লবী সংবিধান তৈরি করা সম্ভব হতো। তাহলে দুর্নীতির এই মাস্টারমাইন্ডের পাল্লায় পড়ে দেশের আজকের এই পরিস্থিতি হতো না। নব্বইয়ের ছাত্রনেতারা বিক্রি হলেও চব্বিশের ছাত্রনেতারা বিক্রি হবে না। আত্মমর্যাদার প্রশ্নে তারা একবিন্দুও ছাড় দেবেন না।’
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জামায়াত মুখে বিপ্লবের কথা বললেও তাদের অন্তরে আওয়ামী প্রীতি বিরাজ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা ইনক্লুসিভ রাজনীতির কথা বলে ছাত্রদের ভোট পেলেও, ডাকসুর ফলাফলের দুই মাসের মাথায় তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। ডাকসু নেতারা হেলিকপ্টারে চড়ে সারা দেশে জামায়াতের প্রোপাগান্ডা চালায়। এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি আমরা বাংলাদেশে দেখতে চাইনি।’
বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদের উত্থানের পেছনে ২০০১-০৬ সালের বিএনপি সরকারের ব্যর্থতা ও দায় রয়েছে উল্লেখ করে নাসিরুদ্দীন বলেন, ‘১/১১ এর সরকার এসেছিল তাদের ব্যর্থতার কারণেই। অথচ বিপ্লবের পর সেই বিএনপি আবার তাদের ব্যর্থতা নিয়েই উঠেপড়ে লেগেছে। তারা এখন নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসা করতে চাইছে, যা একসময় আওয়ামী লীগ করত।’
বিএনপির দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘২০০১-০৬ সালে জামায়াতকে সাথে নিয়ে যারা প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি করেছে, তারা যখন বলে বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতি রিমুভ করবে—তখন সেটি হয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কৌতুক।’
নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী অভিযোগ করে বলেন, ‘লন্ডন থেকে আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনেও সিটের লোভ দেখিয়ে কেনার চেষ্টা করা হয়েছে। অনলাইনে বা লন্ডন থেকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। তাছাড়া ৯০-এর ছাত্রনেতারা বিক্রি হয়েছিল, কিন্তু ২৪-এর ছাত্রনেতারা বিক্রি হবে না। আমরা শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করার জন্য রাজনীতিতে নামিনি।’
এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। এছাড়া জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।