সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক না দিলে দিনটা শুরুই হতে চায় না? খালি পেটে চা পান করা ‘স্বাস্থ্যকর’, এই ধারণা অনেকেরই আছে। কিন্তু বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এটা মোটেও এত সরল নয়।
ডা. সজীব মৈত্র

খালি পেটে চা পান করা ‘স্বাস্থ্যকর’, এই ধারণা অনেকেরই আছে। কিন্তু বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এটা মোটেও এত সরল নয়। পেট খালি থাকা অবস্থায় আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেম বিশেষভাবে সংবেদনশীল থাকে। তখন চায়ের ক্যাফেইন ও ট্যানিন শরীরের ওপর যে সম্মিলিত প্রভাব ফেলে। এটা অনেকের জন্যই উপকারের চেয়ে ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।
ঘুম থেকে ওঠার পর পাকস্থলীতে একটি নির্দিষ্ট বেসলাইন অ্যাসিড লেভেল থাকে। এটা স্বাভাবিক হজমক্রিয়ার অংশ। কিন্তু চায়ের ক্যাফেইন গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড সিক্রিশন বাড়িয়ে এই স্বাভাবিক মাত্রাকে অতিক্রম করে। পেট খালি থাকলে অতিরিক্ত অ্যাসিড সরাসরি গ্যাস্টিক দেয়ালে চাপ সৃষ্টি করে এবং তৈরি করে এপিগ্যাস্ট্রিক বার্নিং, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, হার্টবার্ন, এমনকি রেট্রোস্টার্নাল বার্নিং সেনসেশন।
যাদের গ্যাসট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে উপসর্গ আরও তীব্র হয়। এরপর আসে ট্যানিনের প্রভাব। চায়ের ট্যানিন একটি শক্তিশালী অ্যাস্ট্রিজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি পাকস্থলীর মিউকাস ব্যারিয়ার, অর্থাৎ অ্যাসিড থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা করার জন্য প্রাকৃতিক বর্মকে সাময়িকভাবে দুর্বল করে দিতে পারে।
মিউকাস লেয়ার যখন কম কাজ করে, তখন অ্যাসিড সরাসরি টিস্যুর সংস্পর্শে এসে তৈরি করে মিউকোসাল ইরিটেশন। এর ফলে দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও পেটব্যথা।
দীর্ঘদিন ধরে খালি পেটে চা পান করার অভ্যাস থাকলে পাকস্থলীর মিউকোসাল ইরিটেশন ঘন ঘন ঘটতে পারে। এই পুনরাবৃত্ত ইরিটেশন দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে, বিশেষত যাদের আগে থেকেই গ্যাস্ট্রাইটিস বা অ্যাসিডিটি-সম্পর্কিত প্রবণতা আছে। তবে সরাসরি খালি পেটে চা পান করলেই ‘ক্রনিক গ্যাস্ট্রাইটিস’ হয়, এটি সব গবেষণায় প্রতিষ্ঠিত নয়।
একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণত উপেক্ষিত বিষয় হলো আয়রন অ্যাবজর্পশনের ওপর ট্যানিনের প্রভাব। ট্যানিন নন-হিম আয়রনের সঙ্গে কমপ্লেক্স তৈরি করে। ফলে শরীরে আয়রনের বায়োঅ্যাভেইলেবিলিটি কমে যায়। যাদের আয়রন-ডেফিশিয়েন্সি অ্যানিমিয়া, লো ফেরিটিন, চুল পড়া, বা দীর্ঘমেয়াদি ক্লান্তির মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য নিয়মিত খালি পেটে চা পান করা অবস্থাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। হিমোগ্লোবিন বাড়ার গতি কমে যায় এবং ক্লান্তি বা দুর্বলতা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
অনেকে মনে করেন চায়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের জন্য খুব উপকারী। এটি সত্য। কিন্তু উপকার নির্ভর করে কখন চা পান করা হচ্ছে তার ওপর। পেট ভরতি বা কিছু হালকা খাবারের সঙ্গে চা পান করলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভালোভাবে শোষিত হয় এবং পাকস্থলীতে কম উত্তেজনা সৃষ্টি করে। কিন্তু খালি পেটে চা পান করলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সুবিধার তুলনায় অ্যাসিড ও ট্যানিন–জনিত ক্ষতির ঝুঁকিই বেশি।
তাহলে কি খালি পেটে সকালের চা পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে হবে? একেবারেই না। তবে সেটি নির্ভর করবে ব্যক্তিভেদে। এছাড়া কয়েকটি ছোট অভ্যাস পরিবর্তন করলেই ঝুঁকি কমে যায়। যেমন চা পানের আগে বিস্কুট, বাদাম বা কলা খেলে পাকস্থলীতে বাফার ইফেক্ট তৈরি হয়।
এক গ্লাস পানি পাকস্থলীর মিউকাস লেয়ারকে হাইড্রেটেড করে এবং অ্যাসিডের উত্তেজনা কমায়। তাই চা পান করার আগে পানি খাওয়া উচিত। আর খুব গাঢ় চা না বানানো যাতে ক্যাফেইন ও ট্যানিনের মাত্রা কম থাকে। কিন্তু যাদের গ্যাস্ট্রিক আলসার বা আইবিএস আছে, তাঁদের জন্য ক্যাফেইন-ফ্রি হার্বাল ইনফিউশন অনেক বেশি নিরাপদ বিকল্প।

খালি পেটে চা পান করা ‘স্বাস্থ্যকর’, এই ধারণা অনেকেরই আছে। কিন্তু বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এটা মোটেও এত সরল নয়। পেট খালি থাকা অবস্থায় আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেম বিশেষভাবে সংবেদনশীল থাকে। তখন চায়ের ক্যাফেইন ও ট্যানিন শরীরের ওপর যে সম্মিলিত প্রভাব ফেলে। এটা অনেকের জন্যই উপকারের চেয়ে ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।
ঘুম থেকে ওঠার পর পাকস্থলীতে একটি নির্দিষ্ট বেসলাইন অ্যাসিড লেভেল থাকে। এটা স্বাভাবিক হজমক্রিয়ার অংশ। কিন্তু চায়ের ক্যাফেইন গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড সিক্রিশন বাড়িয়ে এই স্বাভাবিক মাত্রাকে অতিক্রম করে। পেট খালি থাকলে অতিরিক্ত অ্যাসিড সরাসরি গ্যাস্টিক দেয়ালে চাপ সৃষ্টি করে এবং তৈরি করে এপিগ্যাস্ট্রিক বার্নিং, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, হার্টবার্ন, এমনকি রেট্রোস্টার্নাল বার্নিং সেনসেশন।
যাদের গ্যাসট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে উপসর্গ আরও তীব্র হয়। এরপর আসে ট্যানিনের প্রভাব। চায়ের ট্যানিন একটি শক্তিশালী অ্যাস্ট্রিজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি পাকস্থলীর মিউকাস ব্যারিয়ার, অর্থাৎ অ্যাসিড থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা করার জন্য প্রাকৃতিক বর্মকে সাময়িকভাবে দুর্বল করে দিতে পারে।
মিউকাস লেয়ার যখন কম কাজ করে, তখন অ্যাসিড সরাসরি টিস্যুর সংস্পর্শে এসে তৈরি করে মিউকোসাল ইরিটেশন। এর ফলে দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও পেটব্যথা।
দীর্ঘদিন ধরে খালি পেটে চা পান করার অভ্যাস থাকলে পাকস্থলীর মিউকোসাল ইরিটেশন ঘন ঘন ঘটতে পারে। এই পুনরাবৃত্ত ইরিটেশন দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে, বিশেষত যাদের আগে থেকেই গ্যাস্ট্রাইটিস বা অ্যাসিডিটি-সম্পর্কিত প্রবণতা আছে। তবে সরাসরি খালি পেটে চা পান করলেই ‘ক্রনিক গ্যাস্ট্রাইটিস’ হয়, এটি সব গবেষণায় প্রতিষ্ঠিত নয়।
একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণত উপেক্ষিত বিষয় হলো আয়রন অ্যাবজর্পশনের ওপর ট্যানিনের প্রভাব। ট্যানিন নন-হিম আয়রনের সঙ্গে কমপ্লেক্স তৈরি করে। ফলে শরীরে আয়রনের বায়োঅ্যাভেইলেবিলিটি কমে যায়। যাদের আয়রন-ডেফিশিয়েন্সি অ্যানিমিয়া, লো ফেরিটিন, চুল পড়া, বা দীর্ঘমেয়াদি ক্লান্তির মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য নিয়মিত খালি পেটে চা পান করা অবস্থাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। হিমোগ্লোবিন বাড়ার গতি কমে যায় এবং ক্লান্তি বা দুর্বলতা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
অনেকে মনে করেন চায়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের জন্য খুব উপকারী। এটি সত্য। কিন্তু উপকার নির্ভর করে কখন চা পান করা হচ্ছে তার ওপর। পেট ভরতি বা কিছু হালকা খাবারের সঙ্গে চা পান করলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভালোভাবে শোষিত হয় এবং পাকস্থলীতে কম উত্তেজনা সৃষ্টি করে। কিন্তু খালি পেটে চা পান করলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সুবিধার তুলনায় অ্যাসিড ও ট্যানিন–জনিত ক্ষতির ঝুঁকিই বেশি।
তাহলে কি খালি পেটে সকালের চা পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে হবে? একেবারেই না। তবে সেটি নির্ভর করবে ব্যক্তিভেদে। এছাড়া কয়েকটি ছোট অভ্যাস পরিবর্তন করলেই ঝুঁকি কমে যায়। যেমন চা পানের আগে বিস্কুট, বাদাম বা কলা খেলে পাকস্থলীতে বাফার ইফেক্ট তৈরি হয়।
এক গ্লাস পানি পাকস্থলীর মিউকাস লেয়ারকে হাইড্রেটেড করে এবং অ্যাসিডের উত্তেজনা কমায়। তাই চা পান করার আগে পানি খাওয়া উচিত। আর খুব গাঢ় চা না বানানো যাতে ক্যাফেইন ও ট্যানিনের মাত্রা কম থাকে। কিন্তু যাদের গ্যাস্ট্রিক আলসার বা আইবিএস আছে, তাঁদের জন্য ক্যাফেইন-ফ্রি হার্বাল ইনফিউশন অনেক বেশি নিরাপদ বিকল্প।

আজ এক ‘অগ্নিপুরুষ’-এর জন্মদিন। ইতিহাসের পাতায় যার নাম লেখা আছে ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবে, কিন্তু শোষকের কলিজা কাঁপাতে তিনি ছিলেন সাক্ষাৎ দাবানল। তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।
২৮ মিনিট আগে
১৯৬৭ সালের কথা। খান আতাউর রহমান তখন অভিনেতা, পরিচালক ও সংগীতজ্ঞ হিসেবে পরিচিত মুখ। ‘অনেক দিনের চেনা’ ও ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’র মতো সিনেমা বানিয়েছেন। সালাহউদ্দিন পরিচালিত ‘সূর্যস্নান’ (১৯৬২) সিনেমায় তৈরি করেছেন ‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়ারে’-র মতো গান।
১৪ ঘণ্টা আগে
১৯৭১ সালের রণক্ষেত্র। চারদিকে লুটপাট আর নারী নির্যাতনের মহোৎসব। সাধারণ সৈনিকরা নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে কথা বলছে। তাদেরই একজন প্রশ্ন তুলল— ‘আমাদের কমান্ডার (জেনারেল নিয়াজী) নিজেই তো একজন ধর্ষক। তাহলে আমাদের থামাবে কে?’
১৭ ঘণ্টা আগে
আজ বহুমাত্রিক লেখক সমরেশ বসুর জন্মদিন। আমৃত্যু অদম্য অপ্রতিরোধ্যভাবে সমরেশ লিখেছেন। লেখার টেবিল থেকে কলমের কালি হাতে মাখানো দশায় চিতায় উঠেছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে