leadT1ad

মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন: পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যা জানাল গ্রেপ্তার গৃহকর্মী আয়েশা

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

নলছিটির কয়ারচর এলাকায় গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার ও তাঁর স্বামী জালাল সিকদার। সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চুরির সময় ধরা পড়ে যাওয়ায় নিজেকে বাঁচাতে গৃহকর্ত্রী ও তাঁর মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেন গৃহকর্মী আয়েশা। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঝালকাঠি থেকে ঢাকায় আনার পথে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জোড়া খুনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

আজ বুধবার( ১০ ডিসেম্বর) সকালে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কয়ারচর এলাকা থেকে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এর আগে ঢাকার সাভার থেকে আয়েশার স্বামী রবিউল ইসলাম রাব্বিকে আটক করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় আনার পথে গাড়িতে বসেই তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেন আয়েশা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনার দিন (সোমবার) বাসা থেকে মালামাল চুরি করার সময় গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজ আয়েশাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। একপর্যায়ে লায়লা পুলিশে দেওয়ার জন্য ফোন করতে গেলে আয়েশা তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। পরে আয়েশা ধারালো ছুরি দিয়ে লায়লাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। মায়ের চিৎকার শুনে মেয়ে নাফিসা দৌড়ে ড্রয়িংরুমে এলে তাকেও ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন আয়েশা। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি নাফিসার স্কুল ড্রেস পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, ‘বাসার মালামাল লুট করতে বাধা পেয়েই আয়েশা মা-মেয়েকে হত্যা করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।’ মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তারের সময় আয়েশার কাছ থেকে ৬ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোন ও হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। আয়েশা নরসিংদীর সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে।

পুলিশ জানায়, হত্যার পর ঢাকা থেকে লঞ্চে বরিশালে যান আয়েশা। বুধবার সকাল ১০টার দিকে তিনি নলছিটির কয়ারচর গ্রামে দাদা রুস্তম সিকদারের বাড়িতে ওঠেন। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পুলিশ ওই বাড়িতে হানা দেয়। গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় আনার সময় পুলিশের গাড়িতে বসে আয়েশার স্বামী রাব্বি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সে (আয়েশা) মনে করছে কিছু জিনিস চুরি কইরা আইনা আমারে দিব, কিছু টাকাপয়সা পাইব। ল্যাপটপ, মোবাইল চুরি কইরা সে আহনের (আসার) সময় তার ম্যাডাম দেইখা ফেলায়। পেছন থিকা ম্যাডাম ধইরা ফেলায়। তখন সে চাকু দিয়া মারছে। এরপর তার মেয়ে আইলে তারেও মারছে।’

পুলিশের অপর এক কর্মকর্তা জানান, ৬ মাস আগে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার একটি বাসায় চুরির ঘটনায়ও এই আয়েশা জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে। এছাড়া এই জোড়া খুনের ঘটনায় তাঁর স্বামীর সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুরের বাসায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজের (১৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোমবার রাতেই গৃহকর্মী আয়েশাকে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী স্কুলশিক্ষক আ জ ম আজিজুল ইসলাম।

Ad 300x250

সম্পর্কিত