ক্ষমতার অপব্যবহার, ঠিকাদারি কাজ থেকে কমিশন গ্রহণ, মনোনয়ন বাণিজ্য এবং সরকারি প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে চাঁদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) ও তাঁর স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের অনুসন্ধানে, এই দম্পতির নামে প্রায় ১০ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের তথ্য এবং তাঁদের মোট ৫২টি ব্যাংক হিসাবে ৩৬৬ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে মায়ার ১৬টি হিসাবে ২৫৫ কোটির বেশি এবং তাঁর স্ত্রীর ৩৬টি হিসাবে ১১১ কোটির বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে।
দুদক বলছে, এই অর্থ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত। এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও মানি লন্ডারিং আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দ্বিতীয় আরেকটি মামলায় পারভীন চৌধুরী ও তাঁর স্বামী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীকে (মায়া) আসামি করা হচ্ছে। পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৬৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া, তাঁর নামে থাকা ৩৬টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে মোট ১১১ কোটি ৭৪ লাখ ৪ হাজার ৪১১ টাকা জমা এবং ১১১ কোটি ৪৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭১২ টাকা উত্তোলনের প্রমাণ মিলেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও মানি লন্ডারিংয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আজ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট জনাব মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ এক কোটি বিরাশি লক্ষ টাকারও বেশি মূল্যের সম্পদ অর্জন এবং নিজ নামে ষোলটি ব্যাংক হিসাবে দুইশ পঞ্চান্ন কোটি পঁচিশ লক্ষ টাকার বেশি জমা ও লেনদেন করায় একটি মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পারভীন চৌধুরী জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ আট কোটি ছয় লক্ষ টাকারও বেশি মূল্যের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ অর্জন এবং নিজ নামে ছত্রিশটি ব্যাংক হিসাবে একশ এগারো কোটি চুয়াত্তর লক্ষ টাকারও বেশি জমা ও লেনদেন করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় পারভীন চৌধুরী এবং তাঁর স্বামী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া—উভয়ের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।